‘তামাকের ব্যবহার কমাতে কার্যকরভাবে কর বৃদ্ধি না করা স্ববিরোধিতা’

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৩:১৪ পিএম, ২৭ জুন ২০১৮

একদিকে স্বাস্থ্য বাজেটে অসংক্রামক রোগ কমানোর অঙ্গীকার, অন্যদিকে তামাকের ব্যবহার কমানোর জন্য কার্যকরভাবে কর বৃদ্ধি না করা স্ববিরোধিতা বলে উল্লেখ করেছে বিভিন্ন সংগঠন। একইসঙ্গে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সক্ষমতা ও দক্ষতা বৃদ্ধি করার মাধ্যমে তামাক কর প্রশাসন ব্যবস্থাকে শক্তিশালী ও কার্যকর করা এবং কর ফাঁকির দণ্ড নিশ্চিত করার দাবিও জানান তারা।

বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত '২০১৮-১৯ অর্থবছরে প্রস্তাবিত বাজেটে তামাক কর : উপেক্ষিত জনস্বাস্থ্য' শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে ব্যুরো অব ইকোনোমিক রিসার্চ, বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটি, নাটাব, ইপসা, এইড ফাউন্ডেশন, মাদকবিরোধী সংগঠন প্রত্যাশা, তামাক বিরোধী নারী জোট, বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট এবং ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডব্লিউবিবি) ট্রাস্ট।

এ সময় বক্তারা বলেন, ’জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর বিড়ি, সিগারেট, জর্দা, গুলসহ সব ধরনের তামাক সেবন অকাল মৃত্যুর কারণ। কার্যকর তামাক নিয়ন্ত্রণে তামাকের কর বৃদ্ধির ক্ষেত্রে রাজনৈতিক স্বদিচ্ছা একটি জরুরি বিষয়। এবারও তামাক বিরোধী সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে সিগারেটের ক্ষেত্রে সুপারিশ ছিল নিম্নস্তরের সিগারেটের সর্বনিম্ন দাম প্রতি ১০ সিগারেটের জন্য ৫০ টাকা, উচ্চস্তরের সিগারেটের দাম প্রতি ১০টির জন্য ১০০ টাকা নির্ধারণ করা। আর প্রস্তাবিত বাজেটে নিম্নস্তরের সিগারেটের মূল্য ৩২ এবং সম্পূরক শুল্ক ৫৫ শতাংশ, মধ্যম স্তরের দশ শলাকার মূল্য ৪৮ এবং সম্পূরক শুল্ক ৬৫ শতাংশ এবং উচ্চস্তরের দশ শলাকার মূল্য ৭৫ ও ১০১ টাকা এবং সম্পূরক শুল্ক ৬৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।’

তারা আরও বলেন, ‘এটা পরিষ্কার যে, কর না বাড়ানোর সঙ্গে কোম্পানির ব্যবসায়িক স্বার্থ জড়িত। অথচ তামাকপণ্যের ওপর কর বৃদ্ধির দাবির সঙ্গে জনস্বাস্থ্য রক্ষার প্রশ্ন জড়িত। বাংলাদেশের ৪৩ (২০০৯ সালের হিসেব অনুযায়ী) শতাংশ বা ৪ কোটি ১৩ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ ধূমপান ও ধোয়াবিহীন তামাক সেবন করে। তামাকের চাহিদা কমাতে পারলে হাজার হাজার মানুষ অনেক ঘাতক রোগ থেকে রক্ষা পাবে। তামাকজাত ক্ষয়ক্ষতির হিসেব করলে দেখা যায় তা জিডিপির প্রায় ৩ শতাংশ। তামাক অসংক্রামক রোগ সৃষ্টির অন্যতম প্রধান কারণ।’

সংবাদ সম্মেলনে আয়োজক সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে বেশ কিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয়। সুপারিশগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য তামাকজাত দ্রব্যের কর কাঠামো সহজ করে একটি শক্তিশালী তামক কর নীতি প্রণয়ন করা; কার্যকর তামাক নিয়ন্ত্রণে তামাকজাত দ্রব্যকে একক কর কাঠামোর আওতায় আনা; তামাকজাত দ্রব্য উৎপাদন এবং বিপননে জড়িত সকলকে লাইসেন্সিংয়ের আওতায় আনা।

সংবাদ সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ব্যুরো অব ইকোনোমিক রিসার্চের ফোকাল পারসন অধ্যাপক ড. রুমানা হক।

এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী, তামাক বিরোধী জোটের উপদেষ্টা মোজাফফর হোসেন পল্টু, বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটির প্রকল্প পরিচালক ডা. গোলাম মহিউদ্দিন ফারুক, মাদক বিরোধী সংগঠন প্রত্যাশার সাধারণ সম্পাদক হেলাল আহমেদ, ইসপার প্রোগ্রাম ম্যানেজার নাজমুল হায়দার, এইড ফাউন্ডেশনের অ্যাভভোকেসি অফিসার আবু নাসের অনিক প্রমুখ।

এএস/এসআর/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।