দুর্বল হয়ে পড়েছে ঘূর্ণিঝড় কোমেন
উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় কোমেন উত্তর দিকে সরে গিয়ে বৃহস্পতিবার রাত ১টার দিকে কিছুটা দুর্বল হয়ে সন্দ্বীপের কাছ দিয়ে চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করেছে। ঘূর্ণিঝড়টি উপকূল অতিক্রম করার পর আরো পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে বৃষ্টি ঝরিয়ে ক্রমান্বয়ে দুর্বল হয়ে পড়েছে বলে আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৭০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটে সাগর বিক্ষুব্ধ রয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত ৯টা পর থেকে উপকূল অতিক্রম করতে শুরু করে ঘূর্ণিঝড়টি।
ঘূর্ণিঝড় কোমেনের প্রভাবে গাছচাপা পড়ে চার জেলায় চারজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে, ভেঙে পড়েছে বহু গাছপালা। চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরে সাত নম্বর বিপদ সংকেত বহাল রয়েছে। মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরে রয়েছে ৫ নম্বর বিপদ সংকেত।
কক্সবাজার বিমানবন্দরে বিমান ওঠানামা সাময়িক বন্ধ রাখা হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরেও পণ্য খালাস সীমিত রাখা হয়েছে। বন্দরে তিন নম্বর এলার্ট জারি করা হয়েছে। অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচলও পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখা হয়েছে। সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলার এবং সমুদ্রগামী জাহাজগুলোকে বলা হয়েছে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে।
ঘূর্ণিঝড়টি বৃহস্পতিবার সকাল ৬টার দিকে কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৮০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছিল। কক্সবাজার আবহাওয়া অধিদফতর থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে। কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ একেএম নাজমুল হক বৃহস্পতিবার সকালে জাগো নিউজকে জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড় ‘কোমেন’ এর একটা অংশ বুধবার গভীর রাতে টেকনাফ ও সেন্টমার্টিন উপকূলে আঘাত হানে।
তিনি বলেন, কক্সবাজারে ৭নং বিপদ সংকেত বহাল রয়েছে। মাছ ধরার সকল নৌযানকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদে চলে যেতে বলা হয়েছে। এদিকে, বুধবার রাত ১১টার দিকে কক্সবাজারের উপকূলীয় এলাকায় জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে মাইকিং করা হয়। এর পরপরই উপকূলের লোকজন ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রে চলে যান। তবে আশ্রয়কেন্দ্র থেকে বৃহস্পতিবার সকালে অনেকে বাড়ি ফিরেছেন।
কক্সবাজার সৈকত ঘুরে দেখা গেছে, বঙ্গোপসাগর উত্তাল রয়েছে। জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেয়ে উপকূলীয় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে কক্সবাজার শহরের বাঁকখালী নদী ও এর পাশের এলাকাগুলোতে জোয়ারের পানি প্রবেশ শুরু করে। এলাকাবাসীর চোখে মুখে লক্ষ্য করা গেছে আতঙ্ক। তবে এ মুহূর্তে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের আকাশে গুমোট অবস্থা বিরাজ করছে। কিছুক্ষণ পরপর দমকা হাওয়া বয়ে যাচ্ছে। সঙ্গে চলছে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি।
কক্সবাজারের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক ড. অনুপম সাহা জাগো নিউজকে জানান, স্কুল-কলেজ বন্ধ ঘোষণা করে সেখানে আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় জেলা প্রশাসন সর্বাত্মক প্রস্তুত রয়েছে।
##ঘূর্ণিঝড় ‘কোমেন’ এর সব খবর এখানে
বিএ