নির্বাচনী আইনে আসছে ইভিএম

সিরাজুজ্জামান
সিরাজুজ্জামান সিরাজুজ্জামান , জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২:৫১ এএম, ২৯ মে ২০১৮

নির্বাচনী আইনে ইলেকট্রিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের বিধান রেখে নির্বাচন পরিচালনা আইন (আরপিও) সংশোধন করছে ইসি। এছাড়াও প্রার্থীদের জামানত বাড়ছে। থাকছে পোলিং এজেন্টদের ইসির পরিচয়পত্র দেয়ার ব্যবস্থাও। সবমিলে ১৯টি অনুচ্ছেদে খসড়া সংশোধনী আনা হয়েছে।

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে এসব পরিবর্তন আনছে ইসি। প্রস্তাবগুলো আগামী সপ্তাহে কমিশন সভায় অনুমোদন হলে আইন মন্ত্রণালয়ে ভেটিংয়ের পর সংসদে যাবে।

ইসির একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, আরপিও’র ২৮(ক) অনুচ্ছেদের সংশোধনীতে ব্যালট বাক্সের সঙ্গে ইভিএম যুক্ত করার কথা বলা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সংলাপে বিএনপিসহ তাদের শরিক দলগুলো ইভিএম ব্যবহারে আপত্তি জানিয়েছিল।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম সোমবার সন্ধ্যায় জাগো নিউজকে বলেন, আমরা তো এ জন্য বারবার এই ইসির পদত্যাগ দাবি করছি। দিনে দিনে এটি আরও ষ্পষ্ট হচ্ছে যে এই সরকারের হুকুম পালন করছে ইসি।

সূত্র জানায়, আইন সংস্কার কমিটির প্রস্তাবে প্রচলিত ব্যালট পেপারের মাধ্যমে ভোটগ্রহণের পাশাপাশি ইভিএমে ভোটগ্রহণের বিষয়টি যুক্ত করা হয়েছে। প্রস্তাবে বলা হয়, ইভিএম সংজ্ঞায়িত করার প্রয়োজন আছে। তবে বর্তমান ইভিএম শুধু ভোট কাস্টিংয়ের জন্য ব্যবহৃত হবে না। ইভিএম আঙুলের ছাপ বা এনআইডি কার্ড নম্বর দিয়ে ভেরিফিকেশন করবে। যদি ভোটার ভেরিফিকেশনে উত্তীর্ণ না হয় তবে ভোট দিতে পারবে না। আরপিও’র বিভিন্ন অনুচ্ছেদে ইভিএম ব্যবহারের সুপারিশ এসেছে আইন সংস্কার কমিটির পক্ষ থেকে। অর্থাৎ ভোটগ্রহণের আগে ব্যালট বাক্স অথবা ইভিএম শূন্য অবস্থায় আছে কিনা তা পরীক্ষা করে দেখতে হবে।

একইসঙ্গে ২৮(গ) অনুচ্ছেদে খালি ব্যালট বাক্স ও ইভিএম সিল করে দেয়ার কথা বলা হয়েছে। ২৮(৬) অনুচ্ছেদে ইভিএমে ভোটদানের সময় বাটন গোপনে যেন পরিচালনা করা হয় সে বিষয়টি যুক্ত করা হয়েছে। ৩১(৩) অনুচ্ছেদে হাতে অমোচনীয় কালিযুক্ত কোনো ব্যক্তিকে ব্যালট সরবরাহ না করার এবং ভোটদান থেকে বিরত রাখার বিষয় যুক্ত করতে বলা হয়েছে।

৩৩(১) অনুচ্ছেদে ভোট চ্যালেঞ্জের ক্ষেত্রে ইভিএমকে বাইরে রাখার বিষয়টি যুক্ত করতে বলা হয়েছে। ৩৪(১) অনুচ্ছেদের সংশোধনীতে বলা হয়েছে, নষ্ট ব্যালটের বিষয়টি ইভিএমের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। ৩৬(৬) অনুচ্ছেদে সংশোধনীতে বলা হয়েছে, ইভিএম ভোটিংয়ের ফলাফলের নথি হচ্ছে স্টোরেজ ডাটা কার্ড।

অন্যদিকে ১২(৩) অনুচ্ছেদে অনলাইনে মনোনয়ন জমা এবং এর প্রাপ্তিস্বীকারপত্র দেয়ার বিষয়টি যুক্ত করতে সুপারিশ করেছে আইন সংস্কার কমিটি। এছাড়া ১৩(১)(এ) অনুচ্ছেদে প্রার্থীদের জামানতের পরিমাণ ২০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা করা।

২২(৩) অনুচ্ছেদে পোলিং এজেন্টকে প্রার্থীর প্রতীকসংবলিত কার্ড না দিয়ে ইসির পরিচয়পত্র দেয়া। ১২(৩) অনুচ্ছেদে অনলাইনে মনোনয়ন দাখিলের বিধান যুক্ত করাসহ মোট ১৯টি অনুচ্ছেদে পরিবর্তন আনা হচ্ছে।

১৯৭২ সালের গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ (আরপিও) যে ১৯টি অনুচ্ছেদে সংশোধন আসছে সেগুলো হলো- ৯, ১২, ১৩, ১৪, ১৫, ১৬, ১৯, ২২, ২৫, ২৬, ২৭, ২৮, ৩১, ৩২, ৩৩, ৩৪, ৩৬, ৩৭, ৪৪ অনুচ্ছেদে সংশোধন আসছে।

জানা যায়, সংসদ নির্বাচনের আগে ১০ হাজারের ওপর ইভিএম কেনার পরিকল্পনা রয়েছে ইসির। সংসদ নির্বাচন ও স্থানীয় সরকারের নির্বাচনের জন্য প্রথমিকভাবে দুই হাজার ৫৩৫ সেট ইভিএম কেনে ইসি। আরও ১৫০০ সেট কেনার জন্য প্রস্তুতি চলছে। বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি থেকে কেনা ইভিএমগুলোর প্রতিটির দাম পড়ছে গড়ে প্রায় দুই লাখ টাকা।

এইচএস/বিএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।