লালবাগ কেল্লায় দর্শনার্থীদের লম্বা লাইন
ঈদের তৃতীয় দিন সোমবার পুরান ঢাকার লালবাগ কেল্লায় দর্শনার্থীদের ঢল লক্ষ্য করা গেছে। এদিন দুপুরের পর অসংখ্য নারী-পুরুষ ও শিশুকে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কেটে ভেতরে প্রবেশের জন্য অপেক্ষা করতে দেখা যায়।
বছরের অন্য সময় মূল গেটের পাশেই থাকে টিকিট কাউন্টার। কিন্তু ঈদের সময় দর্শনার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় বাড়তি চাপ সামাল দিতে অদূরে বিকল্প টিকিট কাউন্টার খোলা হয়েছে।
পাঁচশ বছর আগে অর্থাৎ ১৬শ শতকে বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে মোগল সুবেদার শায়েস্তা খানের আমলে নির্মিত লালবাগ কেল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য দেখতে অনেকেই পরিবার-পরিজন নিয়ে ঘুরতে এখানে ছুটে আসেন।
মাত্র ২০ টাকা দিয়ে টিকিট কেটে ভেতরে প্রবেশ করে সবুজে ঘেরা বিশাল প্রান্তরে পরী বিবির সমাধি, দরবার হল, সুউচ্চ দুর্গ, হাম্মামখানা, পুকুর, ঝর্ণা, মসজিদ, বিভিন্ন ফুল ও ঘাসের গালিচায় হেসে-খেলে ছবি তুলে সুন্দর সময় কাটানোর সুযোগ পান দর্শনার্থীরা।
রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর বাসিন্দা মোটরপার্টস ব্যবসায়ী আহকামউল্লাহ জাগো নিউজের এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে জানান, জীবন ও জীবিকার সন্ধানে সারাক্ষণ ব্যস্ত থাকতে হয়। পরিবার-পরিজন নিয়ে সেভাবে ঘোরাফেরার সুযোগ হয় না।
‘ব্যস্ত এ নগরীতে সবাইকে নিয়ে মনোরম পরিবেশে ঘোরাফেরা যায়- এমন বিনোদন কেন্দ্রও হাতেগোনা। কম খরচে নির্বিঘ্নে লালবাগ কেল্লাতে সপরিবারে ঘুরেবেড়ানোর সুযোগ পাওয়া যায় বিধায় প্রতি বছরই এখানে আসা। তবে এবার ভিড়টা একটু বেশি মনে হচ্ছে।’
কলাবাগানের বাসিন্দা ইসহাক মিয়া স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে এখানে এসেছেন। বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত এ কর্মকর্তা বলেন, লালবাগ কেল্লার ভেতরে দরবার হল। বর্তমানে সেটি জাদুঘর হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। সেখানে মোগল আমলের ঢাল-তলোয়ার, স্বর্ণ ও রুপার মুদ্রা, কোরআন শরিফ, পাণ্ডুলিপি, মৃৎশিল্প, কার্পেট, হস্তলিপি এবং বিভিন্ন ধরনের চিত্রকর্ম দেখতে ভীষণ ভালো লাগে। কেল্লার ভেতরে উঁচু পাহাড়ের মতো জায়গায় ঘুরে বেড়াতে শিশুরা বেশি আনন্দ পায়। এ কারণে বাচ্চাদের নিয়ে এসেছি।
ঘুরেফিরে সময় কাটানোর পাশাপাশি ভোজনরসিক দর্শনার্থীদের ক্ষুধা নিবারণে লালবাগ কেল্লা ঘিরে গড়ে উঠেছে বিভিন্ন ফাস্টফুড, চাইনিজ, ইন্ডিয়ান ও পুরান ঢাকার ঐহিত্যবাহী মুখরোচক খাবারের রেস্টুরেন্ট। ঈদ ও পুজাসহ বিভিন্ন উৎসব-পার্বণে নগরবাসী লালবাগ কেল্লা ঘুরে দেখার পাশাপাশি মুখরোচক খাবার খেয়ে ‘এক ঢিলে দুই পাখি মেরে’ নির্মল আনন্দ নিয়ে বাসায় ফিরে যান।
এমইউ/এমএআর/এমএস