যে কারণে বিয়ে বিচ্ছেদ চান ভারতীয় পুরুষ
ভারতে এখনো বিবাহ বিচ্ছেদের হার বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে কম। কিন্তু সেখানেও বিবাহ বিচ্ছেদ বাড়ছে। শারীরিক বা মানসিক নির্যাতনকেই বেশিরভাগ বিচ্ছেদের ক্ষেত্রে কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হচ্ছে।
কিন্তু আদালতে যখন স্বামী-স্ত্রী বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা নিয়ে যাচ্ছেন, তখন কোন ধরনের নির্যাতনকে ‘মানসিক নির্যাতন’ হিসেবে গণ্য করা হবে, তা ঠিক করতে গিয়ে বিপাকে পড়ছেন বিচারকরা।
সাম্প্রতিক কিছু বিবাহ বিচ্ছেদের মামলায় স্ত্রীদের বিরুদ্ধে স্বামীরা এমন কিছু বিষয়কে ‘মানসিক নির্যাতন’হিসেবে উল্লেখ করেছেন, যা বেশ কৌতুকের সৃষ্টি করেছে।
যেমন একজনের অভিযোগ, তার স্ত্রী বেশি বেশি পার্টি করেন, এটা তার ওপর মানসিক নির্যাতনের সামিল। আরেকজন বলেছেন, তিনি বিচ্ছেদ চান, কারণ তার স্ত্রীর যৌন ক্ষুধা খুব বেশি। আদালতে যখন এসব মামলা উঠছে, তখন বিচারকরা কিভাবে তাদের রায় দিচ্ছেন?
এমন কিছু বিয়ে বিচ্ছেদের মামলার কাহিনী তুলে ধরেছে বিবিসি :
পার্টি আসক্ত স্ত্রী
স্বামী ছিলেন জাহাজের নাবিক। তার অভিযোগ, স্ত্রী খুব কেবল পার্টি করে বেড়ান, এটা তার ওপর এক ধরনের মানসিক নির্যাতন। এই অভিযোগের ভিত্তিতে ডিভোর্স চেয়েছিলেন পারিবারিক আদালতে গিয়ে, আদালত তা মঞ্জুরও করে।
কিন্তু গত সপ্তাহে মুম্বাই হাইকোর্ট এই রায় উল্টে দিল।
আদালতের মন্তব্য, স্বামী নিজেও যেখানে পার্টি করে বেড়ান, সেখানে স্ত্রীর পার্টি আসক্তিকে কোনভাবেই স্বামীর ওপর নির্যাতন বলে গণ্য করা যায় না।
অতিরিক্ত সেক্স
বিয়ে ভেঙ্গে যাওয়ার ক্ষেত্রে যৌন মিলনবিহীন দাম্পত্য সম্পর্ককে অনেকেই কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন। কিন্তু ভারতের একজন স্বামী এই বলে ডিভোর্স চেয়েছেন যে তার স্ত্রীর যৌন আসক্তি খুব বেশি। মামলায় তিনি উল্লেখ করেছেন, ‘স্ত্রীর অতিরিক্ত এবং অদমনীয় যৌন ক্ষুধার’ কারণে তিনি বিচ্ছেদ চাইতে বাধ্য হচ্ছেন।
স্বামীর আরো অভিযোগ, এমনকি অসুস্থ অবস্থায়ও স্ত্রী তাকে সেক্স করতে বাধ্য করেছে। যদি তিনি রাজি না হন, সেক্ষেত্রে অন্য পুরুষের সঙ্গে সেক্স করবেন বলে হুমকি দিয়েছেন।
শুনানি শেষে মুম্বাইয়ের পারিবারিক আদালত স্বামীর পক্ষে রায় দেন।
ব্রণের যন্ত্রণা
ভারতে এখনো বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ঘটকালির মাধ্যমে পারিবারিকভাবেই ছেলে-মেয়ের বিয়ে দেয়া হয়, যেটাকে বলা হয় ‘অ্যারেঞ্জড ম্যারেজ’। কিন্তু আগে থেকে দেখা না হওয়া বর-কনের মধ্যে বিয়ের পর নানা সমস্যা সৃষ্টি হয়।
এভাবে বিয়ে করা এক স্বামী ডিভোর্সের মামলায় কারণ হিসেবে যা উল্লেখ করেছেন, সেটা নজিরবিহীন। তার অভিযোগ, স্ত্রীর মুখের ব্রণ তার নিদারুণ মানসিক যন্ত্রণার কারণ হয়ে উঠেছে।
হানিমুনে গিয়ে স্ত্রীর মুখে ব্রণের দাগ দেখার পর তিনি আর এই সম্পর্ক এগিয়ে নিতে আগ্রহী হননি। ডাক্তার অবশ্য স্ত্রীর পক্ষে সাক্ষী দিয়ে বলেছিল, ব্রণের সমস্য চিকিৎসার মাধ্যমে দূর করা সম্ভব। কিন্তু আদালতের রায় ছিল, এক্ষেত্রে ব্রণের সমস্যা লুকিয়ে স্বামীর সঙ্গে স্ত্রী প্রতারণা করেছে।
এসএইচএস/এমআরআই