লতিফ সিদ্দিকীকে নিয়ে বেকায়দায় ইসি


প্রকাশিত: ১২:৩৪ পিএম, ০৬ আগস্ট ২০১৫

সাবেক ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর এমপিপদ বাতিল নিয়ে বেকায়দায় পড়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বিষয়টি নিয়ে সংবিধানে স্পষ্টভাবে কিছু না লেখা থাকায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। আবার এর আগে বেশ কয়েকজন এমপিকে দল থেকে বহিষ্কার করা হলেও তাদের এমপিপদ যায়নি। কিন্তু এবার ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নিজেই আবদুল লতিফের এমপিপদ বাতিলের জন্য প্রথমে স্পিকার ও পরে ইসির কাছে চিঠি দেয়ায় বিব্রত নির্বাচন কমিশন।
 
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার সিরাজুল ইসলাম বৃহস্পতিবার দুপুরে জাগো নিউজকে বলেন, লতিফ সিদ্দিকীর এমপিপদ বাতিলের বিষয়টি নিয়ে আইনি জটিলতা আছে। তবে খুব শিগগিরই এ নিয়ে শুনানি করবে ইসি। তারপর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে।

ইসির এক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ প্রতিবেদককে বলেন, সরকার চাচ্ছে লতিফ সিদ্দিকীর এমপিপদ চলে যাক। কিন্তু দল থেকে বহিষ্কার করলে এমপিপদ চলে যাওয়ার নজির নেই। তবে ইসির দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা সরকারকে খুশি করতে চাচ্ছেন। তাই তারা আইনের ফাক-ফোকর খুঁজে তার (লতিফ সিদ্দিকী) এমপিপদ বাতিলের চেষ্টা করছেন।

জানা যায়, সংসদ সদস্য পদ শূন্য প্রসঙ্গে সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘নির্বাচনে কোনো রাজনৈতিক দলের প্রার্থী হিসেবে মনোনীত হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি যদি উক্ত দল থেকে পদত্যাগ করেন অথবা সংসদে উক্ত দলের বিপক্ষে ভোটদান করেন, তাহলে তার সংসদ সদস্য পদ বালিত হবে।’ তবে বহিষ্কার করা হলে কি হবে তা স্পষ্ট নয়।

এর আগে চারদলীয় জোট সরকারের সময়ে অষ্টম জাতীয় সংসদে বিএনপির টিকিটে নির্বাচিত সংসদ সদস্য আবু হেনাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। তার সংসদ সদস্য থাকবে কি-না বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন উঠলে তখন সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আবু হেনার সদস্য পদ রাখার সিদ্ধান্ত দেন তৎকালীন স্পিকার মুহম্মদ জমিরউদ্দিন সরকার। একইভাবে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের আমলে নবম জাতীয় সংসদেও একই ঘটনা ঘটে। সাতক্ষীরা-৪ আসন থেকে নির্বাচিত এইচ এম গোলাম রেজাকে তার দল জাতীয় পার্টি বহিষ্কার করলেও তার সংসদ সদস্য পদ বহাল থাকে।

উল্লেখ, গত বছর ২৯ সেপ্টেম্বর নিউ ইয়র্কে প্রবাসীদের এক অনুষ্ঠানে হজ ও তাবলিগ জামাত নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করে সমালোচনার মুখে পড়েন সাবেক এ মন্ত্রী। এরপর ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে দেশের বিভিন্ন স্থানে তার বিরুদ্ধে প্রায় দুই ডজন মামলা হয়। বিভিন্ন ইসলামপন্থি দলগুলোর আন্দোলনের হুমকি ও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে সমালোচনার মুখে সবই খোয়াতে হয় লতিফকে।

২০১৪ সালের ২৩ নভেম্বর রাতে ভারত হয়ে দেশে ফেরেন লতিফ সিদ্দিকী। পরদিন তিনি আত্মসমর্পণ করলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠায়। উচ্চ আদালত থেকে জামিন পাওয়ার পর গত ২৯ জুন তিনি মুক্তি পান। এরপর আওয়ামী লীগ তার সংসদ সদস্যপদ বাতিলের জন্য প্রথমে স্পিকার ও পরে ইসির কাছে চিঠি দেয়।

এইচএস/আরএস/এমআরআই

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।