মহাখালী বাস টার্মিনালে ঈদযাত্রায় স্বস্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৩:০৯ পিএম, ১৭ আগস্ট ২০১৮

ঈদুল আজহা আসন্ন। আগামী ২২ আগস্ট (বুধবার) ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাজধানী ছাড়তে শুরু করেছে হাজারো মানুষ। নাড়ির টানে কর্মস্থল ছেড়ে ঈদযাত্রীদের ভিড় এখন রাজধানীর বাস টার্মিনাল, রেল স্টেশন ও লঞ্চ ঘাটে। তবে গত ঈদের তুলনায় এবার এখনো পর্যন্ত বেশ স্বস্তিতেই ঢাকা ত্যাগ করছেন ঈদযাত্রীরা।

শুক্রবার (১৭ আগস্ট) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রাজধানীর মহাখালী বাস টার্মিনালে সরজমিনে দেখা যায়, ঈদের ছুটি শুরু হওয়ার আগেই মহাখালী আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালে ঘরমুখী মানুষের ভিড় লক্ষ্যণীয়। টার্মিনালে সকালের দিকে যাত্রীর সংখ্যা কম থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের ভিড় বাড়তে থাকে। তবে যাত্রীর তুলনায় বাসের সংখ্যা পর্যাপ্ত। সঠিক সময়েই সিরিয়াল মেনেই দূরপাল্লার বাসগুলো ছেড়ে যাচ্ছে।

বাস টার্মিনালে যাত্রীদের সচেতনতায় মাইকিং করা হচ্ছে। কাজ করতে দেখা যায় বিআরটিএর ভিজিলেন্স টিমকেও। টিমের কর্মীরা যাত্রীদের অপরিচিত কারও কাছ থেকে কোনো কিছু না খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন। কীভাবে অপরিচিত লোক ক্ষতি করতে পারে, সে বিষয়েও পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

টার্মিনালের পরিবহনের টিকিট কাউন্টারগুলোতে কথা বলে জানা যায়, শুক্রবার ভোর সাড়ে ৫টা থেকে শুরু করে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত প্রতিটি বাস নির্ধারিত সময়ে ছেড়ে গেছে। বেশির ভাগ পরিবহন কোম্পানি ঈদের প্রস্তুতি হিসেবে টার্মিনালে বাস জমা রেখেছে। যাত্রীরাও পরিবহন শ্রমিকদের হাকডাকে নির্ধারিত সময়েই বাসে উঠছেন।

mohakhali-buss-2

ঢাকা-বগুড়া-নওগাঁ রুটে চলাচল করা একতা পরিবহনের কাউন্টারের টিকিট বিক্রেতা আওয়াল জানান, এখন (শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টা) পর্যন্ত রাস্তায় কোনো ধরনের যানজটের খবর পাওয়া যায়নি। এছাড়া সবগুলো বাস সঠিক সময়েই গন্তব্যের উদ্দেশ্যে টার্মিনাল ছেড়ে গেছে। যাত্রীরাও সময় মতো আসছেন। অন্যান্য বারের চেয়ে এবার টার্মিনালে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার।

বগুড়ার যাত্রী মেহেদী হাসান মহাখালি বাস টার্মিনালে এসেছেন স্ত্রী কন্যাকে নিয়ে। রিকশা থেকে নেমে কাউন্টারে গিয়েই হাসিমাখা মুখে তার স্ত্রী বলেন, ‘আমরাও এসে গেছি, বাসও চলে এসেছে।’ মেহেদী হাসান জাগো নিউজকে বলেন, ‘এ পর্বে স্ত্রী-কন্যাকে বাড়িতে রাখতে যাত্রী। ঈদের সময় ভোগান্তি পোহাতে হয়। যে কারণে এ সিদ্ধান্ত। ওদের রেখে রাতের গাড়িতেই ফের কর্মস্থলে ফিরব। আবার ২১ আগস্ট আমি যাব।’

ঢাকা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া রুটে চলাচলকারী তিতাস পরিবহনের যাত্রী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী তৃষা বলেন, সকাল সাড়ে ১০টার বাস। গ্রামের বাড়ি বাবা-মা অপেক্ষা করছেন। পরিবারের সাথে ঈদ করার অনুভূতিই আলাদা। সময় মতোই বাস যাবে শুনে ভালো লাগছে।

mohakhali-buss-3

মহাখালী এসআর ট্রাভেলসের কাউন্টার মাস্টার আমির হোসেন বলেন, মহাখালীতে উত্তরবঙ্গের যাত্রী বেশি। তবে এখনো কিছু টিকিট মিলছে। যাত্রীরা আসছেন। লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিটি নিয়ে ও টিকিট চেক করার মধ্য দিয়ে যাত্রীরা বাসে উঠছেন। টার্মিনালে পর্যাপ্ত বাস জমা থাকায় কোনো সমস্যা হচ্ছে না। আজ শুক্রবার হওয়ায় রাজধানীতে যানজটও নেই। যে কারণে যাত্রীরা যথাসময়ে কাউন্টারে উপস্থিত হতে পারছেন।

ঢাকা-ময়মনসিংহ রুটের এনা পরিবহন কাউন্টারের টিকিট বিক্রেতা মাহবুব আলম বলেন, মহাসড়কগুলোতে যানজট নেই। নির্বিঘ্নে বাস চলাচল করছে। তবে ফেরার সময় বাসগুলো কিছুটা বিড়ম্বনায় পড়ছে। পশুর হাটের কারণে কিছু কিছু জায়াগয় ভিড়ে জ্যাম তৈরি হচ্ছে। তবে যাত্রীদের বিষয়টি বিবেচনায় মহাখালী টার্মিনালের বসার সুব্যবস্থা করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) সার্বক্ষণিক ভিজিলেন্স টিম পরিদর্শনে এসে বিআরটিএ ঢাকা বিভাগের উপ-পরিচালক মো. মাসুদ আলম বলেন, এখন পর্যন্ত ঈদের ব্যস্ততা খুব বেশি বাড়েনি। আজ (শুক্রবার) বিকেল থেকে মূল ব্যস্ততা শুরু হবে। যাত্রীদের সচেতনতায় আমাদের ভিজিলেন্স টিম কাজ করছে। বাড়তি ভাড়ার অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নেয়া হবে।

জেইউ/আরএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।