সড়ক আইন সংশোধনে বিশেষ অধিবেশন ডাকার আহ্বান

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫:৪৪ পিএম, ০৫ আগস্ট ২০১৮
ছবি-ফাইল

যুক্তফ্রন্টের চেয়ারম্যান, বিকল্পধারার প্রেসিডেন্ট ও সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী অবিলম্বে জাতীয় সংসদে বিশেষ অধিবেশন ডেকে নিরাপদ সড়কের জন্য প্রচলিত আইন জরুরি ভিত্তিতে সংশোধন করার আহ্বান জানিয়েছেন।

রোববার রাজধানীর বারিধারার বাসভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ আহ্বান জানান।

সংবাদ সম্মেলনে বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেন, ছাত্ররা নিরাপদ সড়কের দাবিতে যে আন্দোলন করেছে তাতে এ কথা স্পষ্ট যে, পুলিশ ও নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোসহ সরকারের বিভিন্ন গাড়ির অনেক ড্রাইভারের লাইসেন্স ও গাড়ির কাগজপত্র নেই। সরকারি বিভিন্ন বিভাগের অদক্ষতা ও দুর্নীতি রয়েছে এবং তাদের আন্তরিকতার অভাবও প্রমাণিত হয়েছে।

আমরা আশা করবো, সরকার এ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করবে এবং অবিলম্বে অদক্ষ ও দুর্নীতি দূর করার ব্যবস্থা করবে।

একটি জাতীয় দৈনিকের উদ্ধৃতি দিয়ে বি. চৌধুরী বলেন, লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালকের সংখ্যা ৯ লাখ এবং ফিটনেস ছাড়া গাড়ির সংখ্যা ৫ লাখ। শহরের বাইরে ও ভেতরে বাস ও ট্রাকের গতিবেগ অনিয়ন্ত্রিত। ট্রাফিক পুলিশসহ সরকারের অন্য দফতরের লোকজন দুর্নীতি করে অদক্ষদের লাইসেন্স দিচ্ছে।

তিনি বলেন, অন্যদিকে ইউরোপ, আমেরিকায় বাস, ট্রাকে দুর্ঘ্টনায় মৃত্যুর সংখ্যা খুবই কম একইভাবে আমাদের দেশে বিআরটিসি বাসে দুর্ঘ্টনা নেই বললেই চলে। কারণ বিআরটিসি বাসের ড্রাইভাররা দক্ষ, অভিজ্ঞ এবং লাইসেন্সপ্রাপ্ত, বিআরটিসির প্রতিটি গাড়ির ফিটনেস প্রমাণিত।

সাবেক এই রাষ্ট্রপতি বলেন, এই সমস্যার সমাধান করতে হলে সড়ক পরিবহন ক্ষেত্রে প্রচলিত আইনগুলোর সংস্কার করতে হবে। লাইসেন্সবিহীন ড্রাইভার ও ফিটনেসবিহীন গাড়ির মামলায় এদেরকে আলাদা একটা শ্রেণি হিসেবে গণ্য করতে হবে। এদের হাতে দুর্ঘ্টনার বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। যেহেতু যার লাইসেন্স নেই, সে ড্রাইভার হতে পারে না। অন্যদিকে অভিজ্ঞ লাইসেন্সপ্রাপ্ত ড্রাইভার ও ‘ফিট’ গাড়ির ব্যাপারে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি রাখতে হবে।

যুক্তফ্রন্টের চেয়ারম্যান বলেন, সরকার নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশ এবং দলীয় নির্যাতনকারীদের নামিয়ে মস্ত বড় ভুল পদক্ষেপ নিয়েছে। এটা বন্ধ করা উচিত।

প্রবীণ এই পার্লামেন্টেরিয়ান বলেন, অবিলম্বে জাতীয় সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডাকতে হবে। এ ব্যাপারে প্রচলিত আইন জরুরি ভিত্তিতে সংশোধন করতে হবে। আমাদের পরামর্শ হলো, রাস্তায় দ্রুতগতি বাসের প্রতিযোগিতা দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে গণ্য করতে হবে। শহরের মধ্যে বাসে ট্রাকের গতিসীমা ৫০ কিলোমিটারে রাখতে হবে। বাস স্ট্যান্ডের ২০০ গজের মধ্যে গতিসীমা ১৫ কিলোমিটারের বেশি দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।

তিনি বলেন, খুবই অল্প সময়ের ব্যাপার। এ ব্যাপারে যত বিলম্ব হবে দেশ ও জাতির জন্য ততই দুঃসময় ডেকে আনবে। আমরা এ ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার জন্য রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

বি. চৌধুরী বলেন, নির্বাচনের বছর সরকারের ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতি, অদক্ষতা এবং সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতি ও অদক্ষতার বহিঃপ্রকাশ দেশবাসী ও সরকারকে এ ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে।

মাহমুদুর রহমান মান্না নৌপরিবহন মন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করে বলেন, এই লোকটার কারণেই সড়ক পরিবহন ক্ষেত্রে সব সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। তাকে রক্ষা করার জন্য নানা বাহানা চলছে। তিনি ছাত্রদের ৯ দফা মেনে নেয়ার আহ্বান জানান।

আবদুল মালেক রতন নৌপরিবহন মন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করে ছাত্রদের ন্যায়সঙ্গত দাবি বাস্তবায়নের আহ্বান জানান।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন- নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, বিকল্পধারার মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নান, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন, বিকল্পধারার যুগ্ম মহাসচিব মাহী বি. চৌধুরী, বিকল্পধারার কেন্দ্রীয় নেতা আবদুর রউফ মান্নান, ব্যারিস্টার ওমর ফারুক, আবদুল হান্নান, নাগরিক ঐক্যের কেন্দ্রীয় নেতা শহীদুল্লা কায়সার, মমিনুল ইসলাম, জেএসডির কেন্দ্রীয় নেতা এম এ গোফরান প্রমুখ।

এইউএ/এমআরএম/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।