গণপরিবহন সঙ্কটে ছুটির দিনেও ভোগান্তি
‘মামা, এটা কোথায় যাবে’ এ কথা বলেই চলন্ত লেগুনার (হিউম্যান হলার) পিছনে ছুটতে লাগলেন আনুমানিক ১৭/১৮ বছরের দুই তিনজন তরুণী। ঠিক তাদের পেছন থেকে আরও জোরে দৌঁড়ে গিয়ে লাফিয়ে সেই লেগুনায় উঠে বসে পড়লেন জনা চার পাঁচেক পুরুষ যাত্রী। পুরুষদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে উঠতে না পেরে মন খারাপ করে রাস্তার ওপারে অন্য লেগুনার জন্য অপেক্ষা করতে লাগলেন তরুণীরা।
আজ (শুক্রবার) ছুটির দিন সকাল ১০টায় রাজধানীর নিউমার্কেট নীলক্ষেত মোড়ে এমনই এক দৃশ্য এ প্রতিবেদকের চোখে পড়ে।
গণপরিবহন সঙ্কটের কারণে শুধু এ কয়েকজন তরুণী নন, শুক্রবার ছুটির দিনেও রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার শত শত সাধারণ মানুষ চরম বিপাকে পড়েছেন।
সম্প্রতি রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে শহীদ রমিজউদ্দিন কলেজের দুই শিক্ষার্থীর করুণ মৃত্যু হয়। এ ঘটনার প্রতিবাদে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ, বিক্ষোভ, যানবাহন ভাঙচুর ও গাড়িচালকদের হেনস্তাসহ সার্বিক নিরাপত্তার অভাবের অজুহাতে গত দু’দিন যাবত গণপরিবহন বিশেষ করে বাস চলাচল বন্ধ রেখেছে বাস মালিক ও শ্রমিকরা।
ফলে গণ পরিবহন সঙ্কটে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। বিশেষ করে নিম্ন আয়ের চাকরিজীবী অথবা ব্যবসায়ী, যারা নিয়মিত বাসে যাতায়াত করেন তাদের গন্তব্যে পৌঁছাতে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, হিউম্যান হলার ও অথবা প্যাডেল চালিত রিকশায় যাতায়াত করতে বাড়তি টাকা গুণতে হচ্ছে। মানুষের তুলনায় গাড়ির সংখ্যা কম থাকায় এ সব যানবাহনে সিট দখল করতে রীতিমতো যুদ্ধ করতে হচ্ছে। এ যুদ্ধে কুলিয়ে উঠতে পারছেন না নারীরা।
শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত ঢাকার আজিমপুর, নিউমার্কেট, এলিফ্যান্ট রোড, সায়েন্স ল্যাবরেটরি, জিগাতলা, ধানমন্ডি ও কলাবাগান ঘুরে দেখা গেছে ওই সময় পর্যন্ত কোনো সড়কে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি বা রাস্তা অবরোধের দৃশ্য চোখে পড়েনি। রাস্তায় গণপরিবহন বিশেষ করে বাস চলাচল করতে দেখা যায়নি। তবে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, রিকশা, হিউম্যান হলার ও ভ্যানগাড়ি দেখা গেছে। গণপরিবহন না থাকার সুযোগে এসব যানবাহনে ভাড়াও বেড়েছে।
আজ নীলক্ষেত মোড়ে দাঁড়িয়ে এক তরুণ আসাদগেট যাওয়ার জন্য রিকশাওয়ালাকে ভাড়া জিজ্ঞাসা করেন। রিকশাওয়ালা দুইশ টাকা ভাড়া চান। এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে ওই তরুণ বলেন, এমনিতে ভাড়া ৮০ থেকে ১০০টাকা। কিন্তু এখন সুযোগ বুঝে রিকশাওয়ালারা দ্বিগুণ ভাড়া হাঁকছেন।
এমইউ/এমএমজেড/পিআর