নাসরীন স্মৃতিপদক পেলেন নওগাঁ'র সেই তাসমিনা

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০১:২৭ পিএম, ০৭ মে ২০১৮

 

দ্বাদশ নাসরীন স্মৃতিপদক পেলেন নওগাঁর সেই কিশোরী তাসমিনা খাতুন। ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতায় যার অদম্য স্পৃহা ও নেশা মুগ্ধ করেছে সকলকে। 'নারীর ক্ষমতায়নে বিশেষ অবদান' ক্যাটাগরিতে নাসরীন স্মৃতি পদক পায় তাসমিনা।

তাসমিনার পাশাপাশি এই পদক পেয়েছেন খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার ক্ষুদ্র নারী ব্যবসায়ী ভারতী বিশ্বাস, জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার বালক চন্দ্র বিশ্বাস ও কুষ্টিয়ার মো. টিপু সুলতান।

সোমবার দুপুরে রাজধানীর গুলশান ১ এর স্পেক্ট্রা কনভেনশন সেন্টারে অ্যাকশনএইড আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তাদের হাতে নাসরীন স্মৃতি পদক তুলে দেয়া হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন অ্যাকশনএইড এর কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির, ইউবিকো এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর ড. এসএম আকবর, ডিবিসি টেলিভিশনের সম্পাদক নবনিতা চৌধুরি, নারী মুক্তি ও উন্নয়ন সংঘের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর মমতাজ আরা বেগম এবং নাসরীন পারভীন হকের বড় বোন শিরিন হক।

অ্যাকশনএইড সূত্র জানায়, প্রতিবছর তিন ক্যাটাগরিতে নাসরীন স্মৃতি পদক প্রদান করা হয়। তবে এবার নারীর ক্ষমতায়নে বিশেষ ভূমিকা রাখায় আরেকটি পদক প্রদানের সিদ্ধান্ত হয়।

এবার যৌন হয়রানি ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্ত স্থাপন করায় পদক পান খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ভারতী বিশ্বাস। ভারতী বিশ্বাস এক নারীকে ধর্ষণের ঘটনায় প্রভাশালী পরিবারের সন্তান ধর্ষককে গ্রেফতার, নির্যাতন ও ধর্ষণের বিচার পাবার ক্ষেত্রে প্রতিবাদী ভূমিকা পালন করে তার ভূমিহীনদের সংগঠন ‘নিজেরা করি’ কে সক্রিয় করেন। পুলিশকে সহযোগিতা করেন। ধর্ষক চিন্ময় হালদারের শাস্তি নিশ্চিত করে তার সংগঠন।

'ভিন্ন রূপে পুরুষ' ক্যাটাগরিতে পদকপ্রাপ্ত বালক চন্দ্রের দুই ছেলে ও এক মেয়ে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী। নিজেও এক চোখে কম দেখেন। মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন বালক চন্দ্র। স্ত্রী কিডনি রোগে অসুস্থ হয়ে মারা যাবার পর আর বিয়ে করেননি তিনি। সংসার ও গৃহস্থালির সব কাজ নিজ হাতেই করেন। দ্বিতীয় বিয়ে না করায় পরিবারের অন্য সদস্য ও আত্মীয়-স্বজনদের কটাক্ষ সহ্য করতে হয়েছে তাকে।

অন্যদিকে কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর উপজেলার মহিষকুন্ডি গ্রামের কলেজ পড়ুয়া মো. টিপু সুলতান (২৪) গড়ে তোলেন ‘শিশু বিবাহ প্রতিরোধ টিম’। তার ওই টিম এখন পর্যন্ত ৭টি বাল্য বিবাহ বন্ধ করতে সমর্থ হয়েছেন। তাদের কর্মকাণ্ডে ইউপি চেয়ারম্যান নিজ গ্রামকে বাল্য বিবাহমুক্ত ঘোষণা করেছেন। টিপু সুলতানের যুবা দলের ভূমিকায় ৬০ শতাংশ শিশু বিবাহ কমে নেমে এসেছে ১০ শতাংশে। তার এই ভূমিকার জন্য 'শিশু বিবাহ প্রতিরোধ সোচ্চার যুবা' ক্যাটাগরিতে পদক পান তিনি।

আর নারীর ক্ষমতায়নের বিশেষ ক্যাটাগরিতে পদক পান ঘোড়াদৌড়ে পরিচিতি পাওয়া নওগাঁ জেলার কিশোরী তাসমিনা খাতুন।

উল্লেখ্য, নারী অধিকার আন্দোলনের অন্যতম কান্ডারী নাসরীন পারভীন হক স্মরণে ২০০৬ সাল থেকে ‘নাসরীন স্মৃতি পদক' দিয়ে আসছে অ্যাকশনএইড।

জেইউ/এমবিআর/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।