ঈদযাত্রায় অতিরিক্ত ভাড়া বন্ধের দাবি
ঈদযাত্রায় অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য বন্ধ করা না গেলে ফিটনেসবিহীন যানবাহন ও পণ্যবাহী পরিবহনে নিম্ন আয়ের লোকজনের যাতায়াত ঠেকানো যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী।
সোমবার সকালে আসন্ন ঈদযাত্রায় রাজধানীসহ সারাদেশে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় মনিটরিং কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী স্বেচ্ছাসেবক ও গণপরিবহনে ভাড়া নৈরাজ্য পর্যবেক্ষণ উপ-কমিটির সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, এবারের ঈদে সব পথে প্রায় ৫ কোটি যাত্রীর ১৫ কোটি ট্রিপ স্বল্প সময়ে বহনে গণপরিবহন ব্যবস্থা অথবা রাস্তা কোনটির সক্ষমতা আমাদের নেই। এছাড়াও সারাদেশে ৩ লক্ষাধিক যানবাহন ফিটনেসবিহীন, ১০ লাখ নছিমন-করিমন, ইজিবাইক সড়ক মহাসড়কগুলোতে রয়েছে।
গণপরিবহন সংকটের কারণে ও কম ভাড়ার আশায় নিম্ন আয়ের লোকজন ফিটনেসবিহীন এসব যানবাহন, পণ্যবাহী যানবাহন, বাস ট্রেন ও লঞ্চের ছাদে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করে থাকে।
প্রতি বছরের ন্যায় এবারও বিআরটিএর মনিটরিং কমিটি গঠন করা হলেও ঈদযাত্রার যাত্রী সাধারণের বাস ও লঞ্চের টিকিট দ্বিগুণ। আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে তিনগুণ দামে কিনতে হচ্ছে।
সারাদেশের সড়ক রেল ও নৌ-পথের যাত্রীসেবা পরিস্থিতি নিয়ে স্বেচ্ছাসেবকরা সভায় বিস্তারিত তুলে ধরেন। ফলে ভাঙা সড়ক-মহাসড়ক, দীর্ঘ যানজট, নৌ-পথে অতিরিক্ত যাত্রী বহন, রেল পথের টিকিট কালোবাজারি, সড়ক ও নৌপথে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
আলোচনা করেন, সড়ক দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের সমন্বয়ক মো. সামসুদ্দীন চৌধুরী, লায়ন মাহমুদুল হাসান রাসেল, তৌহিদুল ইসলাম, স্বেচ্ছাসেবক উপ-কমিটির আহ্বায়ক আজহারুল আলম জিকু, জিয়াউল হক চৌধুরী, মিলাদ উদ্দিন মুন্না, আজিজুল হক চৌধুরী, মহিউদ্দিন আহম্মেদ, মো. শাহিন প্রমুখ।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী এক সমীক্ষা তুলে ধরে বলেন, দেশের জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে ৩৭ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্ত, অন্যদিকে নৌ-পথে ভরা বর্ষা মৌসুমের কারণে বয়া-বাতি-মার্কিং চিহ্ন অনেক পথে মুছে গেছে, এখানে চর ডুবোচর একাকার হয়ে গেছে, এমতাবস্থায় নৌ-পথে অতিরিক্ত যাত্রী বহন কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করতে হবে।
অন্যদিকে রেল পথে প্রায় ১০০ কিলোমিটার রেলপথ ক্ষতিগ্রস্ত, ৯৮টি রেলসেতু ক্ষতিগ্রস্ত রয়েছে। এসব পথগুলো ভোগান্তির নতুন মাত্রা যোগ করবে বলে আলোচনায় উঠে আসে। এছাড়াও পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ও শিমুলিয়া-কাঠালবাড়ী নৌ-রুটের ফেরি সার্ভিসসহ সার্ভিস রোড সমূহে দ্রুত গাড়ি পার্কিংয়ের উদ্যোগ না নিলে এসব পথে যাত্রী সাধারণ অবর্ণনীয় দুভোর্গে পড়বে বলে অভিযোগ করেন।
এছাড়াও সড়ক-মহাসড়কে প্রতি ইঞ্চি বেদখল মুক্ত করা, জাতীয় মহাসড়কে এখন থেকে অটোরিকশা, ব্যাটারি চালিত রিকশা, নছিমন-করিমন ও মোটরসাইকেল চলাচল নিষিদ্ধ করার দাবি জানানো হয়।
এমইউ/এমআরএম/জেআইএম