বিমানের ড্রিমলাইনার চালাবেন যে ১৪ বাংলাদেশি ক্যাপ্টেন
আকাশবীণা, হংসবলাকা, গাঙচিল ও রাজহংস। চার ড্রিমলাইনারের (বোয়িং ৭৮৭-৮ মডেলের উড়োজাহাজ) নাম। পছন্দ করে এসব নাম দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই চারটির মধ্যে চলতি বছরের আগস্ট থেকে নভেম্বরের মধ্যেই বিমানের বহরে জ্বালানি সাশ্রয়ী অত্যাধুনিক দুটি ড্রিমলাইনার যুক্ত হচ্ছে। বিশেষায়িত এই ড্রিমলাইনার আকাশ পরিবহনে মোড়ল হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। সর্বাধুনিক সুবিধার এই এয়ারক্রাফটগুলো চালাবেন দেশের শীর্ষ ১৪ জন ক্যাপ্টেন।
তারা হলেন- ক্যাপ্টেন আমিনুল, সিদ্দিক, শোয়েব চৌধুরী, তানভীর, ইমরান, সাজ্জাদ, আলেয়া, মাহবুব, নাদিম, ইসতিয়াক হোসেন, ইমামুল, ইলিয়াস, আদম ও ক্যাপ্টেন জয়নাল।
বিমানের ফ্লাইট অপারেশন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সিঙ্গাপুর বোয়িং ট্রেনিং সেন্টারে ৭ জুন প্রথম সেট এবং ৯ জুন দ্বিতীয় সেট ট্রেনিং শুরু করবেন এই পাইলটরা। ট্রেনিং চলবে টানা ২১ দিন। ১০ জন ফার্স্ট অফিসারসহ মোট ২৪ জন ককপিট ক্রু এই ট্রেনিং করবেন। প্রতি মাসে দুই সেট করে ট্রেনিং করার সুযোগ রয়েছে।
জানা গেছে, বোয়িং ৭৭৭-৩০০ ইআরে ফার্স্ট অফিসার সংকট থাকায় ১০ জন ফার্স্ট অফিসারকে বোয়িং-৭৩৭ থেকে সরাসরি বোয়িং ৭৮৭-৮ এ কনভার্সন (এক-কেন্দ্রাভিমুখতা) করা হয়েছে।
ড্রিমলাইনারগুলো বিমানবহরে যুক্ত হওয়ার পর যেন বিমানকে পাইলট সংকটে না পড়তে হয় সেজন্য ফ্লাইট অপারেশনের সবদিক-বিভাগে প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছেন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের চিফ অব ফ্লাইট সেফটি ক্যাপ্টেন শোয়েব চৌধুরী।
তিনি বলেন, বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনারটি এ বছরের আগস্টে যুক্তরাষ্ট্রের উড়োজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িংয়ের কাছ থেকে আসছে। দ্বিতীয়টি আসবে নভেম্বরে। বাকি দুটি ড্রিমলাইনার আসবে ২০১৯ সালের নভেম্বরে। এর মধ্যে আমরা পাইলটের সংকটে পড়বো এমন সম্ভাবনা দেখছি না।
বিমান সূত্র জানায়, ড্রিমলাইনার সরবরাহের প্রথম কাজ শুরু হয় ২০০৭ সালের ৮ জুলাই। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস ২০০৮ সালে চারটি ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজ কিনতে বোয়িং কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করে। চুক্তি অনুযায়ী ২০২০ সালে এই উড়োজাহাজ বিমানকে সরবরাহ করার কথা থাকলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহায়তা ও দিকনির্দেশনায় নির্ধারিত সময়ের আগেই ২০১৯ সালের মধ্যেই চারটি ড্রিমলাইনার বিমান সরবরাহ করতে সম্মত হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পরিচালক ফ্লাইট অপারেশন ফারহাত হাসান জামিল বলেন, ৭৮৭-৮ উড়োজাহাজ বহরে যোগ হলে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স নতুন প্রাণ পাবে। বাড়বে রুট এবং নেয়া হবে সুষ্ঠু বাণিজ্যিক পরিকল্পনা।
বিমানের জনসংযোগ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক শাকিল মেরাজ বলেন, বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজগুলো আনার পর বন্ধ হওয়া ঢাকা-রোম-ঢাকা রুট চালু ছাড়াও লন্ডন রুটে ফ্লাইটের সংখ্যা বাড়ানো হবে। ম্যানচেস্টার, রোম, সিডনি, মন্ট্রিয়ল, দিল্লি, হংকং ও টোকিওসহ আরও বেশকিছু নতুন রুটে যাবে বিমান।
উল্লেখ্য, বর্তমানে বিমানবহরে আছে ৫টি বোয়িং ৭৭৭-৩০০ ইআর, ১টি বোয়িং ৭৭৭-২০০ ইআর। ৪টি বোয়িং ৭৩৭ এবং দুটি ড্যাশ-৮ উড়োজাহাজ। বর্তমানে ১২টি উড়োজাহাজ দিয়ে ১৫টি আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ সাতটি আকাশপথে চলাচল করছে বিমান।
আরএম/জেডএ/বিএ