শুভ জন্মদিন ববিতা


প্রকাশিত: ০৮:৩৬ এএম, ৩০ জুলাই ২০১৫

বাংলা চলচ্চিত্রের জীবন্ত কিংবদন্তি অভিনেত্রী ববিতা (ফরিদা আক্তার পপি)। ৩০ জুলাই, বৃহস্পতিবার তার জন্মদিন। এবছরে তিনি ৬২ বছরে পা রাখলেন। তবে জন্মদিনে প্রিয় নায়িকাকে কাছে না পাচ্ছেন না ভক্ত-অনুরাগীরা।

ববিতার পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, একমাত্র ছেলে অনিকের সঙ্গে এবারের জন্মদিন উদযাপন উপলক্ষে অনেক আগেই ঢাকা ছেড়েছেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন নায়িকা ববিতা। নিজের এবারের জন্মদিনটি বিশেষভাবে একমাত্র ছেলে অনিকের সঙ্গে কানাডার টরেন্টোতে উদযাপন করতে চান তিনি।

কাছে না পেলেও জন্মদিনে ববিতাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তার বড় বোন কোহিনূর আক্তার সুচন্দা ও ছোট বোন চম্পাসহ তার অন্য ভাইরাও। বিভিন্ন টিভি চ্যানেল ও রেডিও’র পক্ষ থেকেও শুভেচ্ছা জানানো হয়েছে ববিতাকে।

ববিতা রোজা ঈদের আগেই কানাডার টরন্টোতে যান ছেলে অনিকের সঙ্গেই ঈদ ও জন্মদিন পালন করতে। অনিক ওয়াটার ল্যু ইউনিভার্সিটি থেকে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এ অনার্স শেষ করেছেন। গত ১৫ জুন  বিশ্ববিদ্যালয়ে ছেলে অনিকের সমাবর্তন অংশ নেয়ার জন্য কানাডায় পৌঁছান ববিতা। এছাড়াও ডিসিআইয়ের এক সম্মেলনে শুভেচ্ছা দূত হিসেবে অংশ নেন তিনি।  
জানা গেছে, আগস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহে দেশে ফিরবেন তিনি।

প্রসঙ্গত, ববিতার পুরো নাম ফরিদা আক্তার পপি ১৯৫৩ সালের ৩০ জুলাই বাংলাদেশের বাগেরহাট জেলায় জন্ম নেন। তার বাবা নিজামুদ্দীন আতাউব একজন সরকারি কর্মকর্তা ছিলেন এবং মাতা বি. জে. আরা ছিলেন একজন চিকিৎসক।

বাবার চাকরি সূত্রে তারা তখন বাগেরহাটে থাকতেন। তবে তার পৈতৃক বাড়ি যশোর জেলায়। শৈশব এবং কৈশরের প্রথমার্ধ কেটেছে যশোর শহরের সার্কিট হাউজের সামনে রাবেয়া মঞ্জিলে।

তিন বোন ও তিন ভাইয়ের মধ্যে বড়বোন সুচন্দা চলচ্চিত্র অভিনেত্রী, বড়ভাই শহীদুল ইসলাম ইলেট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার, মেজভাই ইকবাল ইসলাম বৈমানিক, ছোটবোন গুলশান আখতার চম্পা চলচ্চিত্র অভিনেত্রী এবং ছোটভাই ফেরদৌস ইসলাম বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের বাসিন্দা।

দীর্ঘ ক্যারিয়ারে দুই শতাধিক ছবিতে অভিনয় করেছেন ববিতা। চলচ্চিত্রে তাঁর শুরুটা হয়েছিল গত শতকের ষাটের দশকের শেষ দিকে। ষষ্ঠ শ্রেণীর শিক্ষার্থী পপি (ববিতার ডাক নাম) সংসার ছবিতে রাজ্জাক ও সুচন্দার মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করেন। ছবির নির্মাতা ছিলেন জহির রায়হান। ছবিটি মুক্তি পায়নি। জহির রায়হান ববিতাকে নিয়ে জ্বলতে সুরুজ কা নিচে নামে একটি উর্দু ছবির কাজ শুরু করেন। মাঝপথে থেমে যায় ছবিটির কাজ। এরপর জহির রায়হান রাজ্জাক ও ববিতাকে নিয়ে তৈরি করেন চলচ্চিত্র শেষ পর্যন্ত। আর এটিই ছিল ববিতার প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র।

তিনি সত্যজিৎ রায়ের ‘অশনি সংকেত’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র অঙ্গনে প্রশংসিত হন। তিনি পরপর তিন বছর একটানা জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জেতেন।  ‘অশনি সংকেত’ চলচ্চিত্র ‘অনঙ্গ বউ’ চরিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি বেঙ্গল ফ্লিম জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সর্বভারতীয় শ্রেষ্ঠ নায়িকার পুরস্কার পান।

এছাড়াও সরকারি এবং বেসরকারি অসংখ্য পুরস্কার তিনি লাভ করেছেন। এজন্য তাকে ‘পুরস্কার কন্যা’ বলা হতো। তিনি বাংলাদেশের প্রতিনিধি হয়ে সবচেয়ে বেশিবার আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে অংশ গ্রহণ করেছিলেন।

জাগো নিউজের পক্ষ থেকে এই অভিনেত্রীর জন্মদিনে শ্রদ্ধামিশ্রিত শুভেচ্ছা। আরো অনেকদিন তিনি আমাদের মাঝে বেঁচে থাকুন। অভিজ্ঞতার ছায়া দিয়ে যান ঢাকাই চলচ্চিত্রের প্রতিটি মুহূর্তে।


এলএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।