কোটার আরও রিপোর্ট পর্যালোচনা করবে কমিটি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:৩০ পিএম, ২৬ আগস্ট ২০১৮
ফাইল ছবি

কোটা-সংক্রান্ত আরও রিপোর্ট পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে গঠিত কমিটি।

রোববার (২৬ আগস্ট) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলমের কক্ষে দুপুর ১২টায় বৈঠকে বসে কোটা পর্যালোচনা কমিটি। বৈঠক শেষ হয় দুপুর ২টায়। বৈঠক শেষে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (বিধি) ও কমিটির মুখপাত্র আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন এ কথা বলেন।

এর আগে গত ১৩ আগস্ট মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘কোটা নিয়ে সুপারিশ প্রায় চূড়ান্ত। আমরা মেধাকে প্রাধান্য দিয়ে অলমোস্ট (প্রায়) কোটা উঠিয়ে দেয়ার সুপারিশ করব। তবে আদালতের একটা রায় রয়েছে, মুক্তিযোদ্ধাদের কোটা সংরক্ষণ করতে হবে। এ ব্যাপারে আদালতের মতামত চাইব, আদালত যদি মুক্তিযোদ্ধা কোটা উঠিয়ে দেয় তবে এ কোটাও থাকবে না।’

বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা এখনও পর্যালোচনার মধ্যে আছি। বিভিন্ন দেশের রিপোর্ট...আমরা কোনো কনক্রিট ডিসিশনে আসতে পারিনি।’

কোটা নিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেলের রিপোর্ট পেয়েছেন কি-না জানতে চাইলে বলেন, ‘কী কী দরকার সবকিছু তো পাইনি। যেটা যেটা পাচ্ছি, সেগুলো পর্যালোচনা করছি।’

কবে নাগাদ সিদ্ধান্ত আসবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দেখা যাক, এই মুহূর্তে বলা যাবে না। আপনারা দেখেছেন পর পর কয়েকটি মিটিং আমরা করেছি।’

আপনারা কী এখন আদালতেরও মতামত নেবেন- এ বিষয়ে যুগ্ম সচিব বলেন, ‘দেখা যাক।’

‘আমাদের আরও অনেক রিপোর্ট বাকি আছে। সেগুলো পর্যালোচনা করে তারপর...।’

মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের বলেন, ‘কিছু হয়নি, কোনো ইয়েই আমরা করতে পারিনি।’

কমিটির সদস্য ও সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) সচিব আকতারী মমতাজ বেরিয়ে যাওয়ার সময় সাংবাদিকদের বলেন, ‘কোনো সিদ্ধান্ত আজ আসেনি।’

কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে গত ২ জুলাই কোটা ব্যবস্থা পর্যালোচনা করে তা সংস্কার বা বাতিলের বিষয়ে সুপারিশ দিতে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে সাত সদস্যের কমিটি গঠন করে সরকার।

কমিটিকে ১৫ কর্ম দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। ৮ জুলাই প্রথম সভা করে কমিটি। পরে কমিটির মেয়াদ আরও ৯০ কার্যদিবস (৩ মাস) বাড়ানো হয়।

বর্তমানে সরকারি চাকরিতে সংরক্ষিত কোটা ৫৬ শতাংশ। বাকি ৪৪ শতাংশ নেয়া হয় মেধার ভিত্তিতে। বিসিএসে নিয়োগের ক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ৩০, জেলা কোটায় ১০, নারী কোটায় ১০ ও উপজাতি কোটায় ৫ শতাংশ চাকরি সংরক্ষণ আছে। এ ৫৫ শতাংশ কোটায় পূরণযোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে সে ক্ষেত্রে ১ শতাংশ পদে প্রতিবন্ধীদের নিয়োগের বিধান রয়েছে।

এই কোটা ব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে বেশ কিছুদিন ধরেই আন্দোলন করছিলেন শিক্ষার্থীরা। কোটা সংস্কারের দাবিতে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়ক অবরোধও করছিলেন তারা। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষও হয় আন্দোলনকারীদের। গ্রেফতারও হন আন্দোলনকারীরা।

কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ক্ষুব্ধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১১ এপ্রিল জাতীয় সংসদে কোটা ব্যবস্থা বাতিলের কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কোটা নিয়ে যখন এত কিছু, তখন কোটাই থাকবে না। কোনো কোটারই দরকার নেই। যারা প্রতিবন্ধী ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী তাদের আমরা অন্যভাবে চাকরির ব্যবস্থা করে দেব।’

কোটা পর্যালোচনা কমিটির সদস্য হিসেবে আছেন- লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ শহিদুল হক, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব ফয়েজ আহম্মদ, অর্থ বিভাগের সচিব মুসলিম চৌধুরী, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব অপরূপ চৌধুরী, সরকারি কর্ম কমিশনের সচিব আকতারী মমতাজ এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব সাজ্জাদুল হাসান।

আরএমএম/এএইচ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।