অবৈধ মাদক ব্যবসার অভিযোগ রাজধানীর অনেক ক্লাবের বিরুদ্ধে
রাজধানীর অনেক ক্লাবের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে মাদক আমদানি, শুল্ক ফাঁকি ও চোরাচালানের মাধ্যমে মাদক এনে বিক্রির অভিযোগ রয়েছে বলে জানিয়েছেন, শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) ড. মো. সহিদুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ক্লাবগুলোর বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহে কাজ চলছে। প্রমাণের ভিত্তিতে সেসব ক্লাবের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হবে।
মঙ্গলবার দুপুর পৌনে ১২টায় রাজধানীর কাকরাইলস্থ আইডিইবি ভবনে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের সম্মেলন কক্ষে উত্তরা ক্লাবে অভিযান ও সাম্প্রতিক সময়ে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদফতরের চলমান কার্যক্রম জানাতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।
ড. সহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের কাছে অনেক ক্লাবের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসে। কিন্তু আমরা চাইলেই সব ক্লাবে অভিযান পরিচালনা করতে পারি না। আমাদের গোয়েন্দারা সেসব অভিযুক্ত ক্লাবের বিরুদ্ধে তথ্য সংগ্রহে কাজ করছেন। সেসব তথ্য হাতে পেয়ে নিশ্চিত হয়ে অভিযান পরিচালনা করা হবে। তবে এখনি সেসব ক্লাবের নাম প্রকাশ করে কার্যক্রমের ব্যাঘাত ঘটাতে চাই না।’
বড় বড় ক্লাবগুলোর ওপর নজরদারি করা হচ্ছে কিনা- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ক্লাবগুলোতে এসব বিক্রির নিয়মিত নজরদারির জন্য আলাদা অধিদফতর (মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর) রয়েছে। আমাদের কাছে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে মাদক আনা ও বিক্রির অভিযোগ আসলেই কেবল তদন্ত করি।
উত্তরা ক্লাবের অভিযানের বিষয়ে ডিজি বলেন, ক্লাবটি শুল্ক ফাঁকি দিয়ে মদ এনে ব্যবসায় করতো বলে আমাদের কাছে সুনির্দিষ্ট তথ্য ছিল। আমরা আগেই ক্লাবটি রেকি করি। অভিযান চালাতে গেলে প্রথমে তাদের সহযোগিতা পাইনি। পরে অভিযানে হুইস্কি, ওয়াইন, ভোদকাসহ বিভিন্ন ব্রান্ডের ৩০৪৫ বোতল মদ ও ২৫০০ ক্যান বিয়া জব্দ করা হয়। এগুলো আমদানির স্বপক্ষে উত্তরা ক্লাব কোনো বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেনি।
উত্তরা ক্লাবে এতো মদের বোতল আসল কিভাবে? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে ডিজি বলেন, ‘হতে পারে তারা ডিপ্লোম্যাটিক বন্ডেড সুবিধার মাধ্যমে এগুলো এনেছে অথবা চোরাচালানের মাধ্যমে। কিন্তু যেভাবেই এনে থাকুক না কেন দীর্ঘক্ষণ সময় দেয়ার পরও তারা এগুলোর স্বপক্ষে কোনো বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। এছাড়া আমরা তদন্ত করে দেখলাম দীর্ঘদিন ধরে তারা কোনো মদই আমদানি করেনি। এগুলো কীভাবে এল তা আমরা তদন্ত করে বলতে পারবো।’
তিনি আরও বলেন, ক্লাবটিতে মোট ১৩৫০ জন সদস্য। সবাই এর সঙ্গে যুক্ত না। আমরা তদন্ত করছি। সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ও শুল্ক আইনে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
শুল্ক ফাঁকি দিয়ে কেনা গাড়ি জব্দের অভিযান সম্পর্কে তিনি বলেন, রাস্তায় একটি গাড়িতে আঁচড় লাগলে মালিক ক্ষেপে যায়, অথচ আমাদের সাম্প্রতিক অভিযানে দেখছি মানুষ রাস্তায় গাড়ি ফেলে যাচ্ছে। যারা এখনও শুল্কমুক্ত সুবিধায়, শুল্ক ফাঁকি কিংবা কম শুল্ক পরিশোধ করে গাড়ি কিনছেন। এমন বেশ কয়েকটি গাড়ি আটকের কাছাকাছি চলে এসেছি আমরা। এর সঙ্গে জড়িত সবাইকেই আইনের আওতায় আনা হবে।
এআর/জেইউ/এমবিআর/পিআর