চেহারার দরকার নাই, শুধু চাই ‘নৌকায় ভোট’

আমানউল্লাহ আমান
আমানউল্লাহ আমান আমানউল্লাহ আমান , নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৬:১৪ পিএম, ০৭ জুলাই ২০১৮

ঐক্যবদ্ধ হয়ে নৌকার বিজয়ের জন্য কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন তৃণমূলের নেতারা। যদিও কেউ কেউ দলীয় প্রার্থীর পরিবর্তনও দাবি করেছেন। তৃণমূলের নেতাদের এমন দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ‘শুধু নৌকায় ভোট, আর কিচ্ছু নয়… কারও চেহারা দেখার দরকার নাই।’

শনিবার প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে ঢাকা, খুলনা, রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগের অন্তর্গত ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের নিয়ে অনুষ্ঠিত বিশেষ বর্ধিত সভায় বসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সভায় কোনো কোনো স্থান থেকে প্রার্থী পরিবর্তনের দাবি জানানো হয়। তৃণমূলের নেতাদের কাছ থেকে আসা এমন দাবির পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রীর মুখ থেকে এ বক্তব্য আসে।

বিশেষ বর্ধিত সভায় অংশ নিয়ে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের দবির উদ্দিন আহমেদ বলেন, তৃণমূলের মানুষ ঐক্যবদ্ধ। আমাদের কুষ্টিয়ায় ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। আপনি নৌকা দিয়ে যে প্রার্থীকে পাঠাবেন সেই প্রার্থীকে আমরা জয়ী করে আপনার কাছে নৌকা ফেরত দেব।

 

jagonews24

লালমনিরহাট জেলার তিন বিঘা করিডর এলাকার ধলগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন বলেন, ধলগ্রামে আমার চার শতক জায়গার ওপর একটি বাড়ি আছে। বাড়িটি আমি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অফিস হিসেবে দিয়েছি। আপনি আমাদের ভাগ্যের পরিবর্তন করেছেন। আপনার অবদান, আপনার ঋণ আমরা কোনো দিন পরিশোধ করতে পারব না।

তিনি আরও বলেন, আজ যে উন্নয়ন আপনি দিয়েছেন, বাংলাদেশের সর্বত্র যে উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে, আমরা অবশ্যই হাতে হাত রেখে, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে অবশ্যই নৌকা মার্কাকে বিজয়ী করব।

নেত্রকোনো জেলার কেন্দুয়া উপজেলার গণ্ডা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সনজু মিয়া বলেন, নেত্রী আজ আমাদের গণভবনে আহ্বান করে যে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন এজন্য আমাদের লক্ষ-কোটি তৃণমূল নেতাকর্মীর পক্ষ থেকে আপনাকে অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। আজ আপনার সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলার সুযোগ পেয়েছি, আওয়ামী লীগ করে আমার আর কোনো চাওয়া-পাওয়া নাই। আপনি যাকে মনোনয়ন দেবেন, আমরা তাকে নির্বাচিত করব।

 

jagonews24

‘আমাদের দাবি রাজনীতিতে ত্যাগ স্বীকারকারী ব্যক্তিকে আগামীতে মনোনয়ন দেবেন। আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে তার জন্য কাজ করব’- যোগ করেন তিনি।

বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট উপজেলার বেতাগা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান স্বপন দাশ বলেন, আপনি সোলার বিদ্যুতের মাধ্যমে গ্রামীণ অর্থনীতিকে উন্নয়ন করতে চান। কিন্তু সমস্যা হলো বাংলাদেশে একটি মাত্র কোম্পানি সোলারের ব্যবসা করে। একটি কোম্পানি হওয়ায় অর্থের ব্যয় ও সোলারের খরচ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

তিনি বলেন, ওয়ান ইলেভেনের সময় আমরা তৃণমূলের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ ছিলাম। এখনও আমরা ঐক্যবদ্ধ। আপনি যাকে নৌকা দেবেন তাকে জয়ী করার জন্য আমরা কাজ করে যাব। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বিনির্মাণের অগ্রযাত্রায় নৌকার প্রার্থীদের আগামী নির্বাচনে বিজয়ী করে আমরা আপনার হাতকে আরও শক্তিশালী করব।

শরীয়তপুর জেলার ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান মানিক সরদার বলেন, আপনি আমাদের দক্ষিণ বঙ্গের মানুষের জন্য পদ্মা সেতু করে দিচ্ছেন। এ সেতুর মাধ্যমে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন হবে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শরীয়তপুরের তিনটি আসন থেকে আমরা আপনাকে নৌকার জয় উপহার দেব।

‘আমরা তৃণমূলের নেতারা এক ও অভিন্ন। নৌকার বিজয় নিশ্চিতের জন্য আমরা কাজ করে যাব।’

একে একে সবার কথা মনোযোগ দিয়ে শোনেন দলের সভাপতি। সমাপনী ভাষণে উপস্থিত নেতাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘সংগঠনকে শক্তিশালী করবেন। শুধু নৌকায় ভোট… আর কিচ্ছু নয়, কারও চেহারা দেখারও দরকার নাই। শুধুমাত্র নৌকায় ভোট দেবেন- এটাই আপনারা প্রচার করবেন।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সরকারের উন্নয়নের তূলনামূলক সংক্ষিপ্ত চিত্র করে দিয়েছি। একটা খামে তা আপনাদের উপহার হিসেবে দেয়া হয়েছে। এটা দিয়েই আপনারা জনগণের কাছে যেতে পারবেন, আওয়ামী লীগ কী কী উন্নয়ন করেছে তা বলতে পারবেন।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এলাকায় গিয়ে আপনাদের জনমত তৈরি করতে হবে। সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও মাদকের বিরুদ্ধে যে অভিযান তা অব্যাহত রাখতে হবে।’

‘আপনারা জানেন আমরা ৫৬০টি মসজিদ তৈরি করেছি, সেখানে ইসলামিক কালচারাল সেন্টার হবে। আমরা প্রতিটি এলাকার উন্নয়ন করেছি। বাংলাদেশে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের স্থান হবে না। সমাজের সবাইকে নিয়ে এর বিরুদ্ধে আপনাদের অবস্থান নিতে হবে। মাদকের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে হবে, কারণ এতে এক-একটা পরিবার ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।’

এইউএ/এমএআর/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।