চিকিৎসকের বাসায় এত অস্ত্র!
সম্প্রতি রাজধানীর যাত্রাবাড়ি ও গাবতলী এলাকা থেকে ডা. জাহিদুল ও তার স্ত্রী মাসুমা আক্তারকে গ্রেফতার করে ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট। রিমান্ডে তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার ময়মনসিংহের বাসা থেকে ১২টি বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র এবং ১ হাজার ৬২২ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সিটিটিসি প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘ডা. জাহিদুর রহমান ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ থেকে ২০০২ সালে এমবিবিএস পাস করেছেন। এরপর ২০১৪ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একটি ডিপ্লোমা করেন তিনি। তিনি দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন ক্লিনিকে চাকরি করলেও সরকারিভাবে কোনো স্থায়ী চাকরির চেষ্টা করেননি তিনি। ছাত্রজীবন থেকেই বিভিন্ন ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র সংগ্রহের শখ ছিল তার। বিচিত্র এই সখ থেকেই পরবর্তীতে অস্ত্র বিক্রেতা ও কনট্রাক্ট কিলার হয়ে উঠেন এই ডাক্তার।’
সম্প্রতি লন্ডন থেকে একজনের সঙ্গে সিলেট অঞ্চলের এক সংসদ সদস্যকে খুনের চুক্তি হয়েছিল ডাক্তার জাহিদুরের। ছাত্রজীবনে ছাত্রদলের রাজনীতিতে জড়িত থাকলেও লন্ডনের কোন ব্যক্তির ব্যক্তির সঙ্গে কোন সাংসদকে খুনের চুক্তি হয়েছিল, সে বিষয়টি এখনও জানা যায়নি।
মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘গত ১৫ মে যাত্রাবাড়ি থেকে দুইটি পিস্তলসহ জাহিদুরকে গ্রেফতার করা হয়। দুই দফা রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সবকিছু তার ‘স্ত্রী’ জানে বলে জানায় সে। এরপর গত ৩ জুন তার স্ত্রী মাসুমা আক্তারকে গাবতলী থেকে ১টি পিস্তলসহ গ্রেফতার করা হয়। তারপর তাদেরকে মুখোমুখি রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে বিস্তারিত তথ্য বেরিয়ে আসে।
তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ৭ জুন ভোরে তাদের ময়মনসিংহের বাসা থেকে আরও ১২টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া অস্ত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে ২২ বোরের রাইফেল ৩টি, ৩০৩ রাইফেল ১টি, ০.৩২ বোর রিভালবার ৪টি, ০.২২ রিভালবার ১টি, ৭.৬৫ পিস্তল ৫টি, ০.২৫ পিস্তল ১টি এবং ১৬২২ রাউন্ড গুলি।
তিনি বলেন, ‘তার হাতের নিশানা খুবই নিখুঁত ছিল। যেহেতু কনট্রাক্ট কিলিংয়ে প্রচুর অর্থ পাওয়া যায়, সে সুবাদে জাহিদুর পর্যায়ক্রমে কন্ট্রাক্ট কিলার হয়ে উঠে এবং বেশকিছু কিলিংয়ে সে অংশ নিয়েছিল।’
তার সবগুলো অস্ত্রই বৈধ ডিলারের কাছ থেকে সংগ্রহ করা। কিছু অস্ত্র কেনার পর সে নিজে মোডিফাই করেছে। যেসব ডিলারের কাছ থেকে অস্ত্রগুলো সংগ্রহ করা হয়েছিল, তাদের নাম আমাদের কাছে এসেছে। যাচাই-বাছাই শেষে সেসব ডিলারদের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে, তাদের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
এআর/এসআর/জেআইএম