অতিষ্ঠ অনেকে হেঁটেই চলেন

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮:১০ পিএম, ২১ জুলাই ২০১৮
ছবি : মাহাবুব আলম

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেয়া গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠান ঘিরে রাজধানীতে দুপুর থেকেই কম ছিল যানবাহনের সংখ্যা। প্রয়োজনের তাগিদে ঘরের বাইরে আসা মানুষগুলোই পড়েছেন বেকায়দায়। আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বয়ে আনা যানবাহন গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠান শেষে নির্বিঘ্নে গন্তব্যের উদ্দেশে রওয়ানা দিতে পারলেও সাধারণ পরিবহনের চলা যেন দায়। ঘণ্টা অবধি দাঁড়িয়ে থেকে অতিষ্ঠ অনেকেই হেঁটে নিজ গন্তব্যে রওনা হন।

ভারতের আসানসোলের কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডি লিট ডিগ্রি অর্জন, মহাকাশে সফলভাবে বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট পাঠানো, অস্ট্রেলিয়ার সিডনি থেকে গ্লোবাল উইমেন্স লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড অর্জন ও স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার যোগ্যতা অর্জন, চ্যাম্পিয়ন অব দ্য আর্থসহ বেশ কিছু আন্তর্জাতিক পুরস্কার পাওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দলের পক্ষ থেকে এই গণসংবর্ধনা দেয়া হয়।

dhaka

গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠান ঘিরে ব্যানার-ফেস্টুন ও মিছিলের পাশাপাশি ঢাকঢোল বাজিয়ে দলে দলে নেতাকর্মীরা রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে হাজির হন। অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পর স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত সোহওরায়ার্দী প্রাঙ্গণ ফাঁকা হলেও মানুষের ঢল নামে সড়ক ফুটপাতে।

যানজট কমাতে ও যান চলাচল স্বাভাবিক ও গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানকে নির্বিঘ্ন করতে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) নির্দেশনা অনুযায়ী, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের চারদিকের রাস্তায় যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হয়। বেলা ১টা হতে অনুষ্ঠান শেষ হওয়া পর্যন্ত শাহবাগ হতে মৎস্য ভবন, টিএসসি হতে দোয়েল চত্বর রাস্তা বন্ধ থাকে।

dhaka

বাংলামোটর, কাকরাইল চার্চ, ইউবিএল, জিরো পয়েন্ট, গোলাপশাহ মাজার, চাঁনখারপুল, বকশীবাজার, পলাশী, নীলক্ষেত, কাঁটাবন ক্রসিং দিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়মুখী সাধারণ গাড়িগুলোকে ডাইভারশান করে বিকল্প সড়কে ঘুরিয়ে দিতে দেখা যায়।

রাজধানীতে অতিরিক্ত যানবাহন ঢোকায় যথাসাধ্য যানজট নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা লক্ষ্য করা গেছে ট্রাফিক পুলিশের মধ্যে। সমাবেশ শেষে রাজধানীর শাহবাগ, ফার্মগেট, মিন্টো রোড, কাকরাইল, মালিবাগ, মগবাজার, প্রেস ক্লাবসহ বেশকিছু জায়গায় ও ব্যস্ত সিগন্যালে জনস্রোতকে রাস্তার দু’ধারে সরিয়ে যানবাহন চলাচলে পুলিশকে বেশ সহযোগিতার ভূমিকায় দেখা গেছে।

dhaka

সমাবেশের পর বেলা সোয়া ৬টার দিকে যানজট দেখা গেছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে অদূরে মগবাজারে। মহাখালী থেকে আসা বাসগুলোর গতি কমতে কমতে যানজটে রূপ নেয়। হাসিবুল ইসলাম নামে ৬ নং বাসের এক যাত্রী বলেন, মগবাজার ফ্লাইওভার দিযে উড়েও কাকরাইল পৌঁছতে ঘণ্টা পার।

কাকরাইল মসজিদ এলাকা থেকে জাগো নিউজের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক খালিদ হোসেন জানান, গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠান শেষ হবার পর পল্টন এলাকা যেন জনসমুদ্রে পরিণত হয়। রাস্তায় মানুষ আর মানুষ। যে কারণে রাস্তায় যানবাহন চলাচলে ধীরগতি লক্ষ্য করা গেছে। পল্টন এলাকায় মোটরসাইকেলে করে রাজমনী সিনেমা হল থেকে উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল হয়ে হেয়ার রোডে যেতে তার ঘণ্টাখানেক সময় লেগেছে বলে জানান তিনি।

dhaka

অন্যদিকে শাহবাগ থেকে জাগো নিউজের নিজস্ব প্রতিবেদক আমানউল্লাহ আমান জানান, দুপুর থেকেই গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠান ঘিরে গণপরিবহন ছিল না সড়কে। মিছিলের পাশাপাশি দলীয় মোটরসাইকেল শোডাউন দেখা গেছে। সমাবেশ শেষ হবার পর অর্থাৎ বেলা সাড়ে ৬টার দিকেও শাহবাগের সড়কে স্বাভাবিক যানবাহন চলাচল দৃশ্য ফেরেনি।

রাজধানীর একদিকে যানজট থাকলেও অনেক সড়কে গণপরিবহনের সংকট দেখা দেয়। যানজটের বিষয়টি মাথায় রেখে অনেক গণপরিবহন সড়কে নামেনি।

dhaka

সরেজমিনে রাজধানীর কারওয়ানবাজার, শাহবাগ ও বাংলামোটরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় অনেক যাত্রীকে।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের কারণে কাকরাইল থেকে শাহবাগের সড়কে যানবাহন চলাচল করতে দেয়নি পুলিশ। সাহাবুদ্দিন নামের এক ব্যক্তি চাঁদপুর থেকে সপরিবারে আসেন সদরঘাটে। সেখান থেকে সিএনজিতে করে অনেক অলিগলি ঘুরে মিন্টো রোডের মাথায় পৌঁছতে পারলেও আটকে দেয় পুলিশ। সেখানে থেকে মালপত্র মাথায় নিয়ে হেঁটে যান রূপসী বাংলার মোড়ে। সেখানেও যানবাহন সংকট। পরে আরও হাঁটতে থাকেন তিনি।

বাংলামোটরে পৌঁছার পর এই প্রতিবেদককে তিনি বলেন, রাজধানীতে থাকলে হয়তো আজকের পরিস্থিতি আগাম বুঝতে পারতাম। বাড়ি থেকে আসায় ভোগান্তিতে পড়েছি। পরে সেখানে পুলিশের সহযোগিতায় একটি সিএনজিতে করে হাতিরপুল হয়ে শ্যামলীর উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন তিনি।

dhaka

ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মো. ওবায়দুর রহমান বলেন, রাজধানীতে সমাবেশ হলে মানুষ ও যানবাহনের চাপ বাড়ে। যানজট কমাতে ও যান চলাচল নির্বিঘ্ন করতে তাই ডিএমপির পক্ষ থেকে আগাম বার্তা দেয়া হয়েছিল। ট্রাফিক বিভাগসহ পুলিশ সদস্যদের নিরলস প্রচেষ্টায় রাস্তায় যানচলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।

ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগের যুগ্ম কমিশনার (দক্ষিণ) মফিজ উদ্দিন আহম্মেদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় আমাদের আগাম পরিকল্পনা বেশ সফল হয়েছে। সোহরাওয়ার্দীতে আওয়ামী লীগ আয়োজিত সমাবেশ শেষ হবার পর খুব দ্রুত রাস্তায় যান চলাচল স্বাভাবিক করা গেছে। এখন সব নরমাল।’

জেইউ/জেডএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।