কয়লা গায়েবের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী কঠোর : তৌফিক-ই-ইলাহী

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮:২৬ পিএম, ২৪ জুলাই ২০১৮

দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া খনি থেকে প্রায় দেড় লাখ টন কয়লা গায়েবের ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী কঠোর অবস্থানে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদবিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী।

মঙ্গলবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ কক্ষে জেলা প্রশাসক সম্মেলনের প্রথম দিনের তৃতীয় অধিবেশন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথা জানান তিনি।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, বিদ্যুৎ বিভাগ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে জেলা প্রশাসকদের এ কার্য অধিবেশন হয়। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম এতে সভাপতিত্ব করেন।

জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, ‘দেশে বিদ্যুৎ ব্যবস্থার বৈপ্লবিক একটা পরিবর্তন হয়েছে। এর সঙ্গে সমস্যাও হয়। কোনো কোনো জায়গায় বিদ্যুতের ভল্টেজ কম হয়, বিদ্যুৎ হয়তো কিছু সময় ইন্ট্রাপ ছিল, এগুলো তারা তুলে ধরেছেন। যাতে আমরা ভবিষ্যতে সুষ্ঠুভাবে সম্প্রসারণ করতে পারি।’

গ্রামের মানুষ লোডশেডিংয়ের ভোগান্তি পোহাচ্ছে, সেই বিষয়ে ডিসিরা কিছু বলেছেন কি না- জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, ‘বলেনি, কিন্তু পল্লী বিদ্যুতের ছোটখাট অভিযোগের কথা বলেছেন (ডিসিরা)। আমাদের চেয়ারম্যান সেই বিষয়ে অভিযোগ কেন্দ্র খুলেছেন, গ্রামের সাধারণ মানুষের কষ্ট তো আমরা চাই না। সুতরাং এটা আমরা সমাধান করি।’

আগামী বছরের মধ্যে সারা দেশের সব জায়গায় বিদ্যুৎ পৌঁছে যাবে বলেও জানান তিনি।

বড় পুকুরিয়ায় কয়লা কেলেঙ্কারির জন্য রংপুরের মানুষ তো ভুগবে, এ বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে তৌফিক-ই-ইলাহী বলেন, ‘উনারা (ডিসিরা) যখন এসেছেন তখন তো সমস্যাটা অত প্রকট হয়নি। ওখানে সাময়িক কিছু জায়গায় লোডশেডিং হবে, কয়লা উৎপাদন শুরু না হওয়া পর্যন্ত। যেখানে ইন্ট্রাপশন হবে ওরা জানিয়ে দেবে।’

কবে নাগাদ কয়লা উৎপাদনে হবে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ইনশাআল্লাহ এক মাসের মধ্যে।’

বড়পুকুরিয়া খনি থেকে এতদিন ধরে প্রায় এক লাখ ৪২ হাজার টন কয়লা গায়েব হলো ধরা পড়ল না। এখন মানুষ বিদ্যুতের অভাবে ভুগছে- এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, ‘এটাই তদন্ত হচ্ছে। আমি তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্য করব না। তদন্ত করে দেখা হবে কীভাবে জিনিসটা হলো, এর দায়-দায়িত্ব কার। তদন্ত হয়ে গেলে আপনারা জানতে পারবেন।’

‘আমাদের প্রধানমন্ত্রী সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্নেহের সঙ্গে দেখেন, কার্য সম্পাদনে গাফিলতি হলে তিনি কোনো মতেই সহ্য করবে না।’

তৌফিক-ই-ইলাহী আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে কঠোর। তিনি সব সময়, এগুলোর ব্যাপারে...কোনো দুর্নীতি, কোনো বিশৃঙ্খলা, নিয়ম-নীতির বরখেলাপ তিনি কোনো দিন সহ্য করেন না, তিনি চানও না।’

শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ‘ঝুঁকিপূর্ণ শ্রমে নিয়োজিত এক লাখ শিশুকে ফিরিয়ে আনতে ২৮৫ কোটি টাকার একটি প্রকল্প নেয়া হয়েছে। আগামী সেপ্টেম্বর থেকে আমরা এই প্রকল্প বাস্তবায়নে যাব। জেলা প্রশাসকদের অনুরোধ করেছি নিজ নিজ জেলায় ঝুঁকিপূর্ণ শিশু শ্রমিক কোথায় কি পরিমাণ আছে তা সার্ভে করে যদি একটি রিপোর্ট দেয় তবে শিশু শ্রম নিরসনে যে সব সহায়তা করা প্রয়োজন আমরা তা করব।’

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব মো. শাহ কামাল বলেন, ‘জেলা প্রশাসকরা বলেছেন, বন্যার বিষয়ে তাদের প্রস্তুতি ভালো আছে। তারা যে কোন দুর্যোগ মোকাবেলায় প্রস্তুতি গ্রহণ করেছেন। তবে তারা বলেছেন, নৌকার কিছু ঘাটতি আছে। বিভিন্ন জেলায় যদি ইঞ্জিনচালিক নৌকা থাকে তবে লোকজনকে আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসা যায়। তবে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমও ভালো হবে।’

তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে আমরা বিভিন্ন জেলায় বরাদ্দ দিয়েছি, জিআর ক্যাশ থেকে নৌকা বানানো যাবে। স্পিড বোর্ডের কথাও তারা বলেছেন।’

শাহ কামাল বলেন, ‘জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা নিয়মিত করার জন্য বলেছি। যে কোনো ধরনের দুর্যোগ মোকাবেলার প্রস্তুতি নেয়ার জন্য বলেছি। সকলে এই বিষয়টির সঙ্গে একমত হয়েছেন।’

এই কার্য অধিবেশনে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

আরএমএম/জেএইচ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।