ঈদের পরের দিনও ট্রেনে বাড়ি ফিরছে মানুষ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৭:০৮ পিএম, ১৭ জুন ২০১৮

ঈদের পরদিনও গ্রামে ছুটছে মানুষ। পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে ট্রেনে বাড়ি ছুটছেন তারা। রোববার দুপুরে রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশন ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার পর মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর উদযাপিত হয়েছে শনিবার (১৬ জুন)। তাই ঈদের পরও গ্রামে পরিবারের সঙ্গে ঈদের বাকি আনন্দটুকু উদযাপন করতে রাজধানী ছাড়ছেন ঘরমুখো মানুষ।

অনেকে আবার ঈদের আগে ট্রেনের টিকিট না পাওয়ায় আজ গ্রামের বাড়িতে ফিরছেন। শাহরে কাজ করতে আসা কেউ কেউ ভোগান্তি এড়াতে ঈদের আগে গ্রামে যাননি। তাদের অনেকেই রোববার (১৭ জুন) ভিড় করেছেন কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে।

জানা গেছে, ভোর থেকেই ট্রেনে করে বাড়ি যাচ্ছেন যাত্রীরা। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কমলাপুর স্টেশনে ঘুরে দেখা গেছে উপচে পড়া ভিড় না থাকলেও ঘরমুখো মানুষের চাপ রয়েছে। তাদের অধিকাংশই ঈদের আগে টিকিট না পাওয়ায় রোববার গ্রামের উদ্দেশে যাত্রা করছেন ট্রেনে করে।

ঈদের আগে প্রচণ্ড ভিড়, ট্রেনের সিডিউল বিপর্যয় এবং ঢাকার যানজট সব মিলিয়ে বাড়ি যাওয়া ছিল কষ্টের। তাই মানুষের চাপ কমার পর একটু আয়েশ করে ঈদের পরের দিন মানুষ বাড়ি ফিরছে। তবে ঈদের আগে রেলযাত্রায় মানুষের প্রচণ্ড ভিড়ে ট্রেনের ভেতরে ছাদে গাদাগাদি করে মানুষ বাড়ি ফিরলেও এখন তেমন চাপ নেই। যদিও মানুষের চাপ আছে।

যাত্রীদের জন্য রোববার বেশকিছু ট্রেন রেখেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। এদিন ঢাকা থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানের উদ্দেশে ছেড়ে যাবে ৩০টি ট্রেন। এর মধ্যে ১৪টি আন্তঃনগর, নয়টি মেইল ট্রেন, ছয়টি লোকাল এবং একটি স্পেশাল ট্রেন। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কমলাপুর থেকে ২৫টির মতো ট্রেন দেশের বিভিন্ন স্থানের উদ্দেশে ছেড়ে গেছে।

অন্যদিকে টিকিট কাউন্টারগুলোতে যাত্রীদের আনাগোনা লক্ষ্যণীয়। যাত্রী ছাউনিতে অপেক্ষা করছেন তারা। দেরিতে হলেও সবার চোখেমুখে বাড়ি ফেরার আনন্দ। অপেক্ষারত যাত্রীদের মধ্যে বেশিরভাগই পরিবার নিয়ে রওনা দিয়েছেন।

স্টেশনে কথা হয় মো. ইব্রাহিমের সঙ্গে। পরিবার নিয়ে বাড়ি যাচ্ছেন তিনি। যদিও এবার তার বাড়ি যাওয়ার কথা ছিল না। কিন্তু হঠাৎ পারিবারিক কাজে ঈদের পরের দিন বাড়ি যেতে হচ্ছে তাকে।

শুধু গ্রামের বাড়িতেই নয়, অনেকে ঈদের ছুটিতে ঢাকার বাইরে ঘুরতেও যাচ্ছেন। তাদেরই একজন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাজীব। বেড়াতে যেতে বন্ধুদের জন্য অপেক্ষা করছেন তিনি। রাজীব বলেন, ‘সকাল থেকে বসে আছি, কিন্তু টিকিট নেই। বন্ধুরা এলে সিদ্ধান্ত নেবো কী করবো।’

আরিফুল আলম পেশায় চালক, পরিবারসহ রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে থাকেন। তিনি বলেন, ঈদের আগে টিকিট কাটতে এসে পাইনি, তাই আজ এসেছি। আজও দেখছি অনেক ভিড়। আমার মতো অনেকেই আজ ঢাকা ছাড়ছে।

ঈদের পরে গ্রামের বাড়িতে গিয়ে কি করবেন এর জবাবে তিনি বলেন, কোনো সময় ঢাকায় ঈদ করা হয়নি। ঢাকায় ঈদ করে ভালো লাগছে। তবে গ্রামের ঈদ আরও ভালো। সবাই সবার বাড়ি যেতে পারে, একসঙ্গে গল্প করা ও আড্ডা মারা যায়। ঈদের পরে হলেও গ্রামে গিয়ে সেই আনন্দ আজও পাবো।

আশরাফুল আলম নামের এক যাত্রী বলেন, ‘বৃহস্পতিবার টিকিট কাটছিলাম কিন্তু ভিড় আর সিডিউল বিপর্যয়ের কারণে পরিবার নিয়ে যেতে পারিনি। আজ মনে করেছিলাম আরামে যেতে পারব, সেটাও হবে না মনে হয়। কারণ আজও দেখছি ভিড় আছে! তবে আজ যত কষ্টই হোক বাড়ি ফিরবো ইনশাল্লাহ।’

বাংলাদেশ রেলওয়ের স্টেশন ম্যানেজার সিতাংশু চক্রবর্তী বলেন, ‘আজ যাত্রীদের যাতে ভোগান্তি না হয় এ জন্য পর্যাপ্ত ট্রেন রেখেছি। যারা ঈদের আগে বাড়ি ফিরতে পারেননি আশা করছি আজ তারা ভালোভাবে বাড়ি ফিরতে পারবেন। পরিবারকে সময় দিতে পারবেন।’

এফএইচ/এসএইচএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।