পাথর ছোড়ায় বছরে রেলের ক্ষতি পৌনে ২ কোটি টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৬:১৮ পিএম, ১৭ মে ২০১৮

চলন্ত রেলে পাথর ছুড়ে মারায় বছরে ক্ষতি পৌনে দুই কোটি টাকা। রেল সচিব মো. মোফাজ্জেল হোসেন এ তথ্য জানিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর রেল ভবনে চলন্ত রেলে পাথর নিক্ষেপ বন্ধে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় সচিব এ তথ্য জানান। এ সময় রেলের কর্মকর্তা, পুলিশ ও গণমাধ্যম কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

সচিব বলেন, বছরে গড়ে ১৫০টি পাথর নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। পাথর নিক্ষেপে দরজা-জানালার কাচ ভাঙার দুই হাজার ঘটনা ঘটেছে। গুরুত্বপূর্ণ এলাকা হিসেবে রেলের পূর্বাঞ্চলের ৩৬ ও পশ্চিমাঞ্চলের ২৯ স্পটে পাথর নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে।

তিনি বলেন, পাথরের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত রেলের নির্মাণ খরচ বছরে প্রায় পৌনে দুই কোটি টাকা। গত বছর ১৪ জন রেলকর্মী পাথর নিক্ষেপের ঘটনায় আহত হয়েছেন।

রেল সচিব জানান, গত ৩০ এপ্রিল খুলনাগামী কমিউটার ট্রেনে টিকিট চেক করার সময় নিক্ষেপ করা পাথরে গুরুতর আহত হন ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই) বায়েজিদ শিকদার। তিনি এখন রাজধানীর একটি হাসপাতালে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার অবস্থা সংকটাপন্ন। এর আগে সীতাকুণ্ডে পাথরের আঘাতে প্রীতিদাস নামে একজন প্রকৌশলী মারা যান।

এছাড়া পাথর ছোড়ার কারণে ট্রেন চালক শাহাদাত হোসেনসহ আরও অনেকে আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে বলে জানান তিনি।

সচিব বলেন, এ বিষয়ে মানুষকে সচেতন করতে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। অনেকে ছেলেপেলে শুধু কৌতুহল বশত: পাথর ছুঁড়ে থাকে।

rail

রেলওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মোহাম্মদ আবুল কাশেম বলেন, চলন্ত ট্রেনে পাথর ছুড়ে মারলে ট্রেনের ক্ষতির পাশাপাশি কর্মরত বা ভ্রমণকারীরা হতাহত হতে পারেন। এটা খুবই উদ্বেগের বিষয়। আমাদের জন্য সবসময় এটা চ্যালেঞ্জ।

তিনি বলেন, চলন্ত রেলে পাথর ছোড়ার ঘটনা ভারতীয় উপমহাদেশে সবচেয়ে বেশি। ভারতেও প্রতি মাসে এ ধরনের ঘটনা ঘটে।

‘লোকাল বা মেইল ট্রেনে লোকবল কম বা অন্যান্য কারণে আমাদের নিরাপত্তা নেই। সব স্টেশনে পুলিশ নেই। আমাদের কিছু সীমাবদ্ধতা আছে।’

বায়েজিদ শিকদাদের ঘটনায় মামলা হয়েছে, আসামি ধরা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

পাথর নিক্ষেপের ঘটনায় সচেতনতা তৈরিতে ফিচার তৈরি করে মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে প্রচার করতে হবে জানিয়ে আবুল কাশেম বলেন, সচেতনতা কর্মসূচি আরও জোরদার করতে হবে। শাস্তির পরিমাণও বাড়ানো যেতে পারে।

সভায় জানানো হয়, পাথর ছোড়া প্রতিরোধে ব্যবস্থা নিতে গত ৩১ ডিসেম্বর ১২ জেলা প্রশাসককে রেল মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি দেয়া হয়েছে। গত ২৯ জানুয়ারি ১৭ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ অন্তর্ভুক্ত করে চলন্ত ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ রোধে ভূমিকা নিতে চিঠি পাঠানো হয়।

এ বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টিতে ইমামদের ভূমিকা রাখার নির্দেশনা দিতে ধর্ম মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে। রেলে পাথর নিক্ষেপ রোধে জনগণকে সচেতন করতে গত ৯ মে রেল সচিব ১৪ ডিসিকে ডিও পত্র দিয়েছেন বলে সভায় জানানো হয়।

আরএমএম/এআর/এএইচ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।