দুর্ঘটনায় প্রাণহানি হত্যা প্রমাণিত হলে মৃত্যুদণ্ড : আইনমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৬:২৪ পিএম, ০৬ আগস্ট ২০১৮

বেপরোয়া গাড়ি চালানোর কারণে দুর্ঘটনায় প্রাণহানি তদন্তে হত্যা প্রমাণিত হলে চালকের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হবে বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক।

সোমবার মন্ত্রিসভা বৈঠকে ‘সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮’ এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদনের পর সচিবালয়ে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আইনমন্ত্রী এ কথা জানান।

আইনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে তিনি বলেন, যদি দেখা যায়, চালক হত্যাই করেছে তবে ৩০২ ধারা অনুযায়ী বিচার হবে। কিন্তু আপনাদের মনে রাখতে হবে তদন্ত সাপেক্ষে যখন তথ্য ভিন্ন পাওয়া যায়। অ্যাক্সিডেন্ট ঘটলেই মৃত্যু হলে ৩০২ এ যাবে তা না। তদন্ত এবং তথ্যের ওপর নির্ভর করে এটাকে কোনো খাতে যাবে সেটা তদন্ত যারা করবেন তারা ঠিক করবেন।’

তিনি বলেন, ‘যদি তদন্তে ভিন্ন তথ্য পাওয়া যায় তবে দণ্ডবিধির ৩০২ এবং ক্ষেত্রমতে, ৩০৪ ধারা এই আইনেও প্রযোজ্য হবে। ৩০২ প্রমাণ করতে হলে ইনটেনশনটাও প্রমাণ করতে হবে। একটা মানুষকে মারলেই ৩০২ এ আপনি করবেন এ রকম না।’

‘আগে দণ্ডবিধির ৩০৪ (বি) তে সাজা ছিল সাত বছর। ১৯৮৫ সালে সাজা কমিয়ে তিন বছর করা হয়। আজকে সেই সাজা বাড়িয়ে পাঁচ বছর করা হয়েছে।’

মন্ত্রী বলেন, ‘বেপরোয়া গাড়ি চালনার কারণে দুর্ঘটনায় কেউ যদি গুরুতর আহত হন বা মৃত্যুরবণ করেন তাহলে শাস্তি হচ্ছে পাঁচ বছর।’

সংসদে পাসের আগে আইনটি অধ্যাদেশ আকারে কার্যকরের কোনো পরিকল্পনা নেই জানিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘সংসদে কবে যাবে সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয় বলতে পারবে। মন্ত্রিসভায় আলাপ-আলোচনা হয়েছে এটা অর্ডিনেন্স (অধ্যাদেশ) করা হবে না। এটা পার্লামেন্টের মাধ্যমে পাস হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় পার্লামেন্টের মাধ্যমে পাস হলে এটা নিয়ে আরও আলাপ-আলোচনার সুযোগ থাকবে।’

নতুন সড়ক পরিবহন আইন শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণ করতে পেরেছে কি না- জানতে চাইলে আনিসুল হক বলেন, ‘তাদের দাবি নিশ্চয়ই পূরণ হয়েছে। কারণ হচ্ছে এই যে ভ্রান্ত একটা ধারণা ছিল এখানে হত্যা প্রমাণিত হলেও দণ্ডবিধির ৩০২ বা ৩০৪ ধারা প্রযোজ্য হবে না, সেই জিনিসটা আজকে দূর হলো।’

নতুন আইনে থাকা সড়ক দুর্ঘটনার সর্বোচ্চ শাস্তি ৫ বছর যথেষ্ট কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয়ে যে অপরাধকে আমরা পাঁচ বছরের আওতায় এনেছি তা যথেষ্ট।’

দুর্ঘটনার পর চালক ও তার সহকারীরা পালিয়ে গেলেও যেন ধরা যায় সেসব বিধান আইনে রাখা হয়েছে বলেও জানান আইনমন্ত্রী।

গুরুত্বপূর্ণ মামলা সব সময় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয় জানিয়ে আনিসুল হক বলেন, ‘রমিজ উদ্দিনের দুই শিক্ষার্থীরা নিহতের ঘটনায় তদন্ত শেষ হলে তা দ্রুত বিচার আইনের অধীনে বিচার করা হবে।’

গত ২৯ জুলাই রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে বাস চাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার পর নিরাপদ সড়ক বাস্তবায়নের দাবিতে রাজধানীজুড়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী আইনটি মন্ত্রিসভায় উপস্থাপনের নির্দেশ দেন।

আরএমএম/এমআরএম/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।