ব্যাংক-বিকাশের টাকা ছিনতাই ওদের টার্গেট

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২:২৬ পিএম, ০৫ জুলাই ২০১৮

লেনদেনকালে বিভিন্ন ব্যাংক, বিকাশসহ আর্থিক প্রতিষ্ঠানের টাকা ছিনতাই ওদের প্রধান টার্গেট। কেউ লেনদেনকারীকে অনুসরণ করে, কেউ আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সামনে দাঁড়িয়ে তথ্য সংগ্রহ করে। এরপর ব্যাংকে টাকা জমা দিতে গেলেই ব্যাংকের নিচেই সংঘবদ্ধ হয়ে গুলি ছুড়ে আতঙ্ক তৈরির মাধ্যমে টাকা নিয়ে পালিয়ে যায় তারা।

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারস্থ র‌্যারের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাব-১ এর কোম্পানি কমান্ডার মেজর মো. রাকিবুজ্জামান।

তিনি জানান, বিভিন্ন পেশায় জড়িত সংঘবদ্ধ সাতজন এর আগে গত ১৩ মে গাজীপুর জেলার চান্দনা চৌরাস্তা এলাকার উনিশে টাওয়ারের নিচে রবি ও বিকাশের এজেন্টের ১৫ লাখ টাকা ছিনতাই করে চাঞ্চল্য ছড়ায়। এরপর ছায়া তদন্তে নেমে তাদের সন্ধান পায় র‌্যাব। বুধবার দিবাগত রাতে রাজধানীর উত্তরা এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করে র‌্যাব-১ এর সদস্যরা। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৩টি বিদেশি অস্ত্র ও ১৬ রাউন্ড গুলি জব্দ করা হয়।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- সাগর বাড়ৈ (৩৫), রুবেল (৩৫), মো. বাবুল ওরফে বাবু (৩৬), মো. আনোয়ার হোসেন (৩৫), স্বপন মাহমুদ (৪৯), ইউসুফ আলী (২৮) ও আনোয়ার হোসেন (২৮)।

তিনি বলেন, গত ১৩ মে গাজীপুর চান্দনা চৌরাস্তা এলাকার উনিশে টাওয়ারের নিচে ছিনতাইকারীরা রবি ও বিকাশের এজেন্ট মো. আসাদুর রহমান আসাদ (২৮) এবং ইকবাল হোসেনের (৩৯) ১৫ লাখ টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। এ সময় একই প্রতিষ্ঠানের সুমন মল্লিক নামের একজন কর্মী আহত হয়।

চান্দনা চৌরাস্তা গ্রেটওয়াল হাউজিং সোসাইটির নিজ প্রতিষ্ঠান জমাদ্দার এন্টারপ্রাইজ নামক প্রতিষ্ঠানের হিসাবরক্ষক পদে মো. আসাদুর রহমান আসাদ ও সহকারী হিসাবরক্ষক পদে ইকবাল হোসেন এবং স্টোর ম্যানেজার পদে সুমন মল্লিক নিয়োজিত। জমাদ্দার এন্টারপ্রাইজ একটি রবি ও বিকাশ এজেন্ট ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান।

প্রকাশ্য দিবালোকে গুলি করে এ ধরনের ছিনতাইয়ের ঘটনা সারাদেশে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। ছিনতাইকারীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে র‌্যাব তাতক্ষণিক ছায়া তদন্ত শুরু করে।

jagonews24

র‌্যাবের গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জানা গেছে, উত্তরাস্থ বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান হতে টাকা ছিনতাই করার উদ্দেশ্যে একত্রিত হয়েছে চক্রটি। ওই খবরে র‌্যাবের একটি দল সেখানে অভিযান চালিয়ে ওই সাতজনকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতরা সংঘবদ্ধ ছিনতাই ও ডাকাত দলের সদস্য। তারা দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন জায়গায় ডাকাতি ও ছিনতাই করে আসছিল।

তিনি বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ছিনতাইকারী চক্রটির প্রধান সাগর ও তার অন্যান্য সহযোগীরা গত ১৩ মে গাজীপুর জেলার চান্দনা চৌরাস্তা এলাকার উনিশে টাওয়ারের নিচে রবি ও বিকাশের দুইজন এজেন্ট কর্মীকে গুলি করে ১৫ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।

সাগর জানান, তারা বিগত এক সপ্তাহ ধরে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ছিনতাই করার জন্য প্রস্তুতি নিলেও বিভিন্ন কারণে সফল হতে পারেনি।

র‌্যাব জানায়, এই চক্রের প্রধান সাগর পেশায় একজন মুহুরী। ২০১৩ সালে জনৈক বেনজামিনের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পরবর্তীতে বেনজামিনের মাধ্যমে জনৈক আনোয়ারের সঙ্গে তার পরিচয় হয় এবং তিনি ছিনতাইকারী চক্রে যোগ দেন। ২০১৭ সালে আনোয়ার আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে গুলিবিনিময়ে নিহত হলে সাগর চক্রটির নেতৃত্বে আসেন।

সাগর ইতিপূর্বে ডাকাতি ও ছিনতাই মামলায় দুইবার জেলে যায় এবং প্রথম বার সাত মাস ও দ্বিতীয়বার দুই মাস কারাবাস শেষে জামিনে বেরিয়ে আসে। জেলে থাকাকালীন সময়ে গ্রেফতারকৃত সাগরের সঙ্গে ছিনতাই চক্রের অপর সদস্য আনোয়ার ও কয়েকজনের সঙ্গে পরিচয় হয় এবং তারা চক্রে যোগদান করে। জেল থেকে বের হয়ে আসামি সাগর অনেক ছিনতাইয়ে অংশ নেন এবং সকল কাজে নেতৃত্ব দেন।

জেইউ/এমবিআর/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।