জেনেভা ক্যাম্পে আটকদের নির্দোষ দাবি স্বজনদের

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১০:১৮ পিএম, ২৬ মে ২০১৮

শনিবার সকাল থেকেই অভিযান চালাচ্ছে র‌্যাব। একাধিক টিমের দুই শতাধিক র‌্যাব সদস্য নিয়ে মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্পে প্রবেশ করে। ডগ স্কোয়াড নিয়ে পুরো জেনেভা ক্যাম্প সুইপিং করা হয়। মাদক ব্যবসায়ী ও মাদক সেবনের সন্দেহে আটক করা হয় ৫০০ জনকে।

র‌্যাব জানিয়েছে, ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে তথ্য প্রমাণ ও জবানবন্দির ভিত্তিতে আটকদের মধ্যে ১৫৩ জনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। বাকিদের নির্দোষ হিসেবে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। তবে আটক দেখানো ১৫৩ জনের স্বজনদের দাবি তারা নির্দোষ।

আটকের পর দুপুর থেকে আগারগাঁও র‌্যাব-২ ব্যাটালিয়ন কার্যালয়ের সামনে স্বজনরা ভিড় করেন। রাত ৯টার পরও তারা জানে না আটক করে আনা স্বজনদের কপালে কি জুটেছে।

রাত সাড়ে ৮টার দিকে র‌্যাব-২ কার্যালয়ের সামনে দেখা যায় স্বজনদের কান্না আর আহাজারি। জেনেভা ক্যাম্পের বাসিন্দা সখিনা বেগম বলেন, বোনের ছেলে জনি (২২) কাপড়ের জরির রংয়ের কাজ করে। আজ বেলা ১১টার দিকে ঘুম থেকে তুলে নিয়ে যায় র‌্যাব। কারণ হিসেবে তারা বলেছে মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। মাদকদ্রব্য না পেয়েই কি করে তারা জনিকে ধরে নিতে যেতে পারে?

সাবিনা নামে আরেক নারী বলেন, চাচাতো ভাই রিয়াজ সেলুনে ও মেরাজ কাপড়ে জরির কাজ করে। তাদেরকেও ধরে নেয়া হয়েছে সন্দেহভাজন হিসেবে। তিনি দাবি করে বলেন, তাদের কেউ মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত নন। যারা মাদক ব্যবসা করেন তারা আগাম খবর পেয়েই পালিয়েছে।

জেনেভা ক্যাম্পের সেলুনের দোকানে কাজ করে জাহাঙ্গীর আলম। তিনি বলেন, ভাতিজা বিকি (২৩) পেশায় কসাই হলেও প্রমাণ ছাড়া ধরে নিয়ে গেছে। একই অভিযোগ করেন আয়েশা (৫৫) নামে অন্ধ মা। তিনি বলেন, ছেলে আলমগীর কসাই। ওর বাবা কিছুদিন আগে মারা গেছে। সংসারে টানাপোড়েন। ওর কাজেই সংসার চলে। আজ আলমগীরকে ঘুম থেকে তুলে নিয়ে আসে র‌্যাব। এখন পর্যন্ত ওর কোনো খবর তিনি পাননি বলে জানান।

অন্যদিকে রাজিয়া বেগম বলেন, কিছুদিন আগে সেলুন ব্যবসায়ী সুরত আলীর সঙ্গে মেয়ের বাগদান হয়েছে। মেয়ের বিয়ের তোড়জোর চলছে। অথচ এমন সময়ই নয়া জামাতাকে তুলে নিলো র‌্যাব।

তিনি বলেন, র‌্যাব সুরত আলীকে তুলে নিয়ে যাবার সময় মা সরবরীকে মারধর করেছে র‌্যাব সদস্যরা। একই ধরনের অভিযোগ, শাবনাম বেগম ও আছিয়া নামে স্বজনদের।

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে র‌্যাব ১১ এর অধিনায়ক (সিও) লে. কর্নেল কামরুল হাসান জাগো নিউজকে বলেন, রাজধানীর মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্পে বিশেষ মাদক বিরোধী অভিযানে প্রাথমিকভাবে ৫শ’জনকে আটক করা হয়। এরপর তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে ১৫৩ জনকে গ্রেফতার দেখানো হয়।

তাদের মধ্যে ৭৭ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করে ভ্রাম্যমাণ আদালত। এবং অবশিষ্ট ৭৬ জনের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়। অভিযানকালে ১৩ হাজার পিস ইয়াবা ও ৩০ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

আটকদের নির্দোষ দাবি করে র‌্যাব -২ কার্যালয়ে সামনে স্বজনদের ভিড় সম্পর্কে তিনি বলেন, যারা নির্দোষ তাদের তো আদালতে ছেড়ে দিয়েছে। আর দোষীদের সাজা দেয়া হয়েছে। কিছুক্ষণ পর ভিড় করা স্বজনদের বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়ে দেয়া হবে কাদের বিরুদ্ধে মামলা ও সাজা দিয়েছে আদালত।

জেইউ/এমআরএম/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।