যে ভোট চুরিতে এক্সপার্ট তাকে বলে গণতন্ত্রের মা : প্রধানমন্ত্রী

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৯:২৮ পিএম, ১৫ মে ২০১৮

বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যে ভোট চুরিতে এক্সপার্ট, মানুষ খুনে এক্সপার্ট, দুর্নীতিতে এক্সপার্ট, কালো টাকা সাদা করে, এতিমের অর্থ আত্মসাৎ করে, সে আবার গণতন্ত্রের মা হয়? তাকে বলে গণতন্ত্রের মা। এটা দেশের মানুষকে নিয়ে তামাশা করা ছাড়া কিছু নয়।

৯৬ সালের নির্বাচনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ওটা গণতন্ত্র হলো কীভাবে? ৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ভোট চুরি করে ক্ষমতায় থেকে খুব বড়াই করেছিল, তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হলো। কিন্তু আন্দোলন-সংগ্রাম করেছে জনগণ, তারা তাদের ভোট চুরি মেনে নেয়নি, যার ফলে তাকে পদত্যাগ করতে হয়েছিল।’

মঙ্গলবার গণভবনে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় হতাহতদের পরিবারের মধ্যে চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

jagonews24

তাদের অপকর্মের তো শেষ নেই

বিএনপির সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, ক্ষমতায় থাকাকালে বিএনপি যে অপকর্ম করেছে, তাদের অপকর্মের তো শেষ নেই। ব্যাংকের টাকা-পয়সা লুটপাট করে খেয়ে চলে গেছে। সব বিদেশে পাচার করেছে। সেই পাচার করা টাকা ধরা পড়েছে আমেরিকায়, সিঙ্গাপুরে। কিছু টাকা আমরা ফেরত এনেছি। পাচার করা টাকা ধরা পড়ল বিদেশিদেরই কাছে। এ জন্য আমাদের দোষ দিয়ে লাভ নেই।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়ার কাজ তো ছিল, খুন-খারাবি। আওয়ামী লীগের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়। মেয়র নির্বাচনের পর ৬ জনকে হত্যা করল। জিয়াউর রহমান আসার পর থেকে আওয়ামী লীগের ওপর নির্যাতন শুরু হয়। খালেদা জিয়াও একই কাজ করেছে। ঘরে থাকতে পারেনি কেউ। মেয়েদের ওপর যে অত্যাচার করেছে, একদিকে পুলিশ আরেকদিকে বিএনপির ক্যাডাররা, রাস্তায় ফেলে যে অত্যাচার করেছে, আমরা তো তা ভুলতে পারি না।

এতিমের টাকা আত্মসাতের মামলায় খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের কারাদণ্ডের প্রতি ইঙ্গিত করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিচার একটা হয়ে গেছে। কোরআন শরিফে বলা আছে, ‘এতিমের অর্থ আত্মসাৎ করা অন্যায়।’ তার শাস্তি তিনি পাচ্ছেন।

তিনি বলেন, আমরা উন্নত হয়েছি, আজ স্যাটেলাইট পাঠিয়ে বাংলাদেশকে অন্য মর্যাদায় নিয়ে গেছি। মাত্র ৯ বছরে বাংলাদেশের যে অর্থনৈতিক উন্নতি করেছি, আর কেউ তো তা পারেনি। জনগণ নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আমাদের ক্ষমতায় এনেছে বলেই তো আমরা করতে পেরেছি।

তাদের হৃদয়ে পেয়ারে পাকিস্তান

jagonews24

বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি অারও বলেন, ওরা করবে কেন? ওরা রাজাকার-আলবদর-যুদ্ধাপরাধীদের মন্ত্রী বানিয়েছে। জাতির পিতার খুনিকে ভোট চুরি করে এমপি বানিয়েছে। তাদের কাজই খুনি, দুর্নীতিবাজ, সন্ত্রাসী, জঙ্গিবাদ নিয়ে। এরা তো দেশের কল্যাণ চায় না। তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না। তাদের হৃদয়ে পেয়ারে পাকিস্তান।

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসার পর সেনাবাহিনীতে হাজার হাজার মুক্তিযোদ্ধা অফিসার ও সৈনিককে হত্যা করা হয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেনানিবাসের আকাশ-বাতাস তখন ভারী হয়ে ছিল বিধবাদের কান্নায়।

আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, মানুষ এখন স্বস্তিতে, শান্তিতে আছে। দু’বেলা খাবার পাচ্ছে। মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছি। আওয়ামী লীগ ও দেশের জনগণের মধ্যেই হারানো মা-বাবা-ভাইয়ের স্নেহ পেয়েছি বলে আমার একটাই লক্ষ্য দেশের মানুষের জীবনমান উন্নত করা।

তিনি বলেন, ২১অাগস্ট তারা যে হত্যাকাণ্ড চালিয়েছিল তা কখনই ভোলার নয়। আল্লাহর অশেষ কৃপায় বেঁচে অাছি। আজীবন হতাহতদের পরিবারগুলোর পাশে থাকারও প্রতিশ্রুতি দেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, মানুষের কল্যাণে রাজনীতি করে অাওয়ামী লীগ। মানুষ যেন ভালো থাকে, মানুষ যেন দুমুঠো খেয়ে-পরে ভালোভাবে বাঁচতে পারে সে লক্ষ্য নিয়েই অামরা রাজনীতি করি। এ ছাড়া অামাদের অারেকটি লক্ষ্য, সেটা হলো- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা।

এফএইচএস/জেডএ/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।