ঈদে ঢাকা-বরিশাল রুটে নতুন দুইটি বিলাসবহুল লঞ্চ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:০৪ পিএম, ০৬ জুন ২০১৮

ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে ঢাকা-বরিশাল রুটে আধুনিক প্রযুক্তিতে নির্মিত দুটি যাত্রীবাহী লঞ্চ উদ্বোধন করা হয়েছে। অ্যাডভেঞ্চার-৫ ও ৯ নামে দুটি লঞ্চ এনেছে নিজাম শিপিং লাইন্স।

বুধবার রাজধানীর সদরঘাটে লঞ্চ দুটি উদ্বোধন করেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু ও নৌমন্ত্রী শাজাহান খান।

মালিক নিজাম উদ্দিন লঞ্চ দুটির বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরে বলেন, ‘বিদেশ থেকে আমদানি করা মেরিন গ্রেডের নতুন স্টিল প্লেট দিয়ে জাহাজ দুটি তৈরি করা হয়েছে। লঞ্চ দুটিতে প্রথম শ্রেণির ড্রাইভার, মাস্টার, লস্কর ও ক্রুর মাধ্যমে পরিচালিত হবে। লঞ্চ দুটিতে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ও সিসি ক্যামেরা রয়েছে।’

barishal

তিনি বলেন, ‘অ্যাডভেঞ্চার-৯ লঞ্চে প্রথম শ্রেণির যাত্রীদের জন্য পর্যাপ্ত করিডোরের ব্যবস্থা আছে। স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট রয়েছে। এছাড়া লঞ্চটিতে আধুনিক লিফট, সুপ্রশস্ত করিডোর, ভিআইপি লাউঞ্জ, বাচ্চাদের জন্য কিডস জোন, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য চারটি অত্যাধুনিক জেনারেট, ফ্রি ওয়াইফাই জোন, খাবার হোটেল, অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে।’

‘অ্যাডভেঞ্চার-৯ লঞ্চে যাত্রীদের চাহিদা অনুযায়ী ২৫০ টাকা থেকে ৭ হাজার টাকায় ভাড়ার ব্যবস্থা আছে। জাহাজটিতে ৬টি ভিআইপি, ৪টি সেমি ভিআইপি কেবিন, ৬টি ফ্যামিলি কেবিন, ৮০টি ডাবল কেবিন, ৭৫টি সিঙ্গেল কেবিন, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ২৮টি সোফা রয়েছে।’

এই জাহাজ নির্মাণে প্রায় ২৭ মাস সময় লেগেছে, লঞ্চে ৭০ জন স্টাফ দায়িত্ব পালন করবেন বলেও জানান নিজাম উদ্দিন।

barishal

এছাড়া অ্যাডভেঞ্চার-৫ হচ্ছে ক্যাটামেরান টাইপ লঞ্চ। যাত্রীদের সুবিধার্থে ৬০০, ৯০০ ও ১২০০ টাকা মূল্যের টিকিটের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে এই লঞ্চে। অ্যাডভেঞ্চার-৫ লঞ্চে ইকনোমিক, বিজনেস ও লাক্সারি- এই তিন শ্রেণির আসন রয়েছে বলেও অনুষ্ঠানে জানানো হয়।

প্রতিটি লঞ্চ নির্মাণে ৩৫ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে বলে জানিয়েছেন নিজাম উদ্দিন।

অনুষ্ঠানে শিল্পমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা দুটি লঞ্চ উদ্বোধন করছি। ঈদের মধ্যে একটি আনন্দদায়ক অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের জন্য।’

barishal

তিনি বলেন, ‘জাহাজ রফতানির ক্ষেত্রে বিশ্বের পাঁচটি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। বাংলাদেশের জাহাজ জার্মানি, ফিনল্যান্ড, নেদারল্যান্ড, নিউজিল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশে রফতানি হচ্ছে। এর চাহিদা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে।’

‘সবদিক বিবেচনা করে প্রধানমন্ত্রী আজকে জাহাজ নির্মাণকে শিল্প হিসেবে ঘোষণা করেছে। আমরা জাহাজ শিল্প নিয়ে একটি জাহাজ শিল্পনীতি তৈরি করছি। যা অতিসত্ত্বর প্রকাশ করব।’

আমু বলেন, ‘আমরা পায়রা বন্দরের কাছে চর নিশান বাড়িয়ায় শিপ রিসাইক্লিং করার জন্য জায়গা নিয়েছি। শিপ বিল্ডিংয়ের জন্য জায়গা নিয়েছি এবং ডাকইয়ার্ড করার জন্য আলাদা জায়গা নিয়েছি।’

barishal

নৌমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে তার দৃষ্টান্ত হল আজ অত্যাধুনিক যাত্রীবাহী নৌযান নির্মাণ হচ্ছে এবং যাত্রীরা এই নৌযানে যাতায়াত করছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা সদরঘাটকে উন্নত করেছি, এছাড়া বুড়িগঙ্গার শ্মশান ঘাটের দিকে আরেকটা টার্মিনাল নির্মাণ করব।’

গত ৪ বছরে কোনো লঞ্চডুবির ঘটনা ঘটেনি জানিয়ে শাজাহান খান বলেন, ‘যাত্রী ও মালিকদের সচেতন হতে হবে। সবাই সতর্ক থাকলে আগামী ঈদে যাত্রীদের সুন্দরভাবে গন্তব্যে পৌঁছে দিতে পারব।’

লঞ্চ দুটি উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান এম মোজাম্মেল হক এফবিসিসিআই সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিনসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

আরএমএম/জেএইচ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।