বিজিবি-বিএসএফ সম্মেলনের আলোচিত ইস্যু


প্রকাশিত: ০৯:৫৯ এএম, ০৯ আগস্ট ২০১৫

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও ভারতের বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (বিএসএফ) এর মধ্যে মহাপরিচালক পর্যায়ে ৬ দিন ব্যাপী সীমান্ত সমন্বয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত ৩ আগস্ট থেকে ৬ আগস্ট ভারতের নয়াদিল্লীতে বিএসএফ সদর দফতরে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে সীমান্ত হত্যা, সব ধরণের চোরাচালান ও ফেলানী হত্যাসহ মোট ৯টি ইস্যুতে আলোচনা হয়েছে।

রোববার সকাল পৌনে ১১টায় বিজিবি সদর দফতরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান বিজিবি মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ভারতীয় সময় সকাল ১০টায় নয়াদিল্লীস্থ বিএসএফ সদর দফতরে সম্মেলনে আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু হয়। বিজিবি মহাপরিচালকের নের্তৃত্বে ২২ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন। বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলে অন্যান্যের মধ্যে বিজিবি’র সরাইল, যশোর, রংপুর ও চট্রগ্রাম রিজিয়নের কমান্ডারবৃন্দ, বিজিবি সদর দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বাংলাদেশ-ভারত যৌথ নদী কমিশন এবং ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ প্রতিনিধিত্ব করেন।

অপরদিকে বিএসএফ মহাপরিচালক শ্রী ডি কে পাঠকের নের্তৃত্বে ২৪ সদস্যের ভারতীয় প্রতিনিধি দল সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন। ভারতীয় প্রতিনিধি দলে বিএসএফ সদর দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, ফ্রন্টিয়ার আইজিগণ, ভারত সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, যৌথ নদী কমিশন এবং সার্ভে অব ইন্ডিয়া এর কর্মকর্তাবৃন্দ প্রতিনিধিত্ব করেন।

সেখানে মোট ৯টি বিষয়ে দ্বিপাক্ষিক আলাচনা হয়। আলোচিত বিষয়গুলো হলো- সীমান্ত এলাকায় নিরস্ত্র বাংলাদেশি নাগরিকদের গুলি/হত্যা/আহত করা, নিরহ বাংলাদেশি নাগরিকদের গ্রেফতার/আটক করা, সীমান্ত লঙ্ঘন/অবৈধভাবে আন্তর্জাতিক সীমান্ত অতিক্রম/বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ ও মানব পাচার, আগ্নেয়াস্ত্র/ গোলাবারুদ/বিস্ফোরক দ্রব্য চোরাচালান, ফেনসিডিলসহ অন্যান্য মাদক ও নেশাজাতীয় দ্রব্য পাচার, সীমান্ত এলাকায় পপি চাষ, সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক ও নির্মাণ কাজ, উভয় দেশের সীমান্ত নদী সমূহের তীর সংরক্ষণ, পারস্পরিক আস্থা বৃদ্ধির উপায়।

এছাড়া ৬ আগস্ট সম্মেলনের যৌথ আলোচনার দলিল (জয়েন্ট রেকর্ড অব ডিসকাশন্স-জেআরডি) স্বাক্ষরিত হয়েছে।

ফেলানী হত্যার বিষয়টি নিয়ে ডিজি বিজিবি ও ডিজি বিএসএফ এর মধ্যে একান্ত বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। বিএসএফ মহাপরিচালক বিজিবি মহাপরিচালককে অবহিত করেছেন যে, নিম্ন আদালত কর্তৃক ইতিমধ্যে ঘোষিত রায় এখনো বিএসএফ মহাপরিচালক অনুমোদন করেননি। ফেলানীর পরিবার রায়ে সংক্ষুব্ধ হলে বিএসএফ নতুন বিচারকদের সমন্বয়ে নতুনভাবে আদালত গঠন করবে। এ ব্যাপারে ফেলানীর পিতা এবং তাদের আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলে শিগগিরই বিএসএফকে অবহিত করার আহ্বান জানান বিএসএফ মহাপরিচালক।

সীমান্ত সম্মেলন শেষে বিজিবি মহাপরিচালক ৭ আগস্ট ভারতের টেকানপুরে (গোয়ালিয়র, মধ্যপ্রদেশ) বিএসএফ প্রশিক্ষণ একাডেমিতে বিএসএফ এর ২টি ব্যাচের সাব-ইন্সপেক্টরদের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ গ্রহণ করেন। প্রশিক্ষণে কৃতিত্ব অর্জনকারীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন। বিজিবি মহাপরিচালক বিএসএফ এর প্রশিক্ষণ একাডেমির বিভিন্ন প্রশিক্ষণ উইং-ও পরিদর্শন করেন।

জেইউ/আরএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।