শরীয়তপুরে হারবাল চিকিৎসার নামে চলছে প্রতারণা


প্রকাশিত: ০৮:৩৩ এএম, ০২ আগস্ট ২০১৫

শরীয়তপুর হারবাল চিকিৎসার নামে মরণ ফাঁদ পেতে বসেছেন এক শ্রেণির হেকিম নামধারী ব্যক্তি। তাদের খপ্পরে পড়ে প্রতারিত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। বিভিন্ন চটকদার বিজ্ঞাপন, চোখ ধাঁধানো সাজশয্যা বিশিষ্ট অফিস কক্ষ নিয়ে রোগিদের সঙ্গে হারবাল চিকিৎসার নামে প্রতারণা করে চলছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

জেলার বিভিন্ন স্থানে কলকাতা হারবাল মেডিকেয়ার লিঃ, কলিকাতা হারবাল মেডিকেল, কলিকাতা হারবাল, সিঙ্গাপুর হারবাল, হারবাল চিকিৎসা সেন্টার এমন বিভিন্ন নামে চেম্বার ও দাওয়াখানা করে চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন এ প্রতারকগণ। তাদের দেয়া চিকিৎসায় অনেকে উপকার পাওয়ার চেয়ে ক্ষতির শিকার হয়েছেন বেশি।

এ চিকিৎসা কেন্দ্রগুলোর দ্বায়িত্বে থাকা হেকিমরা কোনো এ বিষয়ে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সনদ দেখাতে পারেননি। তবুও দুইশ থেকে তিনশ টাকা ফি নিয়ে চিকিৎসাপত্র দিয়ে চলেছেন তারা। কোনো প্রকার প্রাতিষ্ঠানিক হেকিমি শিক্ষা ও ফার্মাকোপিয়া সম্পর্কে ধারণা না থাকা সত্ত্বেও তারা ওষুধ তৈরি ও চিকিৎসা দিয়ে চলেছেন।

ইতোমধ্যে ভ্রাম্যমাণ আদালত কলিকাতা হারবাল মেডিকেয়ার লিঃ এর হেকিম মো. আলম মিয়াকে হেকিমি সনদ ও কোনো প্রকার সরকারি অনুমোদন না থাকায় ১ লক্ষ টাকা জরিমানা ও ১ বছর কারাদণ্ড প্রদান করেন।

কলিকাতা হারবাল মেডিকেলের হেকিম ইলিয়াস আহম্মেদ তার কোনো শিক্ষাগত যোগ্যতার কথা জানাতে ব্যর্থ হন। কিছুদিন আগে এ চিকিৎসা অভিযান চালিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত প্রতিষ্ঠানটি বন্ধের নির্দেশ দেন এবং ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।

কলিকাতা হারবালের হেকিম মো. আবুল হোসেন জাগো নিউজকে জানান, তিনি চাঁদপুরের হাজিগঞ্জের একটি আয়ুর্বেদিক কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র। তাকে কোনো ক্লাস করতে হয় না। শুধু পরীক্ষা দিতে হয়। তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ রোগীদের চিকিৎসা করে আসছেন।

সদর উপজেলার বিনোদপুরের ভুক্তভোগী সালাম জাগো নিউজকে বলেন, আমি কলিকাতা হারবালের চিকিৎসা নিয়ে কোনো উপকার পাইনি। তারা গ্যারান্টি সহকারে ওষুধ দিয়েছিলেন।

নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক রোগি জাগো নিউজকে জানান, আসলে এগুলো চিকিৎসা নয় মরণ ফাঁদ। কারণ, আমি সাইনবোর্ড দেখে মুগ্ধ হয়ে চিকিৎসা নিয়েছিলাম। কিন্তু কোনো উপকার পাইনি। আমার সমস্যাগুলো আরো বাড়ছে।

শরীয়তপুরের ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. নির্মল চন্দ্র দাস জাগো নিউজকে বলেন, হারবাল চিকিৎসা কেন্দ্রের হেকিমগণ হারবাল চিকিৎসা সনদ না থাকা সত্ত্বেও চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে। তাদের কোনো ওষুধ উৎপাদন, বিক্রয় ও ক্লিনিক্যাল লাইসেন্স নেই। তারপরও প্রশাসনের চোখের সামনে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থার পাশাপাশি জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে।

মো. ছগির হোসেন/এমজেড/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।