রাজধানীর মুগদায় পানির তীব্র সঙ্কট

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮:৪০ পিএম, ১৩ জুলাই ২০১৮

‘চারদিন ধরে পানি নেই। ঠিকমত গোসলও করতে পারছি না। কাল থেকে খাওয়ার পানিও নেই। পানির আভাবে যেন কারবালার অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। পানি ছাড়া কি জীবন চলে। মানুষগুলো পানির সংকটে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। এখন রাস্তায় নামা ছাড়া উপায় থাকবে না।’

রাগ আর ক্ষোভ নিয়ে কথাগুলো বলছিলেন রাজধানীর দক্ষিণ মুগদা ব্যাংক কোলনির বাসিন্দা হামযা।

শুক্রবার (১২ জুলাই) সরেজমিনে রাজধানীর মুগদাপাড়া এলাকার ঘুরে দেখা গেছে, এলাকার বেশিরভাগ মহল্লায় চলছে পানির সঙ্কট। তিন চারদিন ধরে পানি নেই। এর মধ্যে মুগদার ব্যাংক কোলনি, ২৮ নাম্বার গলি, উত্তর ও দক্ষিণ মুগদার বেশ কিছু এলাকায় পানির সঙ্কট তীব্র আকার ধারণ করেছে।

এ এলাকার বাসিন্দারা জানান, পানির সঙ্কট নতুন কিছু নয়। নিয়মিত পানির বিল পরিশোধের পরও ওয়াসার পাম্প স্টেশন থেকে পানি কিনতে বাধ্য হচ্ছেন অনেকে। এ কারণে সারা দিনই মুগদা ওয়াসার পাম্প স্টেশনে পানির জন্য দীর্ঘ লাইনে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ পানির সঙ্কটে দুর্ভোগ এখন চরমে। গোসল, রান্নসহ গৃহস্থালি কাজে সংগ্রহ করা ও কেনা পানির উপর নির্ভর করতে হচ্ছে। নিয়মিত বিল পরিশোধের পরও মিলছে না পানি। একাধিকবার ওয়াসায় মৌখিক ও লিখিত অভিযোগ দেয়ার পরও সমস্যার সমাধান হচ্ছে না।

দক্ষিণ মুগদার বাড়িওয়ালা এরশাদ খান বলেন, কয়েক দিন পর পরই পানি থাকে না। বেশিরভাগ সময় রাত জেগে টানা মটর দিয়ে পানি সংগ্রহ করতে হয়। এ জন্য বাড়তি বিদ্যুৎ বিলও পরিশোধ করতে হচ্ছে। কিছুদিন ধরে রাতেও পানি পাওয়া যাচ্ছে না। যা আসে তাও ময়লা ও দুর্গন্ধযুক্ত। ফলে তা ব্যবহার করা যায় না। কিন্তু গত চারদিন ধরে কোনো পানিই নেই। এভাবে চলতে থাকলে ভাড়াটিয়া থাকবে না। আর থাকবেই বা কেন? পানি ছাড়া কি চলে?

Water-Songkot

তিনি বলেন, নিয়মিত বিল পরিশোধের পরও পানি পাওয়া যায় না। ওয়াসায় একাধিকবার মৌখিক ও লিখিত অভিযোগ দেয়ার পরও সমস্যার সমাধান হচ্ছে না।

পানির জন্য পাম্পের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন জোসনা বেগম। তিনি বলেন, তিনদিন ধরে পানি নেই। রাতে যাও আসে তাও ময়লা, দুর্গন্ধযুক্ত। ফলে তা খাওয়া যায় না। রান্নসহ সংসারে তো কম পানি লাগে না? তাই পাম্পে এসেছি খাওয়ার পানি নিতে। পানির অভাবে খুব সমস্যায় আছি।

চাকরিজীবী আরিফ জানান, গরমের যে তীব্রতা এ অবস্থায় পানির অভাবে গোসল করতে পারছি না। ফলে অসুস্থ হয়ে পড়ছি। গতকাল রাতে অফিস থেকে এসে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে পাম্প থেকে খাবার পানি এনেছি। এভাবে পানি ছাড়া জীবন চলে?

ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, আমাদের দুর্ভোগ কে দেখবে? দীর্ঘদিন ধরে এলাকার লোকজন বলে আসলেও সমাধান নেই। মানুষের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেলে আন্দোলন ছাড়া উপায় থাকবে না।

ঢাকাবাসীর জন্য সুপেয় পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশনের দায়িত্বে থাকা ওয়াসার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান, মুগদায় কিছু সমস্যা আছে। এ সমস্যা দ্রুত সমাধানের চেষ্টা চলছে।

তবে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এ এলাকার জন্য পানির যে পাম্প রয়েছে তা অনেক দুর্বল। যা দিয়ে চাহিদামতো পানি সরবরাহ করতে হিমশিম খাচ্ছে ওয়াসা।

এসআই/এএইচ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।