রাজাকার লিয়াকতের ৬ ভাইসহ ৭ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ
মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত হবিগঞ্জের পলাতক আসামি লিয়াকত আলীর ছয় ভাইসহ সাতজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত কর্মকর্তা। বাদিকে মামলা তুলে নিতে হুমকি এবং লিয়াকতের বিচারে বাধা না দিতে তাদের কাছ থেকে মুচলেকা আদায় করা হয়।
বুধবার অভিযুক্তদের ট্রাইব্যুনালে তলব করে লিয়াকতের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. নূর হোসেন।
তিনি জানান, লিয়াকতের পারিবারিক, রাজনৈতিক ও অবস্থান সম্পর্কে তথ্য জানার জন্য তার ছয় ভাই ও অপর এক স্বজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। বাদিকে হুমকিসহ বিভিন্ন কারণে একটি লিখিত মুচলেকাও রাখা হয়েছে। এর আগে লিয়াকতকে দেশ ত্যাগে সহযোগিতার অভিযোগের প্রেক্ষিতে তার অবস্থান সম্পর্কে জানতে মাধবপুরের বাঘাসুরা ইউপি চেয়ারম্যান সাহাবুদ্দিনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, লাখাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও মুড়াকরি ইউপি চেয়ারম্যান লিয়াকত আলীর নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে কৃষ্ণপুর গ্রামে গণহত্যা, ধর্ষণ, হিন্দুদের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এর প্রেক্ষিতে ওই গ্রামের মৃত কৃষ্ণমোহন রায়ের ছেলে হরিদাশ রায় বাদী হয়ে ২০১০ সালের ৪ মার্চ হবিগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। এতে তিনি লিয়াকতকে প্রধান করে আটজনকে আসামি করেন।
মামলায় তিনি উল্লেখ করেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় ১৯৭১ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ভোর ৫টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ওই গ্রামে তাণ্ডব চালায় লিয়াকত ও তার বাহিনী। মামলার প্রেক্ষিতে মানবতাবিরোধী আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত দল পুরো বিষয়টি তদন্ত করেন।
তদন্তকালে তারা ঘটনার সত্যতাও পান। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। এরপর থেকেই লিয়াকত আত্মগোপন করে। এক পর্যায়ে তিনি গোপনে দেশত্যাগ করে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। লিয়াকত দেশত্যাগের পর মাধবপুরের বাঘাসুরা ইউপি চেয়ারম্যান সাহাবুদ্দিনকে ট্রাইব্যুনালে তলব করা হয়। লিয়াকতকে পালতে সহযোগিতার অভিযোগে তাকে ডাকা হয়।
সাহাবুদ্দিনকে ডাকার কয়েকদিন পর লিয়াকতের ছয় ভাইসহ সাতজনকে তলব করেন ট্রাইব্যুনাল। বুধবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
সৈয়দ এখলাছুর রহমান খোকন/এআরএ/এমআরআই