কারওয়ান বাজার থেকে ফের অপরিপক্ব আম জব্দ
র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত ৪০০ মণ আম জব্দ করার ৬ দিনের ব্যবধানে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের ফলের আড়ৎ থেকে আবারও অপরিপক্ব আম জব্দ করা হয়েছে।
সোমবার (২১ মে) দুপুরে এ অভিযান পরিচালনা করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মশিউর রহমান। অভিযানকালে সোনার বাংলা বাণিজ্যালয়ের মোট ৩৫০ কেজি আম জব্দ করা হয়।
ম্যাজিস্ট্রেট মশিউর রহমান বলেন, ‘আমগুলো অপরিপক্ব ছিল, সরকার নির্ধারিত তারিখের আগেই গাছ থেকে আম পেড়ে এখানে বিক্রি করা হচ্ছিল।’
সোমবার দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে অভিযানের শুরুতেই সোনার বাংলা বাণিজ্যালয়ে যান তিনি। এ সময় প্রতি ক্যারট থেকে ২-৩টি করে আম নিয়ে নিজেই ছুরি দিয়ে মাঝখান থেকে কেটে পরীক্ষা করেন। সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান বিএসটিআইর ফিল্ড অফিসার এ এফ এম হাসিবুল হাসান।
এ সময় অনেক আম আটিসহ মাঝ বরাবর দু’ভাগ হয়ে যাওয়ায় সেগুলোকে অপরিপক্ব হিসেবে শনাক্ত করা হয় এবং জব্দের নির্দেশ দেয়া হয়। আমগুলোর ভেতরে হালকা হলুদ ও সবুজ রংয়ের আর আঁটিগুলো সম্পূর্ণ সাদা।
অপরিপক্ব আম বিক্রির অভিযোগে দোকানের ৩৫০ কেজি আম (২৫ কেজি করে ১৪ ক্যারট) জব্দ করে সেগুলো বিনষ্ট করে ভ্রাম্যমাণ আদালত। অভিযানের সময় সোনার বাংলা বাণিজ্যালয়ের মালিক কিংবা কর্মচারী কাউকে দোকানে পাওয়া যায়নি। ভ্রাম্যমাণ আদালতের সংবাদ পেয়ে অন্যান্য আড়ৎদার ও ব্যবসায়ীরাও পালিয়ে যান।
পরে জাগো নিউজের পক্ষ থেকে আড়তের মালিক হাজী মোহাম্মদ মহাবুবুল আলম বাবুলের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
আমের আড়তে অভিযান শেষে মশিউর রহমান বলেন, ‘গোডাউন থেকে উদ্ধারকৃত অধিকাংশ আম অপরিপক্ব ও এর আঁটি নরম। এগুলো সরকার নির্ধারিত সময়ের আগেই গাছ থেকে পেড়ে এনে বিক্রি করা হচ্ছে। তাই আমগুলো বিনষ্ট করা হয়েছে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।’
বিএসটিআইর প্রতিনিধি ছাড়াও অর্ধশতাধিক সশস্ত্র পুলিশ সদস্য নিয়ে অভিযানটি পরিচালনা করা হয়।
এর আগে গত ১৫ মে কারওয়ান বাজারের একই আড়ৎ থেকে আমে ক্ষতিকারক ইথোফেন হরমোন স্প্রে করার দায়ে আটজনকে বিভিন্ন মেয়াদে (সর্বনিম্ন ১ মাস ও সর্বোচ্চ ৩ মাস) কারাদণ্ড দেন র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম।
‘আম ক্যালেন্ডার’ অনুযায়ী, চলতি মাসের ২৫ মে গোপালভোগ, হিমসাগর ও ক্ষিরসাপাতি ২৮ মে বাজারে আসবে। আগামী ১ জুন লক্ষণভোগ, ৫ জুন ল্যাংড়া ও বোম্বায়, ১৫ জুন আম্রপালি, ফজলী ও সুরমা ফজলী বাজারে আসবে। মৌসুম শেষের আশ্বিনা আসবে ১ জুলাই থেকে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্যমতে, দেশে বর্তমানে আম উৎপাদন হচ্ছে প্রায় এক লাখ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আবাদ হচ্ছে বৃহত্তর রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায়। গত ৭ বছরে এ অঞ্চলে আমের উৎপাদন বেড়েছে প্রায় তিন গুণ। গত বছর এ অঞ্চলের ১৭ হাজার ৪২০ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। সেখানে উৎপাদন হয়েছে এক লাখ ৮১ হাজার ১০৭ টন।
এআর/এমএমজেড/এমএস