শাজাহান বাচ্চু হত্যায় আনসার আল ইসলাম জড়িত ধারণা পুলিশের

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫:৪৩ পিএম, ১৫ জুন ২০১৮
নিহত শাজাহান বাচ্চু

মুন্সিগঞ্জে প্রকাশক ও অনলাইন একটিভিস্ট শাজাহান বাচ্চু হত্যাকাণ্ডে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলাম জড়িত বলে ধারণা করছে কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট। শুক্রবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এমন ধারণার কথা জানান সিটিটিসি’র প্রধান মনিরুল ইসলাম।

তিনি বলেন, হত্যাকাণ্ডের পর সিটিটিসি’র দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছিল। হত্যার আলামত পর্যালোচনা, প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ান ও নিহত বাচ্চুর প্রফাইল ঘেটে মনে হয়েছে এটি জঙ্গি গোষ্ঠী কর্তৃক হত্যাকাণ্ড। আনসার আল ইসলামই এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে সন্দেহ করছি।

শাজাহান বাচ্চুর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম পর্যালোচনা করে ইতিপূর্বে ব্লগার ও অনলাইন এক্টিভিস্ট হত্যার ধারাবাহিকতায়ই এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে মনে করছেন সিটিটিসি প্রধান।

ইতিপূর্বে আনসার আল ইসলামের গ্রেফতার সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্য এবং গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জড়িতদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।

গুলি করে শাজাহান বাচ্চুকে হত্যা করা হয়েছে, এ ক্ষেত্রে আনসার আল ইসলাম হামলার ধরণ পাল্টেছে কি-না জানতে চাইলে মনিরুল ইসলাম বলেন, ২০১৩ সালে মোহাম্মদপুরে রাকিব মামুন নামে এক ব্লগারকে গুলি করে হত্যার চেষ্টা করা হয়। তাদের ব্যবহৃত অস্ত্রগুলো সাধারণত মানসম্মত অস্ত্র নয়, যে কারণে লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই পরবর্তিতে হত্যাকাণ্ডে চাপাতি ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেয়।

ইতিপূর্বে গ্রেফতারদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে- চাপাতি একটি নির্ভরযোগ্য অস্ত্র এবং এটি অস্ত্র আইনের আওতায় পড়ে না। এটি বাড়িতে রাখা যায়, কাছ থেকে টার্গেটকে সরাসরি হত্যায় এটি ব্যবহার করা যায় বলে চাপাতি ব্যবহার করে সংগঠনটি।

রাজীবকে হত্যার পর আসিফ মহিউদ্দিনকে হত্যা চেষ্টা করা হয়। ওয়াশিকুর রহমান বাবু হত্যার সময় জনতার হাতে দুই হামলাকারী ধরা পড়ে।

পরবর্তিতে আনসার আল ইসলাম মনে করতে শুরু করে যে, হত্যাকাণ্ডের সময় তাদের কাছে অস্ত্র থাকলে তারা হয়তো গুলি করে পালিয়ে যেতে পারবে।

লালমাটিয়ায় প্রকাশক টুটুল হত্যাচেষ্টার সময়ও তাদেরকে অাগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করতে দেখা গেছে। তারা আগ্নেয়াস্ত্র মূলত আত্মরক্ষার জন্য বা খুব বেশি প্রয়োজন না হলে ব্যবহার করে না।

শাজাহান বাচ্চুকে হত্যার স্থানটি যেহেতু খুবই জনবহুল ছিল, চাপাতি দিয়ে খুন করে পালানো সম্ভব নয় এমন ধারণা থেকেই তাকে খুব কাছ থেকে গুলি করা হয়েছে। পরে লোকজন এগিয়ে আসার চেষ্টা করলে গ্রেনেড বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পালিয়ে যায়।

২০১৩ সাল থেকে আনসার আল ইসলাম যে টার্গেট কিলিং চালিয়ে আসছে সে ক্ষেত্রে শাজাহান বাচ্চুকে হত্যায় নতুন ট্রেন্ড মনে হয়নি। তাদের ম্যানুয়ালে যা ছিল তা-ই।

জেইউ/এসএইচএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।