৮ হাট নিয়ে বিপাকে দুই সিটি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮:৫৮ পিএম, ১৫ আগস্ট ২০১৮

ঈদুল আজহার বাকি আর মাত্র ছয়দিন। ঈদের তিনদিন আগে থেকে রাজধানীর হাটগুলোতে কোরবানির পশু অানার নিয়ম রয়েছে। তবে প্রতিবারই ছয়-সাতদিন আগে থেকেই অধিকাংশ অস্থায়ী হাটে পশু আনা শুরু হয়। এবার কোরবানির পশুর চাহিদা মেটাতে ২৩টি স্থানে অস্থায়ী হাট বসানোর দরপত্র আহ্বান করে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন। এর মধ্যে এখনও আটটি হাটের ইজারা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারেনি সংস্থা দুটি।

সূত্র জানায়, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) ১৩টির মধ্যে সাতটি পশুর হাট চূড়ান্ত হয়েছে। অপরদিকে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) ১০টির মধ্যে আটটি চূড়ান্ত হয়েছে। তবে দুই সিটি মিলে এখনও আটটি হাট নিয়ে বিপাকে পড়েছে দুই সংস্থা।

তিন দফায় বিজ্ঞপ্তির পরও এই হাটগুলোর বিপরীতে কোনো দরপত্র জমা পড়েনি অথবা কাঙ্ক্ষিত দর পাওয়া যায়নি। মূলত শক্তিশালী সিন্ডিকেটের কারণেই এ অবস্থা হয়েছে বলে অভিযোগ। অথচ এই আট স্থানেও হাট বাসনোর প্রস্তুতি নিচ্ছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা।

দুই সিটি কর্পোরেশনের দরপত্র আহ্বান করা যে আটটি হাটের ইজারা হয়নি তার মধ্যে ডিএসসিসির ছয়টিতে কোনো দরপত্রই জমা পড়েনি। অপরদিকে ডিএনসিসি পায়নি কাঙ্ক্ষিত দর। ডিএসসিসি এলাকার ব্রাদার্স ইউনিয়ন পশুর হাট, ধুপখোলা, ধনিয়া, আরমানিটোলা, কমলাপুর স্টেডিয়ামের পাশের খালি জায়গা, সাদেক হোসেন খোকা মাঠে পশুর হাট বসানোর জন্য কোনো দরপত্র পড়েনি।

অন্যদিকে ডিএনসিসি এলাকার উত্তরখানের ময়নারটেক মাঠ ও আশিয়ান সিটির হাটে কাঙ্ক্ষিত দর না পাওয়ায় ইজারা দিতে পারেনি সংস্থাটি। এগুলোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত চেয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় থেকে প্রাপ্ত নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করবে সিটি কর্পোরেশন।

জানা গেছে, নিয়ম অনুযায়ী কাঙ্ক্ষিত দর না পাওয়া পর্যন্ত তিন দফা টেন্ডার আহ্বান করা হয়। এরপরও কোনো ইজারাদার না পাওয়া গেলে এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত দেয়। তারা হাট বসানোর সিদ্ধান্ত দেবেন অথবা বাতিলেরও সিদ্ধান্ত দিতে পারেন। হাট বসানোর সিদ্ধান্ত হলে সর্বোচ্চ দরদাতাকে ইজারা দেয়া হয়। আর কোনো দর না পাওয়া গেলে তখন খাস আদায়ের মাধ্যমে হাট বসানো হয়। এ ক্ষেত্রে স্থানীয় লোকদের ওপরই দায়িত্ব দেয়া হয়। সেখান থেকে যা আয় হয় খরচ বাদে সেই টাকা সিটি কর্পোরেশনে জমা হয়। এমন কারণেই সিন্ডিকেটের কবলে পড়েছে এই হাটগুলো।

ইজারা প্রক্রিয়া চূড়ান্ত না হলে হাটগুলো লিজ বা খাস আদায়ের মাধ্যমে বরাদ্দ দেয়া হতে পারে।

এ বিষয়ে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, আমরা ১০টি অস্থায়ী পশুর হাটের টেন্ডার দিয়েছিলাম, যার মধ্যে আটটি চূড়ান্ত হয়েছে। প্রায় ১২ কোটি টাকার মতো রাজস্ব পাব।

এদিকে দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খান মোহাম্মদ বিল্লাল বলেন, ইতোমধ্যে আমরা সাতটি হাট চূড়ান্ত করেছি। বাকিগুলোও চূড়ান্ত হবে বলে আশা করছি।

ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন সূত্রে জানা গেছে, অস্থায়ী হাটগুলোর মধ্যে ডিএসসিসির দরপত্র আহ্বান করা হাটের মধ্যে ছিল খিলগাঁও মেরাদিয়া বাজার, উত্তর শাহজাহানপুর খিলগাঁও রেলগেট বাজারসংলগ্ন মৈত্রী সংঘ মাঠ, আরমানিটোলা খেলার মাঠ ও আশপাশের খালি জায়গা, কমলাপুর স্টেডিয়ামের আশপাশের খালি জায়গা, জিগাতলা-হাজারীবাগ মাঠ, রহমতগঞ্জ খেলার মাঠ, ধুপখোলা ইস্ট অ্যান্ড ক্লাব মাঠ, পোস্তাগোলা শ্মশানঘাট সংলগ্ন খালি জায়গা, দনিয়া কলেজ মাঠ সংলগ্ন খালি জায়গা, শ্যামপুর বালুর মাঠ, সাদেক হোসেন খোকা মাঠ সংলগ্ন ধোলাইখাল ট্রাক টার্মিনাল ও সংলগ্ন খালি জায়গা, ব্রাদার্স ইউনিয়ন সংলগ্ন বালুর মাঠ, এবং কামরাঙ্গীরচর ইসলাম চেয়ারম্যানের বাড়ির মোড় থেকে দক্ষিণ দিকে বুড়িগঙ্গা নদীর বাঁধ সংলগ্ন জায়গা।

অন্যদিকে ডিএনসিসির এলাকার দরপত্র আহ্বান করার মধ্যে ছিল- বাড্ডা ইস্টার্ন হাউজিংয়ের (আফতাব নগর) পূর্বপাশের খালি জায়গা, খিলক্ষেত ৩০০ ফুট সড়ক ও দক্ষিণ পাশের বসুন্ধরা প্রাচীরের মধ্যবর্তী খালি জায়গা, ভাটারা (সাইদ নগর), উত্তরা ১৫নং সেক্টরের প্রথম গোলচত্বর সংলগ্ন খালি জায়গা, মিরপুর সেকশন-৬ (ইস্টার্ন হাউজিংয়ের খালি জায়গা), মিরপুর ডিওএইচএস সংলগ্ন উত্তর পাশের সেতু প্রোপার্টি হাউজিংয়ের ফাঁকা জায়গা, মোহাম্মদপুর বুদ্ধিজীবী সড়ক সংলগ্ন (বছিলা) পুলিশলাইনের খালি জায়গায়, উত্তরখানের ময়নারটেক মাঠ ও আশিয়ান সিটির হাট।

এএস/জেডএ/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।