সদরঘাটে যান-সংকট, অতিরিক্ত ভাড়ায় যাত্রীরা নাস্তানাবুদ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০১:১৭ পিএম, ১৯ জুন ২০১৮

প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ কাটিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কর্মস্থল রাজধানীতে ফিরতে শুরু করেছেন মানুষ। বিশেষ করে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে যাতায়াতের অন্যতম মাধ্যম লঞ্চ হওয়ায় ভোরের সূর্য ওঠার আগেই ঢাকা ফেরত যাত্রীদের উপস্থিতিতে মুখর হয়ে ওঠে সদরঘাট টার্মিনাল।

কিন্তু ভোরে সদরঘাট টার্মিনালে পা রেখেই ভোগান্তিতে পড়েন হাজারও মানুষ। কারণ নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছাতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক যানবাহন সেখানে নেই। এ সুযোগ নিয়ে সেখানে উপস্থিত রিকশা ও সিএনজি অটোরিকশা চালকরা লঞ্চযাত্রীদের কাছ থেকে কয়েকগুণ বেশি ভাড়া আদায় করেন। বাধ্য হয়ে বেশি ভাড়া দিয়েই যেতে হয় ভুক্তভোগীদের।

সংশ্লিষ্টরা জানান, আগামী তিনদিন অর্থাৎ বুধ, বৃহস্পতি ও শুক্রবার লঞ্চে সবচেয়ে বেশি রাজধানীতে প্রবেশ করবেন।

সদরঘাটে দায়িত্বপালকারী বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) কর্মকর্তারা জানান, এ টার্মিনাল থেকে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ৪৩টি রুটে লঞ্চ চলাচল করে। বেশির ভাগ লঞ্চই সকালের মধ্যে চলে আসে। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত ৬৫টি লঞ্চ বিভিন্ন গন্তব্য থেকে সদরঘাটে এসে পৌঁছেছে।

ভোলার চরমন্তাজ থেকে ঢাকা চলাচলকারী লঞ্চ কোকো-৫ এ চড়ে মঙ্গলবার ভোরে সদরঘাট নামেন ডেমরার স্টাফ কোয়ার্টারে বসবাসকারী মোকাম্মেল হোসেন। তিনি বলেন, ‘ভোর সোয়া ৫টায় লঞ্চ সদরঘাটে এসে ভেড়ে। একই সময় অনেকগুলো লঞ্চ এসে ভিড়তে দেখেছি। টার্মিনাল থেকে বের হয়েই বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। পর্যাপ্ত গাড়ির অভাব। আর যেগুলো ছিল সেগুলোর ভাড়া অনেক বেশি। সদরঘাট থেকে ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টার পর্যন্ত সর্বোচ্চ ভাড়া সাড়ে ৩০০ টাকা। কিন্তু আজ সাড়ে ৪০০ টাকা গুনতে হয়েছে।’

সরেজমিন দেখা যায়, সূর্যের আলো ফোটার আগেই সদরঘাট টার্মিনালে ভিড়তে থাকে একের পর এক যাত্রীবোঝাই লঞ্চ। খুব অল্প সময়ের মধ্যে টার্মিনাল এলাকায় হাজার হাজার ঢাকা ফেরত যাত্রীর উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। শিশুসন্তানকে নিয়ে অনেককে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতেও দেখা যায়।

যাত্রীদের তুলনায় রিকশা ও সিএনজি অটোরিকশা ছিল কম। এ সুযোগ নিয়ে ইচ্ছা মতো ভাড়া হাকাতে থাকেন চালকরা। বাধ্য হয়ে অনেককে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়েই গন্তব্যে ফিরতে দেখা যায়।

sadarghat

পটুয়াখালী থেকে লঞ্চে এসেছেন রেজাউল করিম। তিনি যাত্রাবাড়ী যাবেন। বলেন, ‘সদরঘাট থেকে যাত্রাবাড়ীর ভাড়া সর্বোচ্চ ৫০ টাকা। কিন্তু ১০০ টাকার নিচে কোনো রিকশাওয়ালাই যাবে না।’

ক্ষুব্ধ অনেকে বেশি ভাড়া না দিয়ে ব্যাগ-বস্তা নিয়ে হেঁটেই রওনা দেন। ভিক্টোরিয়া পার্ক পর্যন্ত গিয়ে বাসের ওঠার ইচ্ছা তাদের।

বিআইডব্লিউটিএ’র সদরঘাট বন্দরের যুগ্ম-পরিচালক (নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা) আলমগীর কবির দুপুরে জাগো নিউজকে বলেন, ‘লোকজন মোটামুটি ফিরতে শুরু করেছেন। সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত ৬৫টি লঞ্চ সদরঘাটে পৌঁছেছে। বেশির ভাগ লঞ্চই চলে এসেছে, লঞ্চগুলো সাধারণত সকালেই আসে। এছাড়া সারাদিন আরও ২০ থেকে ২৫টি লঞ্চ আসবে বলে আশা করছি।’

‘আগামীকাল থেকে পরবর্তী তিনদিন অর্থাৎ ২০, ২১ ও ২২ জুন সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষ লঞ্চে ফিরবেন বলে আমরা মনে করছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘সকাল বেলা একই সময়ে সব যাত্রী আসায় যানবাহনের একটা সংকট দেখা যায়। যাত্রীদের অতিরিক্ত ভাড়াও গুণতে হয়। কিন্তু এ বিষয়ে আমাদের কিছুই করণীয় নেই।’

এক মাস রোজা পালন শেষে গত শনিবার (১৬ জুন) সারাদেশে মুসলমানদের সবেচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর পালিত হয়েছে। এবার ১৫ থেকে ১৭ জুন, মোট তিনদিন ঈদের ছুটি কাটিয়েছেন সরকারি চাকুরেরা।

আরএমএম/এমএআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।