‘জলমগ্ন সড়কে নরকের দুর্ভোগ’

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক চট্টগ্রাম
প্রকাশিত: ০১:০৯ পিএম, ২৪ জুলাই ২০১৮

সকাল থেকে থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। কখনও গুঁড়ি গুঁড়ি, কখনও মুষলধারে। সোমবার রাতের পর আজ (মঙ্গলবার) সকাল ১০টা থেকে আবারও শুরু হয় ভারী বর্ষণ। এতে ডুবে গেছে বন্দরনগরী চট্টগ্রামের নিম্নাঞ্চল। পানি-কাদায় একাকার রাস্তাঘাট। বিঘ্নিত হচ্ছে সড়কে যান চলাচল। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েন স্কুল-কলেজ-অফিসগামীরা। অনেকেই নির্ধারিত সময়ে পৌঁছাতে পারেননি গন্তব্যে।

শনিবার (২১ জুলাই) মধ্যরাত থেকে চট্টগ্রামে ভারী বর্ষণ শুরু হয়েছে। সোমবার দুপুর থেকেই নগরীর হালিশহর, বড়পুল, ছোটপুল, সিডিএ আবাসিক এলাকা, কাপাসগোলা, ওয়াসার মোড় থেকে ষোলশহর ২ নম্বর গেট পর্যন্ত অধিকাংশ এলাকা, মুরাদপুর, বহদ্দারহাট, ডিসি রোড, মিয়া খান নগর, পোড়া ভিটাসহ বিভিন্ন এলাকায় পানি জমে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয়। বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় আজও অবস্থার উল্লেখযোগ্য কোনো উন্নতি হয়নি।

নগরের আগ্রাবাদ এলাকায় কোনো কোনো স্থানে হাঁটু থেকে কোমর পর্যন্ত পানি উঠেছে। সিডিএ আবাসিক এলাকাও বৃষ্টির পানিতে ডুবে আছে। ভারী বর্ষণের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে জোয়ারের পানি। ফলে এখানকার শত শত পরিবার পানিবন্দী হয়ে আছেন। অধিকাংশ বাসার নিচ তলায় পানি ঢুকেছে। এ এলাকার এক্সেস রোডের অবস্থাও একই রকম।

water

আগ্রাবাদ এক্সেস রোডে চলাচলকারী রাইডার চালক আসাদুল ইসলাম বলেন, টানা বৃষ্টিতে সড়কের বিভিন্ন স্থানে কার্পেটিং উঠে গেছে। এসব জায়গায় পানিও জমে রয়েছে। ফলে ভাঙাচোরা সড়কে যানবাহন চলাচলে সমস্যা হচ্ছে।

নগরের বহদ্দারহাট থেকে চকবাজার পর্যন্ত এলাকার কয়েকটি স্থানে রাস্তা পানিতে তলিয়ে গেছে। কাপাসগোলা, কাতালগঞ্জ এলাকায় রাস্তায় পানি জমে যাওয়ায় স্থানীয়রা দুর্ভোগে পড়েছেন। চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ এলাকার রাস্তাও ডুবে গেছে। চাক্তাই খাল উপচে পানি প্রবেশ করছে মিয়াখান নগর, ডিসি রোড, পোড়া ভিটা এলাকায়।

এদিকে সরেজমিনে দেখা যায়, ওয়াসা মোড় থেকে মুরাদপুর পর্যন্ত সড়ক এবং ফ্লাইওভারের নিচে দুই পাশেই বেহাল দশা। কয়েকশ’ছোট-বড় গর্ত সৃষ্টি হওয়ায় গাড়ি চলছে হেলেদুলে। ২ ফুট পর পর গর্ত। গর্তে পানি জমে আছে। এটুকু রাস্তা পার হতে ১০ মিনিটের বেশি সময় লাগার কথা না থাকলেও এখন লাগছে এক ঘণ্টারও বেশি।

water

মুরাদপুর মোড় থেকে বহদ্দারহাট মোড় পর্যন্ত সড়কে ছোট-বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি রাস্তার পিচ ঢালাইও উঠে গেছে। গাড়ি চলাচল করছে ধীর গতিতে। বহদ্দারহাট থেকে আরাকান সড়কেরও একই অবস্থা। এ সড়কের সংস্কার কাজ শুরু হলেও বৃষ্টির কারণে ব্যাহত হচ্ছে। সৃষ্টি হচ্ছে তীব্র যানজট। বহদ্দারহাট থেকে রাহাত্তারপুল-কালামিয়া বাজার হয়ে শাহ আমানত সেতু পর্যন্ত সড়কটির অবস্থাও কাহিল। এ সড়কেও সৃষ্টি হয়েছে কয়েকশ’ গর্ত। রাস্তার একপাশ ভেঙেও গেছে।

সকালে সিঅ্যান্ডবি শিল্প এলাকার উদ্দেশে নগরের বহদ্দারহাটের বাসা থেকে বের হন বেসরকারি চাকরিজীবী শাহেদ সরোয়ার। জাগো নিউজকে তিনি বলেন, ‘যে পরিমাণ বৃষ্টি ও বাতাস তাতে বাসা থেকে বের হতেও ভয় হচ্ছে। বড় একজন পার্টনার অফিসে আসছেন, সে জন্যই বের হয়েছি। বাসার সামনে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে আছি। কিন্তু কোনো রিকশা, অটো রিকশা কিছুই পাচ্ছি না।’

এদিকে আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, আজও চট্টগ্রাম বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। পরবর্তী ৭২ ঘণ্টায় আবহাওয়ার সামান্য পরিবর্তন হতে পারে।

আবু আজাদ/এমএমজেড/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।