অান্দোলনে ছাত্রদল ও ছাত্র শিবিরের অনুপ্রবেশ ঘটছে
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ১০:৩০ পিএম, ০২ আগস্ট ২০১৮
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অাসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ছাত্রদের এ অান্দোলন ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য ছাত্রদল ও ছাত্র শিবিরের অনুপ্রবেশ ঘটছে। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি যৌক্তিক কিন্তু তাদের অান্দোলনকে রাজনৈতিক রূপ দেয়ার চেষ্টা চলছে।
আন্দোলনকারীদের সব দাবি পূরণে পদক্ষেপ নেয়ার কথা জানিয়ে তাদের এখন ঘরে ফেরার অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি; এক্ষেত্রে অভিভাবক ও শিক্ষকদের সহায়তাও চেয়েছেন তিনি।
ঢাকার বিমানবন্দর সড়কে গত ২৯ জুলাই বাসচাপায় দুই কলেজছাত্রের মৃত্যুর পর টানা পাঁচদিন ধরে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে রাজধানীর সড়কগুলো দিনভর অচল রয়েছে।
শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণে প্রধানমন্ত্রীর বিভিন্ন নির্দেশনা ও কর্তৃপক্ষের নানা পদক্ষেপ তুলে ধরে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলন করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
শিক্ষার্থীদের দাবির যৌক্তিকতা মেনে নিয়ে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনে রাজনৈতিক ইন্ধন দেখা যাচ্ছে। আমরা দেখেছি, এই আন্দোলনের মধ্যে শিবির ও ছাত্রদল সম্পৃক্ত হয়েছে। আমাদের কাছে ছাত্রদল ও শিবিরের কথোপকথনের অডিও রয়েছে। সেখানে ছাত্রদলকে স্কুল ও কলেজের ড্রেস পরে আন্দোলনে সম্পৃক্ত হওয়ার নির্দেশ দিতে শোনা গেছে।
শিক্ষার্থীদের সতর্ক করে তিনি বলেন, এই আন্দোলন সহিংসতার দিকে টার্ন করতে পারে। কারণ, আমরা দেখেছি কাফরুল থানায় আক্রমণ করা হয়েছে। রাজারবাগ ও মিরপুরের পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্টে ঢিল ছোঁড়া হয়েছে। মিরপুর ১৪ নম্বর সেকশনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর চড়াও হয় পুলিশ। এসময় পুলিশের সঙ্গে লাঠিহাতে একদল যুবককেও দেখা যায়।
মিরপুর ১৪ নম্বর সেকশনে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের সঙ্গে সরকার সমর্থক যুবকদের হামলার অভিযোগের বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সেখানেও ছাত্রদলের কর্মীরা পুলিশের ওপর হামলা চালিয়েছিল, তখন তা প্রতিরোধে স্থানীয়রা এগিয়ে গিয়েছিল বলে তিনি খবর পেয়েছেন।
গত পাঁচদিনের আন্দোলনে যানবাহনের ক্ষয়ক্ষতির চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, এই কয়দিনে ৩১৭টি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। আটটি গাড়ি পোড়ানো হয়েছে। তাই আমরা এই আন্দোলন কনটিনিউ না করার আহ্বান জানাচ্ছি।
শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মধ্যে বৃহস্পতিবার সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড়ে এক ট্রাফিক সার্জেন্টের মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয়া হয়।
অভিভাবক ও শিক্ষকদের সহায়তা চেয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা মনে করি, তারা যে সাহসিকতা দেখিয়েছে, তা দেশবাসী জেনে গেছে। সুতরাং এই ধরনের পরিস্থিতিতে একটা সাবোটাজ ঘটতে পারে। তাই অভিভাবক, শিক্ষক ও গভর্নিং বডির সদস্য ও প্রতিবেশীকে অনুরোধ করব, এই কোমলমতি শিক্ষার্থীরা যাতে মাঠে না নামে, তাদেরকে বোঝাতে।
আন্দোলন থেমে গেলে এই শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হবে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, তারা অনেক ছোট। এই কারণে তাদেরকে কোনো দুর্ভোগ পোহাতে হবে না।
শিক্ষার্থীর বিভিন্ন দাবি পূরণে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়ার কথাও বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, কোনো স্কুল-কলেজের পাশে রাস্তা থাকলে সেখানে ট্রাফিক পুলিশ থাকবে এবং শিক্ষার্থীদের রাস্তা পারাপারে সহযোগিতা করবে।
যেখানে সড়ক দুর্ঘটনায় দুই কলেজছাত্রী নিহত হয়েছেন, সেখানে ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণ করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি। সড়ক দুর্ঘটনায় সর্বোচ্চ শাস্তি দিতে নতুন আইন শিগগিরই সংসদে উপস্থাপন করা হবে বলেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান।
এফএইচএস/বিএ