চট্টগ্রামের অভিজাত হোটেল-রেস্তোরাঁয় বাহারি ইফতারের পসরা
পবিত্র রমজান উপলক্ষে এবারও বন্দরনগরী চট্টগ্রামের হোটেল-রেস্তোরাঁয় সাজানো হয়েছে বাহারি ইফতারের পসরা। নগরবাসীকে ভিন্ন স্বাদের আমেজ দিতে নিত্য-নতুন আইটেম আর আকর্ষণীয় খাবারের আয়োজন থাকছে বন্দরনগরীর অভিজাত হোটেল-রেস্তোরাঁগুলোতে। গ্রাহকদের সুবিধার্থে এসব হোটেল-রেস্তোরাঁয় রাখা হয়েছে ইফতারের নানা প্যাকেজ।
নগরীর পাঁচতারকা হোটেল রেডিসন ব্লু চিটাগাং বে ভিউ, তিনতারকা মানের হোটেল দি পেনিনসুলা, হোটেল আগ্রাবাদসহ এসব তারকা মানের হোটেলের পাশাপাশি ফুটপাতের অস্থায়ী বিক্রেতাও ক্রেতার নজর কাড়তে ইফতার সামগ্রী নিয়ে বিশেষ প্যাকেজ ও ছাড়ের ব্যবস্থা রেখেছেন।
নানা আকর্ষণীয় পদের রকমারি সব ইফতারি দিয়ে এবারের আয়োজন সাজিয়েছে নগরের হোটেল ওয়েল পার্ক, এম্ব্রোসিয়া, রোদেলা বিকেল, রেড চিলি, হু চিটাগাং, সিলভার স্পুন, বোনানজা, তাবা, হ্যান্ডি, ক্যান্ডি, আফগান, মেরিডিয়ানসহ বিভিন্ন অভিজাত হোটেল-রেস্তোরাঁ।
রেডিসন ব্লু চিটাগাং বে ভিউ :
পবিত্র রমজানে বৈচিত্র্যময় বাহারি ইফতারের সম্ভার নিয়ে হাজির হচ্ছে চট্টগ্রামের একমাত্র পাঁচতারকা হোটেল রেডিসন ব্লু চিটাগাং বে ভিউ। প্রথম রমজান থেকেই শুরু হওয়া বাহারি ইফতারের এ আয়োজন চলবে পুরো রমজান মাস পর্যন্ত। নগরের ভোজনরসিকদের কাছে জনপ্রিয় রেডিসনের এক্সচেইঞ্জ রেস্টুরেন্ট বাফেট ইফতার ও ডিনার করতে পারবেন যে কেউ। জনপ্রতি ২ হাজার ৯৫০ টাকায় এ অফার উপভোগ করা যাবে। তবে নির্দিষ্ট কিছু ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে এ অফার গ্রহণ করলে থাকছে ‘বাই ওয়ান গেট ওয়ান’ অফার।
কর্পোরেট ইফতারের জন্য রেডিসনে থাকছে নানা রকম স্বাদের মুখরোচক খাবার নিয়ে ৭টি ভিন্ন ভিন্ন মেনু। জনপ্রতি মাত্র ৬৬৬ টাকা থেকে শুরু হওয়া এসব খাবার মেনু দিয়ে সর্বনিম্ন ১০০ থেকে সর্বোচ্চ এক হাজার অতিথির ইফতারের অর্ডার দেয়া যাবে। যার সঙ্গে রেডিসনের পিলারলেস অত্যাধুনিক মেজবান হল ও মোহনা বল রুম ডেকোরেশনসহ ফ্রিতে ব্যবহার করতে পারবেন আয়োজকরা।
হোটেল পেনিনসুলা :
তিনতারকা মানের হোটেল পেনিনসুলাতে রাখা হয়েছে বাহারি ইফতার আইটেম। ইফতারকে ঘিরে ঘোষণা করেছে রকমারি প্যাকেজ। ইফতার ব্যানকুইট মেনুতে রয়েছে তিন ধরনের অফার। ব্যানকুইট ইফতার মেনুর প্রি প্লেটেড ৬৯৯ টাকা, ইফতার-ডিনার (টেবিল সার্ভিস) এক হাজার ৯৯ টাকা ও ইফতার-ব্যুফে ডিনার ১ এক হাজার ৩৯৯ টাকা দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।
এছাড়াও হোটেলের ক্লাব ২১, ক্যাফে ২৪ ও জিইসি ওয়েস্ট রেস্টুরেন্টে ৪৯৯ টাকায় ‘পেনিনসুলা ইফতার সেট মেনু’ পাওয়া যাবে। ক্যাফে ২৪ এ টেক অ্যাওয়ে ইফতার শপে ১৫ পদের ইফতার আইটেমের বিশেষ ‘ইফতার বক্স’ পাওয়া যাবে ৩৮০ টাকায়। লাগুনা রেস্টুরেন্টে জনপ্রতি সাড়ে তিন হাজার টাকার ব্যুফে কুপন একটি কিনলে আরেকটি ফ্রি দেয়া হচ্ছে।
হোটেল আগ্রাবাদ :
হোটেল আগ্রাবাদের বিশেষ আয়োজনে থাকছে প্রায় ৬০ রকমের সুস্বাদু আইটেমের পাশাপাশি ব্যুফে ইফতারের আয়োজন। তবে প্রতিবারের মতো এবারও হোটেলের বিখ্যাত হালিমের চাহিদা বেশি বলে জানিয়েছে হোটেল কর্তৃপক্ষ। হোটেল আগ্রাবাদের ফুড অ্যান্ড বেভারেজ ম্যানেজার মনিরুল আলম সরকার জানান, বিশেষ আইটেমের মধ্যে রয়েছে জিরা পানি, দই জিরা পানি, জুস, হালিম, আখনি, ল্যাম্ব শর্মা, চিকেন শর্মা, বিফ মেজবানি কারিসহ প্রায় ৪৫ ধরনের আইটেম। এছাড়া ইফতার পার্টির জন্য কোন হল ভাড়া রাখা হবে না।
হোটেল মেরিডিয়ান :
রকমারি ইফতার আয়োজনে পিছিয়ে নেই জিইসি মোড়ের মেরিডিয়ানও। স্পেশাল ও বিশেষ আইটেমের সমন্বয়ে এবারের রমজানে নানা খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে এখানে। থাকছে বিশেষ মাটন ও চিকেন হালিম, হায়দ্রাবাদি বিরিয়ানি, ফিরনি, বিশেষ জিলাপি, দইবড়া, সমুচা, বিভিন্ন ফলের জুসসহ মেরিডিয়ানের নিজস্ব আম্রপালি আমের জুস।
রয়েল সুইটস :
ঘিয়ে ভাজা ব্যতিক্রমী আইটেমে নগরবাসীকে সব সময় কাছে টেনেছে বাটালি রোডের রয়েল সুইটস। তবে, সব মেনু ছাড়িয়ে প্রতিবারই রোজায় এখানে চাহিদা বেড়ে যায় রয়েল জিলাপির। ইফতারির অন্যান্য মেনুর মধ্যে রয়েছে রোল, অনথন, সমুচা, ফালুদা, ফিরনিসহ বিভিন্ন মিষ্টান্ন।
এছাড়া প্রথম রোজা থেকেই জমজমাট হয়ে উঠেছে ফুটপাতের ইফতারি বাজারও। ফুটপাথের দোকানগুলোতে প্রতি কেজি ছোলা বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৮০ টাকা। জিলাপি ১৮০ টাকা থেকে ২০০ টাকায়। চিকেন ও মাটন হালিম বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৪৫০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা দরে। সবজি রোল প্রতি পিস ১৫-২০ টাকা, মুড়ি প্রতি কেজি ৮০ টাকা, পিয়াজু ৫ টাকা, বেগুনি ৫ টাকা দরে বিক্রি হয়। এছাড়া খেজুর মান ভেদে বিক্রি হয় কেজি প্রতি ২৫০-৩৫০ টাকা পর্যন্ত।
এমবিআর/জেআইএম