ঈদের প্রধান জামাতে মুসলিম বিশ্বের শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা
‘রমজানের ওই রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ’। পবিত্র রমজান মাসে শেষে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণস্থ জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে ঈদুল ফিতরে প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। নামাজ ও খুতবা শেষে দেশ, জাতি ও মুসলিম বিশ্বের শান্তি-অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি কামনা করে মোনাজাত করা হয়।
জাতীয় ঈদগাহে সকাল সাড়ে ৮টায় অনুষ্ঠিত এ জামাতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, মন্ত্রী পরিষদের সদস্যগণ, সংসদ সদস্যবৃন্দ, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিগণ, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো.সাঈদ খোকন, ঊর্ধ্বতন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সরকারি ও সামরিক বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ এবং বিভিন্ন মুসলিম দেশের কূটনীতিকরা এবং গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেন।
সুপ্রিম কোর্ট সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহে এ জামাতে ইমামতি করেন বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের জ্যেষ্ঠ পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ মিজানুর রহমান। বিকল্প ইমাম হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মিরপুর জামেয়া আরাবিয়ার মুহতামিম শায়খুল হাদিস মাওলানা সৈয়দ ওয়াহিদুয্যামান।
পবিত্র রমজান মাসে সিয়াম সাধনার পর আল্লার সন্তুষ্টি লাভের আশায় রাজধানীর ধর্মপ্রাণ লাখো মুসল্লী জাতীয় ঈদগাহ ময়দানের ভেতরে ও বাইরের খোলা রাস্তায় কদম ফোয়ারা হয়ে প্রেস ক্লাবের সামনের রাস্তায়, শিক্ষা ভবনের সামনে এবং ময়দানের ডান দিকে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সামনের রাস্তায় মুসল্লীরা জায়নামাজ বিছিয়ে ঈদের জামাতে অংশ নেন।
নামাজ শেষে দেশ, জাতি ও মুসলিম উম্মাহর শান্তি-অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। পরে মুসল্লিরা পরস্পরের সাথে কোলাকুলি করে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। মুসল্লীদের জন্য রাস্তায় খাওয়ার ও ওযুর পানির ব্যবস্থা করেছিল সিটি কর্পোরেশনের তত্ত্বাবধানে ঢাকা ওয়াসা।
ঈদের মাঠে প্রবেশ করার সময় নিরাপত্তার জন্য জায়নামাজ ছাড়া অন্য কোন জিনিস সঙ্গে নিয়ে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। চারদিকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অবস্থান ও চেক অব্যাহত ছিল। কঠোর নজরদারিতে ছিল গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যসহ সকল আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের।
পুলিশ, র্যাব গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা, ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ছিল সার্বক্ষণিক প্রস্তুত। জাতীয় ঈদগাহে ঈদের নামাজের আয়োজন করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন। সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিল ঢাকা মেট্রোপলিট্রন পুলিশ (ডিএমপি)।
ঈদ উদযাপন উপলক্ষে রাজধানী ঢাকা মহানগরীর সরকারি ও বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। মহানগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও সড়কদ্বীপ বাংলা ও আরবিতে ঈদ মোবারক খচিত ব্যানারে সজ্জিত করা হয়।
একই সঙ্গে যথাযোগ্য মর্যাদা, ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও আনন্দ-উচ্ছ্বাসের মধ্যদিয়ে রাজধানীসহ সারাদেশে উদযাপিত হচ্ছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। ঈদ উপলক্ষে আজ শনিবার দেশের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতাল, জেলখানা, শিশু সদন, শিশু পরিবার, ছোটমনি নিবাস, সামাজিক প্রতিবন্ধী কেন্দ্র, সরকারি আশ্রয় কেন্দ্র, শিশু বিকাশ কেন্দ্র, সেইফ হোম, ভবঘুরে কল্যাণ কেন্দ্র ও দুস্থ কল্যাণ কেন্দ্রে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হবে।
বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেসরকারি টেলিভিশনগুলো ঈদের আগে-পরে কয়েক দিন ধরে বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করছে। ঈদ ঘিরে জাতীয় পর্যায়ের সঙ্গে সমন্বয় রেখে স্থানীয়ভাবেও সিটি কর্পোরেশন, জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে দেশব্যাপী বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকারমে ঈদুল ফিতরের মোট পাঁচটি নামাজের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এফএইচ/আরএস/এমএস