ফিরছে মানুষ প্রাণের ঢাকায়

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২:১৫ পিএম, ১৯ জুন ২০১৮

ঈদের ছুটি শেষ হয়েছে গত রোববার। গতকালই খুলেছে ব্যাংক-বিমা, অফিস-আদালত। তবে এখনও পুরোদমে কর্মব্যস্ত হয়নি রাজধানী ঢাকা।

ঈদের তিনদিনের সরকারি ছুটির সঙ্গে অনেকে আবার দুদিন ছুটি বাড়িয়ে নিয়েছেন। সেই দুদিনও শেষ হচ্ছে আজ। তাই নাড়ির টানে বাড়ি ফেরা মানুষ প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ উদযাপন শেষে ফিরতে শুরু করেছেন প্রাণের ঢাকায়। বাস, রেল ও লঞ্চ টার্মিনালগুলোতে এখন তাই রাজধানী ফেরত মানুষের উপচে পড়া ভিড়।

ঈদের চতুর্থ দিন মঙ্গলবার সকাল থেকে রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনেও দেখা মিলেছে হাজার হাজার ঢাকা ফেরত যাত্রীর। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ঢাকামুখী প্রতিটি ট্রেনই ফিরেছে যাত্রীভর্তি হয়ে। আসনধারী যাত্রীর পাশাপাশি প্রায় সমানসংখ্যক দাঁড়ানো যাত্রীও ফিরছেন এসব ট্রেনে।

রেলস্টেশনে কর্মরতরা জানান, বিলম্বে কয়েকটি ট্রেন ছেড়ে আসলেও এবার শিডিউলে বড় ধরনের কোনো বিপর্যয় হয়নি। ফলে সহজেই রাজধানীতে আসতে পারছেন মানুষ। স্বস্তি প্রকাশ করেছেন যাত্রীরা।

রাজধানীতে ফিরে আসা যাত্রীরা জানান, স্বজনদের মাঝে থাকার আনন্দ পেছনে ফেলে ঢাকায় ফেরাটা কিছুটা বিষাদের। তা সত্ত্বেও জীবন সংগ্রামের জন্য এ শহরে আসতে হয়। ফিরতে হয় আয়-রোজগার আর জীবনের নানা হিসাব-নিকাশ করার জন্য। তাই তো শত ভোগান্তির মধ্যেও ক্ষণিকের আনন্দ মিটিয়ে কর্মব্যস্ত নগরীতে ফিরে আসতে হয়।

যাত্রী ও স্টেশন সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মঙ্গলবার সকাল থেকে সারাদেশ থেকে ট্রেনে করে ঢাকায় ফিরেছেন হাজার হাজার মানুষ। ভোর ৫টা থেকে রাজধানীর এয়ারপোর্ট ও কমলাপুর রেলস্টেশনে এসে পৌঁছাতে শুরু করে নিয়মিত ট্রেন সার্ভিসগুলো। এভাবে বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত সারাদেশ থেকে আসতে থাকবে ট্রেনগুলো।

ভোর ৫টা থেকে সকাল ১১টা পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ২১টি ট্রেন ঢাকায় পৌঁছেছে। আর ঢাকা ছেড়ে গেছে ২৩টি ট্রেন।

komlapur

তবে যাত্রীদের অভিযোগ, ঢাকা ফেরার সময় টিকিট পেতে যেমন হয়রানির শিকার হতে হয়েছে, তেমনি অনেককে ট্রেনের আসন পেতেও বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে।

সিরাজগঞ্জ থেকে আসা আলমগীর হোসেন জানান, আসার সময় শিডিউল ঠিক থাকলেও টিকিট পেতে সমস্যা হয়েছে। এছাড়া অতিরিক্ত যাত্রীর চাপে ট্রেনের ভেতরে বাজে অবস্থা ছিল। অনেকে দাঁড়িয়ে এসেছেন। এ কারণে সঙ্গে থাকা ব্যাগ ও জিনিসপত্র নিয়ে আসতে খুব কষ্ট হয়েছে।

‘যত সমস্যাই হোক, জীবিকার জন্য তো ঢাকায় আসতেই হবে। তাই প্রিয়জনদের ছেড়ে বাধ্য হয়ে ঢাকায় আসা।’

কমলাপুর রেলস্টেশনের ব্যবস্থাপক সিতাংশু চক্রবর্তী জাগো নিউজকে বলেন, বাড়ি ফেরা মানুষ স্বস্তিতে ঢাকায় আসছেন। রংপুর এক্সপ্রেসসহ কয়েকটি ছাড়া ট্রেনের শিডিউলে বড় ধরনের কোনো বিপর্যয় হয়নি। যেসব ট্রেন বিলম্বে এসেছে, সেটিও যাত্রীদের কারণে। কারণ যাত্রীদের ওঠা-নামায় বেশ সময় লেগেছে। সবচেয়ে বড় কথা হলো, এবার নিরাপদে মানুষ ঢাকায় পৌঁছাতে পেরেছেন।’

টিকিট স্বল্পতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ঈদে যে সংখ্যক মানুষ বাড়ি যান ঠিক সেই সংখ্যক মানুষ আবার ঢাকায় ফেরেন। এ কারণে টিকিট ও আসন স্বল্পতা তো হবেই।

রংপুর থেকে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী আবুল বাশার জানান, আসার সময় ট্রেন দুই ঘণ্টা দেরিতে ছেড়েছে। তারপরও ট্রেনে এসেছি। কারণ গাড়িতে আসলে আরও বেশি সময় লাগতো।

তিনি বলেন, গতকালই অফিস খুলেছে। দুদিন বেশি ছুটি নিয়েছিলাম। ছুটি শেষ তাই চলে আসতে বাধ্য হলাম। কাল থেকে ফের রুটিন মেনে জীবন শুরু হবে।

এসআই/এমএআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।