রোজার মাসে সড়কে দাঁড়াবো না

সায়েম সাবু
সায়েম সাবু সায়েম সাবু , জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১১:০৪ পিএম, ১৮ মে ২০১৮

 

পবিত্র রমজান মাসে রাস্তায় দাঁড়াবে না যৌনকর্মী ইতি। রমজানের পবিত্রতা রক্ষায় এবং রোজাদার মানুষের প্রতি সম্মান জানাতেই এক মাস যৌনপেশায় লিপ্ত হবেন না বলে জানান। ইতিও রোজা রাখবেন।

বলেন, ‘সবার আগে আমি একজন মানুষ। আমারও সমাজ আছে। ধর্ম আছে। পেটের দায়ে এ পেশায় আসতে বাধ্য হয়েছি, তাই বলে তো সব-ই বিসর্জন দিতে পারি না। চক্ষুলজ্জা বলতেও তো কিছু একটা আছে।’

নিশিকন্যা ইতি। আট বছর হয় যৌনপেশায় আসা। বাড়ি লক্ষ্মীপুরে। খদ্দেরের আশায় বসে থাকা ইতি জীবনকথা শোনাতে ইতস্তবোধ করলেন। তিন মাস আগে এক রিকশা চালককে বিয়ে করেছেন ইতি। রিকশা চালকের আগের বউয়ের দুই সন্তান ঘরে। থাকেন মিরপুরেই। খদ্দের হিসেবে এসে খানিক প্রেম রিকশা চালকের সঙ্গে। এরপর বিয়ে। তবে বিয়ে হলেও আদি পেশা থেকে নিস্তার পায়নি এ তরুণী। বিয়ের পর পরিবর্তন শুধু টাকার হিসাব-নিকাশে। শরীর খাটানো টাকা আগে নিজে গুণতেন, এখন স্বামী গণনা করেন। রিকশা চালক স্বামীই এখন সড়কে নামিয়ে দিয়ে যান। ভোর রাতে স্বামীই আবার নিয়ে যান।

jagonews24

বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে রাজধানীর পুরাতন বিমানবন্দরের পশ্চিম দেয়াল ঘেঁষে খদ্দেরের অপেক্ষায় ইতি। খানিক জঙ্গল ঘেঁষে এই জায়গাও গতর খাটেন আরও কয়েক যৌনকর্মী। রিকশা চালক, ভ্যান চালক, শ্রমিক গোছের ভাসমান মানুষেরাই এদের খদ্দের।

রাতের এবেলায় জঙ্গলে ইতি একাই আজ। বসে থাকলেও মশার কামড়ে ছটফট করছেন। মোবাইলের লাইট জ্বালিয়ে হাতে-পায়ের মশা মারার চেষ্টা করছেন অবিরত। বাম হাতে সিগারেট। অন্য নেশাও করেছেন খানিক আগে, তার ঘোর তখনও রয়ে গেছে। সড়কের ওপর প্রান্তে কয়েক জন রিকশা চালকের কেউ বসে, কেউ দাঁড়িয়ে। আছেন পথচারিও। অপেক্ষা গভীর রাতের। ঠিক যেন শকুনের চাহনি। কখন মরবে পশু, তবেই হামলে পড়া।

গল্পের ছলে খানিক কথা। বলেন, রোজার এক মাস আর সড়কে দাঁড়াবো না। প্রয়োজনে ধার করে চলব। নিজেও রোজা রাখি। একদিন তো মরতে অইব।

এএসএস/এমআরএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।