শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী ‘পঁচিশ’ ও ‘পাইলট বাবু’ বন্দুকযুদ্ধে নিহত

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:৫৭ এএম, ১০ জুলাই ২০১৮
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের হাতে আটক ‘মাদকসম্রাট’ পঁচিশ

ঢাকার শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী জেনেভা ক্যাম্পের নাদিম ওরফে পঁচিশ (৩৫) এবং মিরপুরের কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী ইব্রাহীম হোসেন বাবু ওরফে পাইলট বাবু (৩৫) র‌্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন।

সোমবার দিবাগত রাতে নারায়ণঞ্জের রূপগঞ্জ এলাকায় এবং মঙ্গলবার ভোর ৪টার দিকে মিরপুরের শাহআলী থানাধীন বেড়িবাঁধ এলাকায় এই পৃথক দুটি ‘বন্দুকযুদ্ধে’র ঘটনা ঘটে।

র‌্যাব সূত্র জানায়, সোমবার দিবাগত রাতে নারায়ণঞ্জের রূপগঞ্জ এলাকায় ইয়াবার চালান ভাগ বাটোয়ারার খবর পেয়ে র‌্যাব সদস্যরা সেখানে অভিযানে যায়। এসময় র‌্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক ব্যবসায়ীরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। র‌্যাবও তখন পাল্টা গুলি চালায়। দুই পক্ষের মধ্যে কিছুক্ষণ গোলাগুলি চলার পর মাদক ব্যবসায়ীরা পালিয়ে গেলে ঘটনাস্থলে তল্লাশি চালিয়ে নাদিমের গুলিবিদ্ধ লাশ পাওয়া যায়।

ঘটনাস্থল থেকে ৪ হাজার ইয়াবা, একটি শুটার গান, একটি পিস্তল, ছয় রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে বলে

নাদিম ওরফে পঁচিশ ঢাকার শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীদের তালিকায় ২ নম্বর বলে জানিয়েছে র‌্যাব।

মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্পের বাসিন্দারা জানান, ঢাকার ইয়াবা ও মাদকসম্রাট ইশতিয়াকের পর গোয়েন্দাদের তালিকায় দ্বিতীয় শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী নাদিম হোসেন ওরফে পঁচিশ। তিনি ইশতিয়াকের সেকেন্ড ইন কমান্ড। ইশতিয়াকের হয়ে তিনি জেনেভা ক্যাম্পে মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করতেন। পুলিশ ও প্রশাসনকে টাকা দিয়ে ম্যানেজ করার দায়িত্ব ছিল তার। ঢাকায় কোনো মাদকব্যবসায়ী গ্রেফতার হলে তাকে মুক্ত করতে ব্যবস্থা করতেন তিনি।

গত বছরের ৩ নভেম্বর মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্প থেকে পঁচিশকে প্রথমবারের মতো গ্রেফতার করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর। সেদিনের আলোচিত ওই অভিযানে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সঙ্গে ছিল র‌্যাব, পুলিশ, বিজিবি, কোস্টগার্ড, এপিবিএন ও এনএসআইয়ের ২০০ সদস্য।

তবে গ্রেফতারের ১২ দিন পর ১৫ নভেম্বর নিম্ন আদালত থেকে চারটি মামলায় জামিন নিয়ে ছাড়া পান তিনি।

অন্যদিকে মঙ্গলবার ভোরে মিরপুর বেড়িবাঁধ এলাকায় আরেকটি বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় পাইলট ওরফে পাইলট বাবু নিহত হন।

র‌্যাবের দাবি, নিহত পাইলট বাবু মিরপুর এলাকার মাদকের গডফাদার। তার নামে ১৫টি মাদকের মামলা রয়েছে।

র‌্যাব-৪ এর সহকারী পরিচালক এএসপি মোহাম্মদ সাজেদুল ইসলাম সজল জানান, শাহআলী থানাধীন তামান্না পার্কের সামনে বেড়িবাঁধে র‌্যাব-৪ নিয়মিত চেকপোস্ট। মঙ্গলবার ভোর ৪টার দিকে তল্লাশীকালে মিরপুর দিক থেকে আসা একটি মোটরসাইকেল র‌্যাবের চেকপোস্ট থেকে ১০/১৫ গজ দূরে এসে হঠাৎ গতি কমিয়ে বামে তামান্না পার্কের দিকে মোড় নিতে উদ্যত হলে র‌্যাব সদস্যরা মোটরসাইকেলটিকে থামার সংকেত দেয়। তখন মোটরসাইকেলের দুই আরোহী র‌্যাব সদস্যদের লক্ষ্য করে বোমা ছুড়ে (ককটেল জাতীয়) দ্রুত তামান্না পার্কের দিকে পালাতে গেলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পড়ে যায়। আত্মরক্ষার্থে র‌্যাব সদস্যরাও গুলি ছুড়ে এগিয়ে যায়। ঘটনাস্থলে একজনকে রক্তাক্ত অবস্থায় আটক করা গেলেও আরেকজন পালিয়ে যায়। আহত ব্যক্তিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

এএসপি মোহাম্মদ সাজেদুল ইসলাম সজল আরও জানান, পরে অনুসন্ধানে জানা গেছে, নিহত ব্যক্তির নাম ইব্রাহীম হোসেন বাবু ওরফে পাইলট বাবু। মিরপুর এলাকার মাদকের গডফাদার তিনি। তার নামে ১৫টি মাদকের মামলা রয়েছে। রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধারের সময় নম্বর প্লেটবিহীন একটি নীল রঙয়ের ইয়ামাহা মোটরসাইকেল, ৬ হাজার পিস ইয়াবা ও ২টি বোমার (ককটেল জাতীয়) খণ্ডিত অংশ উদ্ধার করা হয়।

এ ব্যাপারে বিস্ফোরক দ্রব্য আইন ও মাদকদ্রব্য আইনে পৃথক তিনটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানান তিনি।

জেইউ/এআর/এমবিআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।