কোরবানির হাটে অস্থিতিশীলতা ঠেকাতে ডিসিদের নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১২:৪৮ পিএম, ২৬ জুলাই ২০১৮

প্রভাব খাটিয়ে কোরবানির পশুর হাটে কেউ যেন অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে না পারে সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে জেলা প্রশাসকদের নির্দেশ দিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ। বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ কক্ষে জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনের তৃতীয় ও শেষ দিনের প্রথম কার্য-অধিবেশন শেষে মন্ত্রী সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে জেলা প্রশাসকদের এ কার্য-অধিবেশন হয়। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম এতে সভাপতিত্ব করেন।

কোরবানির হাটে পশুর স্বাস্থ্যের বিষয়ে ডিসিদের নজর দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে জানিয়ে প্রাণিসম্পদমন্ত্রী বলেন, ‘হাটে যে পশুগুলো আসবে সেগুলোর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে হবে। নিরাপদ ও সুন্দর স্বাস্থ্যের পশুগুলো যাতে কোরবানির জন্য যেতে পারে। কোথাও কেউ যেন মার্কেটের ওপর প্রভাবে ফেলতে না পারে। জেলা পর্যায়ে জেলা প্রশাসকই মূলত এটা নিয়ন্ত্রণ করেন। আমাদের কর্মকর্তারাও থাকবে। তাদের সহায়তা দিয়ে এটাকে নিয়ন্ত্রণে রাখার কথা বলা হয়েছে।’

হিসেব অনুযায়ী দেশে পর্যাপ্ত কোরবানির পশু মজুদ আছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘এমন কী প্রয়োজন থেকেও বেশি পশু আছে। ফলে এটা নিয়ে দুঃচিন্তার কোনো কারণ নেই, ম্যানেজমেন্ট ঠিক রাখতে পারলেই কোরবানি সুন্দরভাবে পালন করা যাবে।’

ক্ষতিকর ওষুধ ব্যবহার করে গরু মোটাতাজাকরণের বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘আগে স্টেরয়েড ব্যবহার করে গরু মোটাতাজা করা হতো। এসব মাংস মানুষের জন্য ক্ষতিকর। এ বিষয়ে আমরা শতভাগ নিশ্চয়তা দিতে না পারলেও আমরা নিশ্চয়তা দিচ্ছি, এ দিক থেকে সন্দেহমুক্ত থাকতে পারেন।’

তিনি বলেন, ‘প্রতিটি গরুতে না হলেও আমাদের হিসাবের মধ্যে যারা রয়েছে সেখানে গরুর দৈনন্দিন খাবার কী, সেটাও আমাদের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা তদারকি করছেন। গরুর খাদ্যের বিকল্প যে পথ দেখানো হয়েছে, সেই পথে মোটাতাজা হচ্ছে। সেখানে ওই (স্টেরয়েড) খাবারের দরকার নেই।’

নারায়ণ চন্দ্র বলেন, ‘আমরা মোটিভেশনও করছি, জাতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে কেন? তোমরাও ব্যবসা করো, জাতিকে ভালো খাবার দাও। এভাবে মানুষ কিন্তু ফিরে আসছে। ফরমালিনযুক্ত মাছ এখন এক প্রকার প্রায় নেই। এটাও কিন্তু মোটিভেশন।’

ডিসিদের সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে মৎস্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সবচেয়ে প্রিয় মাছ ইলিশ হারিয়ে যাচ্ছিলো, সেটাকে উদ্ধার করা গেছে। জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে আলোচনায় বিষয়টি ওঠে এসেছে। তাদের কাছ থেকে নিশ্চয়তা চেয়েছি, মূলত মাঠে কাজ করতে গেলে তাদের সহযোগিতা একান্ত দরকার। তাদের সহযোগিতা অব্যাহত রাখার দাবিও জানিয়েছি। তারা এ বিষয়ে আমাদের নিশ্চয়তা দিয়েছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘যখন মাছ ধরা বন্ধ রাখা হয় তখন গরিব মৎস্যজীবীদের যে সহায়তা দেয়া হয় (ভিজিএফ) সেটাকে যেন পূর্ণভাবে দেয়া যায় এবং ৪০ কেজি করেই দেয়া যায়, তারা সেই প্রস্তাব দিয়েছেন। আমরাও সেটাকে নীতিগতভাবে মেনে নিয়েছি, কিন্তু বরাদ্দটা যেহেতু ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আসে সেখানে আমরা এটা দাবি করবো। আশা করি তারা বিষয়টিকে গুরুত্বসহকারে দেখবে।’

সাতক্ষীরা ও বাগেরহাটের ডিসি মানসম্মত চিংড়ি মাছের পোনার সরবরাহের কথা বলেছেন জানিয়ে মৎস্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরাও সেটা নীতিগতভাবে স্বীকার করেছি এবং আমরা চেষ্টা চালাচ্ছি হ্যাচারিগুলো ইমপ্রুভমেন্ট করে কোয়ালিটি সম্পন্ন পোনা সরবরাহ দিতে পারি কিনা। সরবরাহ দিতে না পারলে, অনেক সময় ভারত থেকে পোনা ঢুকে যায়। এসব পোনাগুলো আসার ফলে দেখা যায়, ভাইরাস বেশি অ্যাটাক করে। এ বিষয়েও তাদের বলেছি, যত দ্রুত পারি আমরা এটি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসব।’

মৎস্য সপ্তাহে পোনা অবমুক্তের ব্যাপারে ডিসিদের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে উল্লেখ করে নারায়ণ চন্দ্র চন্দ বলেন, ‘পোনা কেনার জন্য যে টাকা পাঠাই সেটা চলে যায় ইউএনও বরাবর। ওই ক্রয় কমিটির সভাপতি হচ্ছেন ইউএনও, জেলা কমিটির সভাপতি ডিসি সাহেব। সে জন্য ডিসি সাহেবদের বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী চাচ্ছেন টাকাটা যাতে শতভাগ প্রয়োগ হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘এ জন্য এই টাকা দিয়ে পোনা কিনে যাতে ছাড়া হয় তা ডিসি সাহেব ইউএনও’র মাধ্যমে নিশ্চিত করতে পারেন। এভাবে তাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।’

আরএমএম/আরএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।