‘মা, আমি নিরাপদে বাড়ি ফিরতে চাই’
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০১:১৭ পিএম, ৩০ জুলাই ২০১৮
ওদের জন্য কাঁদছে দেশ। কাঁদছে সড়কও। মিম ও রাজিবের জন্য কান্না আর ভালোবাসা নিয়ে সড়ক সড়কে অবরোধ, মানববন্ধনে দাঁড়িয়েছেন বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। ‘মা, আমি নিরাপদে বাড়ি ফিরতে চাই’, হে সড়ক, আর কতো প্রাণ ঝরাবে তুমি’, ‘স্টপ কিলিং! মাই মম ইজ ক্রাইং’ -এমনই অসংখ্য স্লোগান লিখিত প্লাকার্ড হাতে সড়কে দাঁড়িয়েছিলেন রাজধানীর গুলশান কমার্স কলেজের শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (৩০ জুলাই) রাজধানীর বাড্ডায় প্রগতি সরণী সড়কের শতশত শিক্ষার্থী সড়কপথে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে এ মানববন্ধন করেন। একই সঙ্গে তারা শহীদ রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের মিম ও রাজিবের হত্যাকারী ঘাতক বাস চালকের শাস্তি দাবি করেন।
মানববন্ধন থেকে গুলশান কমার্স কলেজের শিক্ষার্থী বাহাউদ্দিন বলেন, সড়কগুলো ক্রমশই লাশের ভাগাড়ে পরিণত হচ্ছে। রক্তের দাগ শুকাতে না শুকাতেই আরেকটি রক্তের দাগ এসে আরও লাল করে দিচ্ছে সড়কগুলো। এভাবে আর কত লাশ পড়বে? বাসা থেকে বের হলেই বাবা-মা চিন্তা করেন। নিজেও অস্থির থাকি বেপরোয়া গাড়ির কবলে পড়ে জীবনের বিনাশ ঘটবে নাতো! ঘরে নিরাপদে ফিরতে পারবো তো! এ কান্না থামানো দরকার।
একই কলেজের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক মিজানুর রহমান বলেন, এত কান্না! তবুও রাষ্ট্রের ঘুম ভাঙছে না। আর কত লাশ পড়লে এ হত্যাযজ্ঞ বন্ধ হবে?
তিনি আরও বলেন, ঘাতক চালকদের উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করতে পারলেই দুর্ঘটনা অনেকাংশে কমে আসবে। আর যেন কোনো শিক্ষার্থীর প্রাণ অকারণে ঝরে না যায়, তার জন্যই আমরা আজ ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ করে রাস্তায় দাঁড়িয়েছি।
গতকাল রোববার (২৯ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কের কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সামনে এমইএস বাস স্ট্যান্ডে জাবালে নূর পরিবহনের বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহত হন। একই ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ১৫/২০ জন শিক্ষার্থী।
চাকার নীচে পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যাওয়া দুই শিক্ষার্থী হলেন- শহীদ রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী দিয়া খানম মিম ও বিজ্ঞান বিভাগের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র আব্দুল করিম রাজিব।
ওই ঘটনায় আজ (সোমবার) গুলশান কমার্স কলেজের শিক্ষার্থীরা ছাড়া রাজধানীর সাইন্সল্যাবে সিটি কলেজের শিক্ষার্থীরা এবং বিমানবন্দর সড়কের এমইএস বাস স্ট্যান্ডে সামনে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন শহীদ রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের শিক্ষার্থীরা।
এদিকে ওই ঘটনায় জাবালে নূরের তিন গাড়ির দুই চালক ও দুই হেলপারকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১। গতকাল রাতে রাজধানীতের অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। এর আগে নিহত মিমের বাবা ক্যান্টনমেন্ট থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
এএসএস/এইউএ/আরএস/আরআইপি