সাংবাদিকতা ব্যাহত করা আমাদের উদ্দেশ্য না : আইনমন্ত্রী

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:০২ পিএম, ২২ মে ২০১৮

প্রস্তাবিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কয়েকটি বিতর্কিত ধারা সম্পর্কে আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল হক বলেছেন, সাংবাদিকতা ব্যাহত করা আমাদের উদ্দেশ্য না। সাংবাদিকদের টার্গেট করে কোনো আইন করাও আমাদের উদ্দেশ্য না। সংবিধানে বাক স্বাধীনতার কথা বলা আছে। সংবিধানের উল্লেখযোগ্য দিক প্রেসের স্বাধীনতার কথাও বলা আছে। তাই সংবিধানের বিপরীতে বা সাংঘর্ষিক কোনো আইন করতেই পারি না।

মঙ্গলবার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত ডাক ও টেলিযোগযোগ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি। বৈঠকে সংসদে উত্থাপিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ২০১৮ নিয়ে আলোচনা হয়। বিতর্কিত এই আইনের ৩২ ধারা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছে। সাংবাদিক বা যে কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য কাঠামোতে বার বার অনুপ্রবেশ করলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও পাঁচ কোটি টাকা অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।

আইনে যে কোনো ধরনের ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রপাতি দিয়ে সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত বা সংবিধিবদ্ধ কোনো সংস্থার তথ্য উপাত্ত, ধারণ, প্রেরণ বা সংরক্ষণ করা বা করতে সহায়তা করাকে গুপ্তচরবৃত্তির অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। এজন্য ১৪ বছর কারাদণ্ড ও ২৫ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান রাখা হয়েছে।

এই আইনটি সংসদে উত্থাপনের পর সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়। এজন্য সাংবাদিকের সংগঠন এডিটরস কাউন্সিল, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক (বিএফইউজে) এবং বেসরকারি টেলিভিশন সংস্থার (এ্যাটকো) নেতাদের মতামত নেয়া হয়।

বৈঠক শেষে আইনমন্ত্রী বলেন, আমরা যে আইনটি করতে চাই সেটা সারাদেশের জন্য করতে চাই। কোনো গোষ্ঠী বা পেশার জন্য আইন করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়। বৈঠকে ৮টি ধারা বিশেষ করে ১৫, ২১, ২৫, ২৮, ২৯,৩১, ৩২ এবং ৪৩ নিয়ে আলাপ-আলোচনা হয়েছে। সেখানে যে কথাগুলো ওঠে আসছে তা হলো; বৈঠকে আমরা একমত হয়েছি ওই আইনের কিছু শব্দ সজ্ঞায়িত করা উচিত।

তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, প্রস্তাবিত আইনে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা উল্লেখ আছে। কিন্তু সেটা বলতে কি বুঝায়- এটি কিন্তু সাংবাদিকদের প্রস্তাবনায় পরিষ্কার উল্লেখ আছে। এ রকম ৮টি ধারা নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি এডিটরস কাউন্সিল, বিএফইউজে এবং অ্যাটকোর নেতাদের সঙ্গে। আলোচনা করে এসব ব্যাপারের জন্য সুপারিশ করব। এগুলো সজ্ঞার প্রয়োজন। যেসব শব্দ এই আইনের মধ্যে আনা বা ঢুকানোর প্রয়োজন সেগুলো আমরা করার সুপারিশ করব।

এরপর আবারও যেন এই নিয়ে আলাপ-আলোচনা হয় এটা নিয়ে ক্রিটিসিজম (সমালোচনা) না হয়, আজ সে উদ্দীপনায় আমরা আলোচনা করেছি সেটা যেন ব্যর্থ না হয় সে কারণে যখন সংসদীয় কমিটি এই আইনের চূড়ান্ত করবেন তারপর আবার এই সাংবাদিক সংগঠনগুলোর সঙ্গে বসব।

আসন্ন বাজেট অধিবেশনেই এই আইনটি পাস হবে কি-না প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, এটা আমার হাতে না। বাজেট অধিবেশন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অধিবেশন। এই অধিবেশন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছাড়া সাধারণত কোনো আইন পাস হয় না। এই অধিবেশন বাজেট নিয়ে আলোচনার জন্য। তাই আমি এ রকম কথা বলতে পারব না এটা এই অধিবেশনেই পাস হবে।

প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ৫৭ ধারা অপব্যবহার রোধে প্রধানমন্ত্রী যে নির্দেশনা দিয়েছেন পুলিশের সেল থেকে যতক্ষণ পর্যন্ত অনুমোদন পাওয়া না যাবে ততক্ষণ পর্যন্ত মামলা রজু হবে না। এটা করার পরে ৫৭ ধারায় শতকরা ৯৫ ভাগ হ্রাস পেয়েছে। এই আইনটা যখন হবে তখন নিশ্চয় ৫৭ ধারা বাতিল হবে।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সম্পাদক পরিষদের প্রতিনিধি সমকাল সম্পাদক গোলাম সারোয়ার, ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম, বেসরকারি টেলিভিশন মালিক প্রতিনিধি সালমান এফ রহমান ও মোজাম্মেল বাবু এবং বিএএফইউজের সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল ও মহাসচিব ওমর ফারুক।

এইচএস/এমআরএম/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।