বান্দার যে স্বীকৃতি আল্লাহ গ্রহণ করেছিলেন!


প্রকাশিত: ০৯:৪৭ এএম, ৩০ জুলাই ২০১৫

আল্লাহকে জানা, তার একত্ববাদের ঘোষণা ও অস্তিত্বের স্বীকৃতি প্রসঙ্গে কুরআনুল কারিমের প্রতিটি পরতে পরতে ঘোষিত হয়েছে অসংখ্য আয়াত। আর তাওহিদের বাস্তবায়নই ছিল রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নবুয়তি মিশন। নবুয়তি মিশন পরিচালনায় আল্লাহ যে ওহি  পাঠিয়েছে, তা সবিস্তারে আলোচনা করেছেন সাহাবায়ে কেরাম রাদিয়াল্লাহু আনহুম আজমাঈনদের নিকট। যার ফলশ্রুতিতে পেয়েছি আমরা হাদিসের বিশাল সংগ্রহ। যা মানুষকে আল্লাহ-রাসূল-দ্বীন সম্পর্কে জানতে যথেষ্ট সহায়ক ভূমিকা পালন করে আসছে। হাদিসের বিশাল সংগ্রহশালা থেকে  জাগো নিউজের পাঠকদের জন্য ধারাবাহিকভাবে তুলে ধরা হবে। আজকে আল্লাহ তাআলা কর্তৃক তাওহিদ বা একত্ববাদের স্বীকৃতি গ্রহণ সম্পর্কিত একটি হাদিস তুলে ধরা হল-

হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, আল্লাহ তাআলা না`মান অর্থাৎ আরাফাত নামক স্থানে আদম আলাইহিস সালামের নিকট থেকে (তথা সমগ্র বনি আদমের নিকট থেকে) একটি বিশেষ প্রতিশ্রুতি গ্রহণ করেন। (প্রতিশ্রুতি গ্রহণের পদ্ধতিটি ছিল এইরূপ) আল্লাহ তাআলা হজরত আদম আলাইহিস সালামের পৃষ্ঠদেশ থেকে তাঁর প্রতিটি সন্তানকে (অর্থাৎ তাদের রূহকে) বের করে নিয়ে আসেন এবং তাঁর সম্মুখে লাল পিপীলিকার ন্যায় ছড়িয়ে দেন। অতপর তাদের মুখোমুখি হয়ে সরাসরি কথা বলেন, ‘আলাসতুবি রাব্বিকুম থেকে শুরু করে শেষ পর্যন্ত।’ অর্থাৎ ‘আমি কি তোমাদের রব নই? তারা (রূহ) বলল, অবশ্যই। আমরা সাক্ষী রইলাম। এ স্বীকৃতি গ্রহণ এ জন্য যে, তোমরা যেন কিয়ামতের দিন বলতে না পার, আমরা এ বিষয়ে গাফিল ছিলাম কিংবা তোমরা যেন না বল, আমাদের পূর্বপুরুষগণই শিরক করেছে আর আমরা তাদের পরবর্তী বংশধর, তবে কি পথভ্রষ্টদের কৃতকর্মের জন্য তুমি আমাদেরকে ধংস করবে? (-মুসনাদে আহমদ- কিতাবুত তাওহিদ : হাদিস নং -১, নাসাঈ, হামেক)

স্মরণ রাখতে সর্বক্ষণ-

ক. আমরা আল্লাহ তাআলার নিকট রবের  স্বীকৃতি দিয়ে আসছি, সুতরাং আমাদেরকে আল্লাহর হুকম পালনে কোনো ছাড় নেই। যথাযথ নিয়মে আল্লাহর দ্বীন পালন করতে হবে।

খ. আল্লাহ তাআলা দৈনিক অসংখ্যবার এই রব শব্দটি বান্দাকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে থাকেন- নামাজে সূরা ফাতিহায়, রুকুর তাসবিহ, রুকুতে থেকে ওঠার সময়, সিজদার তাসবিহ, এই স্থানগুলোতে মানুষের রব শব্দের ব্যবহার তাকে রবের স্বীকৃতি গ্রহণের বিষয়টিই স্মরণ করিয়ে দিয়ে থাকে।

গ. আল্লাহ বান্দাকে মৃত্যুর পরও আখিরাতের প্রথম মঞ্জিল কবরে সেই একই শব্দের দ্বারা জিজ্ঞাসাবাদ করবেন। মান রাব্বুকা? তোমার রব কে? সুতরাং মানুষ যে আল্লাহকে রব মানার স্বীকৃতি দিয়ে আসছে, সে স্বীকৃতি পালনে মানুষকে সচেষ্ট হতে হবে। দুনিয়ার প্রতিটি কাজ-কর্মে আখিরাতের কল্যাণের প্রতি আরও যত্নবান হতে হবে। পৃথিবীতে একত্ববাদের প্রতিষ্ঠায় মানুষ নিজেকে আত্মনিয়োগ করবে। এটাই হোক হাদিসের শিক্ষা। আল্লাহ মানব জাতীকে তাওহিদের তথা একত্ববাদের ওপর প্রতিষ্ঠিত থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।

জাগো নিউজ ২৪ ডটকমের সঙ্গে থাকুন। সুন্দর সুন্দর ইসলামী আলোচনা পড়ুন। কুরআন-হাদিস মোতাবেক আমলি জিন্দেগি যাপন করে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করুন। আমিন, ছুম্মা আমিন।

এমএমএস/এমআরআই

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।