শহীদ জননী জাহানারা ইমামের মৃত্যুবার্ষিকী মঙ্গলবার
শহীদ জননী জাহানারা ইমামের ২৪তম মৃত্যুবার্ষিকী ২৬ জুন। দুরারোগ্য ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ১৯৯৪ সালের এইদিনে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
মুক্তিযোদ্ধার গর্বিত জননী, বিশিষ্ট সাহিত্যিক ও সংগঠক নারীর নেতৃত্বেই গত শতকের নব্বইয়ের দশকে গড়ে উঠেছিল যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আন্দোলন। ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ব্যানারে করা সেই আন্দোলনই আজ এগিয়ে যাচ্ছে চূড়ান্ত লক্ষ্যের দিকে।
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে তার ছেলে শফি ইমাম রুমী শহীদ হন। এছাড়া তার স্বামী শরীফ ইমামও মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ইন্তেকাল করেন।
১৯৯১ সালের ২৯ ডিসেম্বর গোলাম আজমকে জামায়াতে ইসলামী তাদের দলের আমীর ঘোষণা করলে বাংলাদেশে জনবিক্ষোভের সূত্রপাত হয়। বিক্ষোভের অংশ হিসেবে জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে ১৯৯২ সালের ১৯ জানুয়ারি ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি গঠন করা হয়। তিনি হন এর আহ্বায়ক।
পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা-বিরোধী প্রতিরোধ মঞ্চ, ১৪টি ছাত্র সংগঠন, প্রধান রাজনৈতিক জোট, শ্রমিক-কৃষক-নারী এবং সাংস্কৃতিক জোটসহ ৭০টি সংগঠনের সমন্বয়ে ১১ ফেব্রুয়ারি গঠন করা হয় মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন ও একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল জাতীয় সমন্বয় কমিটি।
তার নেতৃত্বেই এই কমিটি ১৯৯২ সালের ২৬ মার্চ গণআদালতের মাধ্যমে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গোলাম আজমের ঐতিহাসিক বিচার সম্পাদন করা হয়। ১২ জন বিচারকের সমন্বয়ে গঠিত গণআদালতের চেয়ারম্যান শহীদ জননী জাহানারা ইমাম গোলাম আজমের ১০টি অপরাধ মৃত্যুদণ্ডযোগ্য বলে ঘোষণা করেন।
তার এই প্রতীকী বিচারের পরে দেশব্যাপী এই আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। তৎকালীন সরকারের বিরোধিতা জেল-জুলুম সহ্য করে তিনি এই আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন। আন্দোলন চলাকালীন তার ক্যান্সারের প্রকোপ আরও বেড়ে যায়। আমেরিকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
জাহানারা ইমাম ১৯২৯ সালে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলায় এক রক্ষণশীল বাঙালি মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।
শহীদ জননীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে প্রতিবারের মতই একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি ‘জাহানারা ইমাম স্মারক বক্তব্য’, আলোচনা সভা এবং ‘জাহানারা ইমাম স্মৃতিপদক’ প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বিকেল সাড়ে ৩ টায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সেমিনার কক্ষে আয়োজিত জাহানারা ইমাম স্মারক বক্তব্য প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন সংগঠনের উপদেষ্টা অধ্যাপক অজয় রায়। এর আগে কমিটির পক্ষ থেকে মঙ্গলবার সকাল ৮টায় মিরপুরে শহীদ জননী জাহানারা ইমামের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে দিনের কর্মসূচি শুরু হবে।
এফএইচএস/এমআরএম/পিআর