শিক্ষার্থীদের সরিয়ে দিল পুলিশ, যান চলছে ধীরে
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:৩০ পিএম, ৩০ জুলাই ২০১৮
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সড়কে অবস্থান নেয়া শহীদ রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের শিক্ষার্থীদের ওপর অবশেষে চড়াও হয়েছে পুলিশ। শিক্ষার্থীরাও পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেছে। এ ঘটনায় কেউ আহত হয়নি। যান চলাচলও শুরু হয়েছে। তবে ধীর গতিতে।
প্রতক্ষদর্শীরা জানান, বাস চাপায় দুই সহপাঠী নিহতের প্রতিবাদে সোমবার সকাল থেকেই রাস্তায় নামে কলেজটির শিক্ষার্থীরা। দুপুর সাড়ে তিনটার দিকে কলেজের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক উম্মে কুলসুম শিক্ষার্থীদের রাস্তা ছেড়ে বাড়ি ফেড়ার কথা বলেন। তিনি তাদের আশ্বস্ত করে বলেন যে শিক্ষার্থীদের সব দাবি মেনে নেয়া হবে। কিন্তু তাতে শিক্ষার্থীরা রাস্তা ছাড়েনি।
বিজ্ঞাপন
একপর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের বাগবিতণ্ডা হয়। পুলিশ শিক্ষার্থীদের রাস্তা থেকে সরাতে শুরু করে। এ সময় কিছু শিক্ষার্থী পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। পুলিশও শিক্ষার্থীদের পাল্টা ধাওয়া করে। এতে শিক্ষার্থীরা রাস্তা থেকে সরে গেছে। যান চলাচলও শুরু হয়েছে।
এর আগে সোমবার (৩০ জুলাই) নয় দফা দাবি জানিয়েছে ওই কলেজের শিক্ষার্থীরা। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এসব দাবি পূরণ না হলে সড়ক অবরোধের হুমকিও দিয়েছে তারা।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সামনের সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করার সময় কলেজের শিক্ষার্থী সাইদুল ইসলাম আপন এসব দাবি তুলে ধরেন।
দাবিগুলো হলো- দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় দায়ী বেপরোয়া ড্রাইভারকে ফাঁসি দিতে হবে; নৌ-পরিবহন মন্ত্রীকে নিঃশ্বর্ত ক্ষমা চাইতে হবে; শিক্ষার্থীদের চলাচলে এমইএস ফুটওভার ব্রিজ বা বিকল্প নিরাপদ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে; প্রত্যেক সড়কের দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকায় স্প্রিড ব্রেকার দিতে হবে; সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ছাত্র-ছাত্রীদের দায়ভর সরকারকে নিতে হবে; শিক্ষার্থীরা বাস থামানোর সিগন্যাল দিলে- থামিয়ে তাদেরকে নিতে হবে; শুধু ঢাকা নয়, সারা বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য হাফ ভাড়ার ব্যবস্থা করতে হবে; ফিটনেসবিহীন গাড়ি রাস্তায় চলাচল বন্ধ ও লাইসেন্স ছাড়া চালকরা গাড়ি চালাতে পারবেন না এবং বাসে অতিরিক্ত যাত্রী নেয়া যাবে না।
গতকাল রোববার (২৯ জুলাই) দুপুরে কালশী ফ্লাইওভার থেকে নামার মুখে এমইএস বাসস্ট্যান্ডে ১৫/২০ জন শিক্ষার্থী দাঁড়িয়েছিল। জাবালে নূর পরিবহনের একটি বাস ফ্লাইওভার থেকে নামার সময় মুখেই দাঁড়িয়ে যায়। এ সময় পেছন থেকে আরেকটি দ্রুতগতি সম্পন্ন জাবালে নূরের বাস ওভারটেক করে সামনে আসতেই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। নিমিষেই ওঠে পড়ে দাঁড়িয়ে থাকা শিক্ষার্থীদের ওপর। চাকার নিচে পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায় দুইজন। এছাড়া আহত হন আরও ১৫/২০ জন শিক্ষার্থী।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
মারা যাওয়া দুইজন হলেন- শহীদ রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী দিয়া খানম মিম ও বিজ্ঞান বিভাগের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র আব্দুল করিম রাজিব।
ওই ঘটনায় গতকাল রোববার রাতেই নিহত মিমের বাবা জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে ক্যান্টনমেন্ট থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নং ৩৩। এ ঘটনায় জাবালে নূরের তিন বাসের দুই চালক ও দুই হেলপারকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
জেইউ/জেডএ/আরআইপি