‘উচ্চশিক্ষা কমিশন’ প্রতিষ্ঠার কাজ শেষ পর্যায়ে : প্রধানমন্ত্রী

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৫:৫২ পিএম, ২৫ জুলাই ২০১৮
ফাইল ছবি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, উচ্চশিক্ষার গুণগতমান নিশ্চিত করতে জাতীয় সংসদে ‘অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল আইন’ পাস হয়েছে। শিগগিরই এর কার্যক্রম শুরু হবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মান সমৃদ্ধ করা, তাদের তদারকি, নিয়ন্ত্রণ ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে ‘উচ্চশিক্ষা কমিশন’ প্রতিষ্ঠার কাজও শেষ পর্যায়ে।

বুধবার দুপুরে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন কর্তৃক পদত্ত প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণ পদক-২০১৭ প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইউজিসি চেয়ারম্যান প্রফেসর আবদুল মান্নান। অনুষ্ঠানের শুরুতে মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য প্রফেসর ড. দিল আফরোজ বেগম স্বাগত বক্তব্য দেন।

এরপর স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের মধ্যে স্বর্ণপদক পরিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অনুষ্ঠানটি দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে বড়পর্দার মাধ্যমে দেখানো হয়। দেশের ৩৮টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও ২টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট ১৬৩জন শিক্ষার্থী স্বর্ণপদক পান।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগের শিক্ষার্থী ইশরাত জাহান প্রিয়া, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী সজন ধর স্বর্নপদকপ্রাপ্তদের পক্ষে নিজস্ব অনুভূতি ব্যক্ত করেন।

অনুষ্ঠানে অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম ও অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর ‘বাংলা ভাষা ও সাহিত্য’ শীর্ষক গ্রন্থটি প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে গ্র্যাজুয়েশন লাভ করেছে। এই ধারবাহিকতা বজায় রাখার জন্য এবং ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত দেশ গড়তে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো শিক্ষিত জনগোষ্ঠী। দেশে শিক্ষিত জনগোষ্ঠী সৃষ্টি করাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য।

তিনি বলেন, আমি আশাবাদী আজকে যতটুকুই অর্জন করেছি, দিন-রাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে বিশ্বে বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোলমডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছি। অর্থনৈতিকভাবে আমরা স্বাবলম্বী হয়েছি। আজকে আমরা এগিয়ে যাব। আর পিছিয়ে যাব না। আমরা শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টির জন্য প্রধানমন্ত্রী শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট ও গঠন করেছি। এখানে আমরা প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত শিক্ষা সহায়তা (বৃত্তি-উপবৃত্তি) দিতে পারছি।

শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৯ সালের জানুয়ারি মাস থেকে ২০১৭ সালের জুন মাস পর্যন্ত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এবং সরকারি কলেজের ৩৬৪ জন শিক্ষক পিএইচডি ফেলোশিপ অ্যাওয়ার্ড, সরকারি কলেজের ২২৩ জন শিক্ষক এম ফিল ফেলোশিপ অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন। এ ছাড়া পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৩ জন শিক্ষক পোস্ট-ডক্টরাল ফেলোশিপ অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন।

তিনি বলেন, ২০১৬ সাল থেকে পিএইচডি ফেলোশিপ ভাতা মাসিক ১০ হাজার টাকা হতে বৃদ্ধি করে ১৫ হাজার টাকায় উন্নীত করা হয়েছে। পোস্ট-ডক্টরাল ফেলোশিপ ভাতা মাসিক ১৫ হাজার টাকা হতে বৃদ্ধি করে ২০ হাজার টাকায় উন্নীত করা হয়েছে।

বর্তমানে ৮৪টি পাবলিক-প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় ও আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক ও গবেষকরা ইউজিসি ডিজিটাল লাইব্রেরির মাধ্যমে বিশ্বের ১৩টি সুপ্রতিষ্ঠিত প্রকাশকের ৩৪ হাজারেরও অধিক বইয়ের ই-রিসোর্স এক্সেস সুবিধা পাচ্ছেন।

সরকারপ্রধান বলেন, শিক্ষার মান উন্নয়নে আমরা ২০১০ সালে ‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন’ পাস করি। বর্তমানে দেশে ৪৬টি পাবলিক ও ১০৩টি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়সহ মোট বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ১৪৯টি। আমরা উচ্চশিক্ষার প্রসারে ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে ৬টি এবং ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত ১৩টি নতুন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছি।

সরকার গবেষণাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে একে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে এ খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি করেছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, যারা মেধাবী তাদের মেধা ও মননের বিকাশে আমাদের সুযোগ করে দিতে হবে।

এফএইচএস/জেডএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।