শিক্ষক নিয়োগে বয়সসীমা ৩৫ করতে মন্ত্রণালয়ের সম্মতি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৩:২৩ পিএম, ০৩ জুন ২০১৮

বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগে বয়সসীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। সর্বোচ্চ ৩৫ বছর বয়সের পর কেউ আর শিক্ষক হতে পারবেন না। রোববার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভায় এমন প্রস্তাব করা হয়েছে। পরবর্তী সভায় চূড়ান্ত করা হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আদালতের নির্দেশ বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) থেকে বেসরকারি শিক্ষকদের চাকরি যোগদানের বয়সসীমা নির্ধারণ করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়। তার প্রেক্ষিতে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতের সচিব মো. সোহরাব হোসাইনের সভাপত্বিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সভা করা হয়।

সভায় এনটিআসিএ’র দেয়া প্রস্তাবনা অনুযায়ী বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে ৩৫ বছর করার পক্ষে মত দেয়া হয়েছে। পরবর্তী এক সপ্তাহের মধ্যে পরবর্তী সভার মাধ্যমে বিষয়টি চূড়ান্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

সূত্র জানায়, আদালতে মামলাজনিত কারণে গত দুই বছর ধরে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগ বন্ধ রয়েছে। ফলে যোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগে সুপারিশ করলেও তাদের নিয়োগ দেয়া যাচ্ছে না। সারাদেশে বেসরকারি স্কুল-কলেজে প্রায় ৪০ হাজার শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। ফলে দেশের প্রায় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই শিক্ষক সঙ্কট দেখা দিয়েছে।

বর্তমানে এনটিআরসিএ'র নিবন্ধিত সারাদেশে প্রায় ৬ লাখ প্রার্থী চাকরির অপেক্ষায় রয়েছেন। বিভিন্ন সময়ে শিক্ষক নিবন্ধিত প্রার্থীরা নানাভাবে বঞ্চিত হয়ে এ পর্যন্ত ২৫০টি মামলা করেন। গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর ১৬৬টি মামলার রায় দেন আদালত।

আদালতের রায়ে সাতটি নির্দেশনা দেয়া হয়। তার মধ্যে প্রধান কয়েকটি হলো- বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা নির্ধারণ করা, প্রতি বছর নিবন্ধন পরীক্ষার আয়োজন, তিন মাসের মধ্যে জাতীয়ভাবে নিবন্ধিত সব শিক্ষকের একটি মেধাতালিকা প্রণয়ন। এনটিআরসিএ কর্তৃক সুপারিশকৃত শিক্ষকদের যোগদান করতে দেয়া না হলে ৬০ দিনের মধ্যে সেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কমিটি বাতিল করা। সংশ্লিষ্ট বোর্ডের তত্ত্বাবধানে পুনরায় কমিটি গঠন করা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. জাবেদ আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, আদালতের রায়ের পর নিবন্ধিতদের চাকরিতে যোগদানের বয়সসীমা নির্ধারণের প্রস্তাব দিয়ে আমাদের কাছে চিঠি পাঠায় এনটিআরসিএ। তাদের প্রস্তাবের ভিত্তিতে আমরা সভা করেছি। সেখানে শিক্ষকদের যোগদানের বসয়সীমা ৩৫ করার সুপারিশ করা হয়েছে। এ সুপারিশে সবাই একমত হয়েছে। এমপিও নীতিমালার আলোকে নিবন্ধিত শিক্ষকদের যোগদানের বয়সসীমা ৩৫ করার সুপারিশ করা হয়েছে। আগামী সপ্তাহে চূড়ান্ত করা হবে।

তিনি বলেন, সারাদেশের সব বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক শূন্য পদে নিয়োগ দিতে পুরুষ-মহিলাদের আলাদা করে তালিকা তৈরি করতে এনটিআরসিএ’কে নির্দেশনা দেয়া হবে। শিক্ষামন্ত্রীর উপস্থিতিতে পরবর্তী সভা করা হবে। সেখানে সব বিষয় চূড়ান্ত করা হবে বলেও তিনি জানান।

এনটিআরসিএ'র সদস্য মো. হুমায়ন কবির জাগো নিউজকে বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় নির্দেশনা দেয়, তা আমরা বাস্তবায়ন করি। আমরা রুটিনমাফিক কাজ করে থাকি। গত ১১ এপ্রিল আমরা আদালতের পূর্ণাঙ্গ রায়ের কপি পেয়েছি। রায়ে যেসব নির্দেশনা দেয়া হয়েছে তা বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া শুরু করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

তিনি বলেন, শিক্ষকদের যোগদানের বয়সসীমা নির্ধারণ করা হলে নিবন্ধিত প্রার্থীদের মেধাতালিকা প্রণয়নের কাজ শুরু করা হবে। যোগদানের এই বয়সসীমা নির্ধারণ হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে মেধাতালিকা তৈরি করা হবে। এরপর এনটিআরসিএ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শূন্য পদে শিক্ষক নিয়োগের জন্য সুপারিশ করা হবে।

এমএইচএম/এমআরএম/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।