চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা রাখার ইঙ্গিত প্রধানমন্ত্রীর

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:৫১ পিএম, ২৭ জুন ২০১৮

‘সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা থাকতে হবে, কমানো যাবে না’ বিরোধী দলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদের এই বক্তব্যকে সমর্থন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘অবশ্যই, মুক্তিযোদ্ধাদের জন্যই তো আজ আমরা স্বাধীন। তাদের অবদানেই তো আমরা দেশ পেয়েছি।’

বুধবার জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে এ কথা বলেন তিনি। এর আগে রওশন এরশাদ তার বক্তব্যে বলেন, সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটাটা থাকতে হবে, কমানো যাবে না।

শেখ হাসিনা বলেন, আপনারা জানেন ১৯৭২ সালে মুক্তিযোদ্ধাদের কোটা দেয়া হয়। আমাদের অনেক এলাকা আছে যেসব এলাকা অনুন্নত, মেয়েদের জন্য, প্রতিবন্ধী এদের জন্য কোটা ব্যবস্থা। কিন্তু হঠাৎ দেখলাম আমাদের সব শিক্ষার্থীরা এর বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামলো- এই পদ্ধতি বাতিল করার জন্য। আমি চিন্তা করলাম হলে যারা থাকে তারা তো এসব গ্রাম থেকেই আসে। তারাই যদি এই পদ্ধতি না চায়, যাদের জন্য করি তারাই যদি না চায়, তাহলে এটি রাখার দরকারটা কি!

তিনি বলেন, এজন্য আমি কেবিনেট সেক্রিটারিকে দিয়ে একটি কমিটি গঠন করে দেই। এত বছর যে জিনিসটা চলছে তাকে তো রাতারাতি ...। আমি বলেছি থাকবে না। ‘এই থাকবে না’-টাকে কীভাবে কার্যকর করা যায় তার জন্য কেবিনেট সেক্রেটারিকে দিয়ে একটি কমিটি করে দেয়া হয়েছে যাতে এটা বাস্তবায়ন করা যেতে পারে।

তিনি বলেন, তবে আমি ধন্যবাদ জানাই বিরোধী দলীয় নেতাকে। তিনি বলেছেন, মুক্তিযোদ্ধা কোটাটা থাকতে হবে। অবশ্যই মুক্তিযোদ্ধাদের জন্যই তো আজ আমরা স্বাধীন। তাদের অবদানেই তো আমরা দেশ পেয়েছি।

তিনি বলেন, আমাদের ছাত্ররা যারা উচ্চ শিক্ষা পায় সবচেয়ে কম খরচে তারা পড়ালেখা করেন। এ সময় তার দুই সন্তানের পড়ালেখার খরচ জোগানের কষ্টের কথা তুলে ধরে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন শেখ হাসিনা। টাকার অভাবে তার ছেলেমেয়েরা পড়ালেখার পাশাপাশি চাকরি করতেন বলেও তিনি সংসদে জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তবে প্রায় বিনাপয়সায় আমরা ছাত্রদের পড়াই। তারপরও যদি তারা রাস্তায় নামে, ভিসির বাড়ি ভাঙচুর করে, লুটপাট করে- এর চেয়ে লজ্জার আর কিছু নাই। সেজন্য আমরা কোটা পদ্ধতি বাদ দিয়েছি। এরপর মফস্বলের কেউ চাকরি না পায়, তার জন্য অত্যন্ত আমাদের দায়ী করতে পারবে না।’

মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রাখব

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মাদবদ্রব্য পরিবারকে ধ্বংস করে, রাষ্ট্রকে ধ্বংস করে। সংসার যখন ধ্বংস হয় দেশও ধ্বংস হয়। দেশে মাদকাসক্তের ভয়াবহ অবস্থা। কাজেই এটার বিরুদ্ধে আমাদের যে অভিযান যে যাই বলুন আমরা কিন্তু এটা অব্যাহত রাখব। আমাদের ছেলেমেয়েরা লেখাপড়া শিখবে, মানুষের মতো মানুষ হবে। মাদকাসক্ত কেন হবে? তার জন্য যা যা করার আমরা পদক্ষেপ নিচ্ছি এবং এটা আমাদের অব্যাহত থাকবে। এতে যে যাই বলুক এতে কিছু আসে যায় না। আমাদের দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি এগিয়ে নিয়ে যাব।

তিনি বলেন, আমাদের সরকার একটি সুফল পুঁজি বাজার গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। সেখানে সুশাসন নিশ্চিত করার জন্য পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। ঢাকা স্টক একচেঞ্জে একটা ডিজিটাল পদ্ধতি গড়ে তোলা হয়েছে। পুঁজি বাজারের সুশাসন ও শৃঙ্খলা নিশ্চিত করার জন্য কর্মীদের বিদেশে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

পদ্মা সেতুর খরচ বৃদ্ধির প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, পদ্মা সেতু নির্মাণ কাজ কিন্তু তত্ত্বাবধায়ক সরকার করেনি। ১৯৬৪ সালের পরিকল্পনায় ছিল। এটা বঙ্গবন্ধুও উদ্যোগ নিয়েছিলেন। আমরা সে ডিজাইনটাকে পরিবর্তন করি। একটা সাইট দিয়ে রেল, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের লাইন গেল। ডিজাইনটা ঠিক করা হলো। এটা আমাদেরই করা। শুধু এটা নয় আমরা তিস্তা সেতুসহ অনেকগুলো সেতু করেছি। আমরা পদ্মা সেতুকে দোতালা সেতু বানাচ্ছি। যদি ফ্লাট সেতু বানাতাম তাহলে দ্রুত হয়ে যেত। আমরা নিজেদের টাকা দিয়ে এটা করছি। এটা ধীরে ধীরে করছি, এটার খরচ তাই বাড়বে।

টাকা বেশি দেবার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, জমি কেনার সময় কেনা দামের চেয়ে কম দামে রেকর্ড করে। এখন মুশকিল হলো, রেকর্ড করেছে কম দামে তাই জমি অধিগ্রহণের সময় তারা কম দাম পাচ্ছিল। সে অনুযায়ী খরচ ধরা হয়েছে। কিন্তু জমিওয়ালাদের যাতে ক্ষতি না হয় তাই এখন সে দামের তিনগুণ দামে জমি অধিগ্রহণ করছি। তাই পদ্মা সেতুর জন্য বরাদ্দ বাড়ছে।

এফএইচ/এইচএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।